শতবর্ষী নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী জন গুডেনাফ মারা গেছেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি তৈরিতে বিপ্লব ঘটানো নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী জন গুডেনাফ মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। গুডেনাফের স্ত্রী আইরিন ওয়াইজম্যান ২০১৬ সালে মারা যান। তাদের পরিবারে কোনো সন্তান ছিল না। ব্যাটারি নিয়ে কাজ করে ২০১৯ সালে ৯৭ বছর বয়সে রসায়নে নোবেল পান গুডেনাফ।

Islami Bank

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রোববার (২৫ জুন) তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট অস্টিন। সেখানে তিনি প্রকৌশলবিদ্যার অধ্যাপক হিসেবে কাজ করতেন।

আরও পড়ুন>> মহাকাশ ঘুরে বাংলাদেশে আসছে বিশ্বকাপ ট্রফি

লিথিয়াম ব্যাটারি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন গুডেনাফ। তার কাজের ফলস্বরূপ লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি বর্তমানে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি সরবরাহের কাজ করে যাচ্ছে। হালকা ওজনের কিন্তু শক্তিশালী, এই লিথিয়াম ব্যাটারি প্রযুক্তি খাতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোনের মতো বহনযোগ্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। একই সঙ্গে গাড়ি থেকে শুরু করে সোলার প্যানেলের মতো বড় বড় ডিভাইসও সচল রাখতে কাজ করছে এই লিথিয়াম ব্যাটারি।

১৯২২ সালে জার্মানিতে এক মার্কিন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ড. জন গুডেনাফ। পরে তার শৈশব কাটে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরপূর্বাঞ্চলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মার্কিন সামরিক বাহিনীতে আবহাওয়াবিদ হিসেবে কাজ করেন তিনি। ইয়েল ইউনিভার্সিটি থেকে গণিতে গ্রাজুয়েশন এবং ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো থেকে পদার্থবিদ্যায় পিএইচডি করেন গুডেনাফ।

ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অস্টিনের প্রেসিডেন্ট জে হারৎজেল বলেছেন, ‘তার আবিষ্কার পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের জীবনে কাজে লেগেছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় তিনি একজন ক্ষুরধার নেতা ছিলেন। তিনি কখনোই জ্বালানি-মজুতের নানাবিধ সমাধান নিয়ে গবেষণা বন্ধ করেননি।’

one pherma

ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে কর্মজীবন শুরু করেন জন গুডেনাফ। সেখানে তিনি ২৪ বছর অধ্যাপনা ও গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি কম্পিউটারের র‌্যাম তৈরিতে সহযোগিতা করেছিলেন। আধুনিক চুম্বক তত্ত্বের অন্যতম জনক ছিলেন গুডেনাফ। টেলিকমিউনিকেশন খাতে এ তত্ত্ব ব্যাপক কাজে দিয়েছে।

২০১৬ সালে বিবিসির জন হামফ্রিস তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, নিজের গবেষণা মানব জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, এটি জেনে কেমন লাগে। জবাবে গুডেনাফ বলেছিলেন, তিনি এই দিকটি নিয়ে ততটা ভাবেননি।

বিবিসির জন হামফ্রিসকে সেসময় গুডেনাফ মজা করে জানিয়েছিলেন, তার নিজেরই মোবাইল ফোন নেই, কারণ তিনি ত্যক্ত হতে পছন্দ করেন না।

জন গুডেনাফ ও তার ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের টিম সম্প্রতি কাচের তৈরি ব্যাটারির মাধ্যমেসহ জ্বালানি মজুতের বিভিন্ন সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছিলেন।

সূত্র: বিবিসি

ইবাংলা/এসআরএস

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us