বাধ্য হয়ে প্রবাসী জীবনযাপন করতে হয়েছিল বর্তমান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। ১৯৮১ সালের ১৭ মে তিনি দেশে ফিরেছিলেন বলেই গণতন্ত্র ফিরে এসেছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১৬ মে) বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার ৪৩তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বেলা ১১টায়, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হল, বিএসএমএমইউ’তে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা যেদিন ফিরে এসেছিলেন সেদিন প্রকৃতিও অঝর ধারায় কেঁদেছিল। সেদিন এয়ারপোর্টে লক্ষ লক্ষ জনতার মুখে স্লোগান ছিল ঝড়বৃষ্টি আঁধার রাতে, শেখ হাসিনা আমরা আছি তোমার সাথে। শেখ হাসিনা এদেশের মাটিতে পদার্পণ করে বলেছিল আমার হারানোর কিছু নাই, পিতা-মাতা-ভাই, আত্মীয় হারিয়ে আমি বাংলার জনগণের কাছে ফিরে এসেছি। আপনারাই আমার আপনজন, আপনারাই আমার আত্মার আত্মীয়। আমরাই আবার গণতন্ত্র উদ্ধার করবো।
আরও পড়ুন>> দুই চুলায় গ্যাসের দাম ৫১২ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব
তিনি আরও বলেন, সেদিন ঝড়-বৃষ্টি শেখ হাসিনাকে থামাতে পারেনি। তিনি ঠিকই গণতন্ত্রকে উদ্ধার করেছেন। তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন বলেই আমরা গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছি মানুষের অধিকার ফিরে পেয়েছি। আজকে এই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কনভেনশন হলে দাঁড়িয়ে বলতে পারি চিকিৎসা সুযোগ নয়, চিকিৎসা আমার অধিকার। এভাবেইে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ।
অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরেছিলেন বলেই গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার হয়েছিল। তিনি ফিরে এসেছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হলো, তিনি ফিরে এসেছিলেন বলেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। এগুলোর কোন কিছু হতো না যদি বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বদেশ প্রত্যাবর্তন না করতেন।
তিনি আরও বলেন, তিনি এসেছিলেন বলেই এদেশে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সুপর স্পেশালাইজড হাসপাতাল হয়েছে। এদেশের কোন রোগী যেন বাহিরে না যায় সে জন্য উন্নতমানের চিকিৎসা ব্যবস্থা করেছেন। দেশে ১১৩টি মেডিকেল কলেজ হয়েছে, এখন দেশে চিকিৎসকের সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আমরা করোনা মহামারিকে সফলতার সাথে মোকাবিলা করতে পেরেছি।
বিশেষ অতিথি বক্তব্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, বাংলাদেশ কোন এগিয়ে গেল তার চারটি কারণ দেখিয়েছেন পাকিস্তানের সুশীল সমাজ। প্রথম কারণ বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ, এখানে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানো হয় কিন্তু এদেশের মানুষ তা গ্রহণ করে না। দ্বিতীয় হলো নারীর ক্ষমতায়ন। তৃতীয় হলো অগণতান্ত্রিকভাবে এদেশে কেউ আর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে পারবে না। চতুর্থ হলো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যিনি শুধু দেশের মানুষের অনুপ্রেরণা নয়, তিনি সারা বিশ্বের নেতাদের অনুপ্রেরণা। যার কারণে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে দুর্বার গতিতে। তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের রাজনৈতিক আন্দোলনের পাশাপাাশি সাংস্কৃতিক আন্দোলনেও অধিক সক্রিয় হওয়ার অনুরোধ জানান।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করেছিল জিয়াউর রহমান মোস্তাক গং। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে এদেশে কোন গণতন্ত্র ছিল না। গণতন্ত্র ছিল খুনি জিয়ার সেনা ছাউনিতে বন্দি। মানুষের কথা বলার অধিকার ছিল না, রাতের পর রাত কারফিউ জারি করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সামরিক অফিসারদের মিথ্যা অজুহাতে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিল খুনি জিয়া। খুনি জিয়া হ্যাঁ-না ভোটের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলো। যখন গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত পথহীন উদ্দেশ্য বিহীন বাংলাদেশ, দেশের যুব সমাজ যখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, খুনি জিয়া শাসনের নামে শোষণের মাধ্যমে যুব সমাজকে মাদক, অস্ত্র দিয়ে, টাকা দিয়ে ধ্বংস করা শুরু করলেন, তখন জাতির সেই সংকটময় মুহূর্তে অন্ধকারে আলোক শিখা হয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছিলেন বলেই আমরা ফিরে পেয়েছি গণতন্ত্র।
আরও পড়ুন>> এফডিসিতে নায়ক ফারুকের জানাজা অনুষ্ঠিত
তিনি আরও বলেন, আবারও সেই বিএনপি-জামাত দেশকে, দেশের মানুষকে, বঙ্গবন্ধুকন্যাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে, আবারও পেট্রোল বোমায় গাড়ি পোড়ানো, মানুষ হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা যুবলীগ দেশের সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে বিএনপি-জামাতের সকল ষড়যন্ত্র রাজপথেই কঠোরভাবে প্রতিহত করবো। শেখ হাসিনার চলার পথ মসৃণ রাখবো।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মামুনুর রশীদ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. খালেদ শওকত আলী, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. এনামুল হক খান, ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ এমপি, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, মো. জসিম মাতুব্বর, মো. আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, মুহাম্মদ বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম, ডা. হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, মো. জহির উদ্দিন খসরু, মশিউর রহমান চপল, অ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. জহুরুল ইসলাম মিল্টন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ডা. মো. ফরিদ রায়হান, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. হারিছ মিয়া শেখ সাগর, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মো. হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা, ধর্ম সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান সরদার, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মুক্তা আক্তার, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাড. শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, উপ-অর্থ সম্পাদক সরিফুল ইসলাম দুর্জয়, উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক মো. সফেদ আশফাক আকন্দ তুহিন, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মো. রাশেদুল হাসান সুপ্ত, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. মাহফুজুর রহমান উজ্জ্বল, উপ-ক্রীড়া সম্পাদক মো. আবদুর রহমান, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মো. গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্য।
ইবাংলা/এসআরএস
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.