ইউপি নির্বাচন: সহিংসতায় গুলিবিদ্ধসহ আহত ৪৭

এম বি কাজী নাছির, শরীয়তপুর

সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম ঢালীর (নৌকা) বোমার আগাতে ডান চোখ মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। একই সময় গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৪৭ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আহতদের ঢাকাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

  • ২ ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে রুদ্রকর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও আওয়মী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (আনারস) কার্যালয় ভাংচুর, বঙ্গবন্ধু ছবিতে অগ্নিসংযোগ ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ ৩টি মোটর সাইকেল ও আসবাব পত্র ভাংচুর করা হয়।

এসময় পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজন পুলিশের উপর হামলা করে। এতে এস আই সহ ৭ পুলিশ আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পালং মডেল থানা পুলিশ ১০৬ রাউন্ড ফাকা গুলি ছোড়ে।

শুক্রবার (৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম ঢালী ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হাবিবুর রহমান ঢালীর সমর্থদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

  • শনিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে বিদ্রোহী প্রার্থী তার নিজ বাড়ীতে ঘটনার সংগে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে এক সংবা সম্মেলন করেছেন। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ঐ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আওয়মী লীগের মনোনিত প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম ঢালীর ছোট ভাই রুহুল আমিন ঢালী ও পালং মডেল থানা সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে রুদ্রকর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হাবিবুর রহমান ঢালীর সমর্থকরা সুর্বচনী বাজারে মিছিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ সময় আওয়মী লীগের মনোনীত প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম ঢালীর লোকজন বাধা দেয় এবং স্বন্ত্রপ্রার্থীর সুবচনী বাজারের রাস্তারর পাশে থাকা নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করে। এ নিয়ে গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা অশ্রশস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগের কার্য়ালয়ে হামলা চালায়। এ সময় হামলা কারীরা আওয়ামী লীগের কার্যলয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর ছবিতে অগ্নিসংযোগ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি, ৩টি মোটর সাইকেলসহ আসবাবপত্র ব্যাপক ভাংচুর করে।

খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রাথী সিরাজুল ইসলাম ঢালীর সমর্থকরাও অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আসলে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় ২ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালে মুহুর্মহু বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আওয়ামী লীগের মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম ঢালী (৫০) এর ডান চোখ বোমার আঘাতে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে শরীয়তপুর সর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

  • এঘটনায় আহতরা হলেন- রুহল আমিন ঢালী (৩৫), মফেজ সিকদার (৪৫), সবুজ মাদবর (২০), আমির হোসেন (৪০), সুমন ঢালী (৩৮), মিজান সরদার (৪০), আলী সরদার (৫০), সফিক ঢালী (৪৫), শামীম কাজী (২৩), আব্দুল ফকির (৩৫), নিজাম সরদার (৫০), সালাম ফকির (৫০), রাশেদ ঢালী (৪০), রিয়াজুল ইসলাম খান (৩৫), শহীদুল ইসলাম সরদার (৩০), নাহিদ বেপারী (৩০), আব্দুল হাই সরদার (৪০), সিহাব ফরাজী (২৫) সহ ৪৭ জন মারাত্মতভাবে আহত হয়েছে। আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে

এদিকে শনিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে বিদ্রোহী প্রার্থী তার নিজ বাড়ীতে ঘটনার সংগে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে ভোট চাইতে বাধা ও পোষ্টার ছিড়া সহ বিভিন্ন অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ব্যবসী সেলিম ঢালী, সালাম মাদবর, এসকান্দার রাড়ী, ফরিদ সরদার প্রমুখ।

সুবচনী বাজারের ব্যবসায়ী আতাউর রহমান, সাইদ মিয়া বলেন, নির্বাচন নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ওবোমার বিস্ফোরণের ঘটনায় সকলের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

রুদ্রকর ইউনিয়ন সাবেক মেম্বার ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মজিবুর রহমান খোকন বলেন, আমরা আমাদের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে লীয় প্রার্থীর নির্বাচন বিষয়ে আলোচনা করাছিলাম । হঠাৎ এসে বিদ্রোহী প্রাথীর লোকজন এসে আমাওে উপর বোমা হামলা করে । এতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সহ ১৫/২০ জন নেতা কর্মী আহত হয়। এ সময় তারা প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে।

বিদ্রোহী প্রার্থী হাবিবুর রহমান ঢালী তার নিজ বাড়ীতে ঘটনার সংগে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলনে বলেন , আমার সমর্থকরা ভোট চাইতে এলাকায় যেতে চাচ্ছিল । এ সময় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর লোকজন আমার লোকজন ও নির্বাচনী অফিসে হামলা ও ভাংচুর করে । পুলিশ এসে আমার লোকজনের উপর গুলি চালায়। এতে গুলিবৃদ্ধ সহ আমার ২০/২৫ জন নেতা কর্মী মারাত্মক আহত হয়েছে।

পালং মডেল থানার ওসি আক্তার হোসেন বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান ঢালীর লোকজন হামলা করে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্থ করেছে । এতে পুলিশ সহ ২০/২৫ জন আহত হয়েছে। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) এস এম মিজানুর রহমান বলেন, রুদ্রকর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সুবচনী হাটে কার্যালয়ে বসে তাদেও কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। হঠাৎ করে বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজন এসে তাদেও উপর হামলা করে । খবর পেয়ে পুলিশ গেলে তারা পুলিশের উপর হামলা করে। এতে এস আই গৌতম সহ ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়।

 ইবাংলা/এইচ/০৬ নভেম্বর, ২০২১

Contact Us