করোনা টিকার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

নিউজিল্যান্ডে করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করার দেশটিতে বিক্ষোভে নেমেছে হাজারও মানুষ। বাধ্যতামুলক টিকার বিরোধিতা করে দেশটির পার্লামেন্টের সামনে সমবেত হয়েছে শতশত মানুষ। বিভিন্ন পোষ্টার হাতে নিয়ে লকডাউন ও করোনা বিধিনিষেধের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিচ্ছেন তারা। তথ্য-বিবিসি

প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, বিক্ষোভের কারণে মঙ্গলবার নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্ট ভবনের দু’টি গেট ছাড়া সকল দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগই মাস্ক পরিহিত নয় এবং ওয়েলিংটনের কেন্দ্রস্থল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিলের মাধ্যমে পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে অবস্থান নেন।

এদিকে টিকাবিরোধী বিক্ষোভের কারণে পার্লামেন্ট ভবনের চারপাশে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে নিউজিল্যান্ড কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেখানে বহুসংখ্যক পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। মোতায়েনকৃত পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীদের সংখ্যাকে বিবিসি অভূতপূর্ব বলে উল্লেখ করেছে।

বিক্ষোভে বিভিন্ন প্রতীক ও বার্তা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করছেন অনেকে। প্ল্যাকার্ডে লেখা এসব বার্তার মধ্যে রয়েছে ‘স্বাধীনতা’ এবং ‘কিউইরা গবেষণাগারের ইদুর নয়’। এছাড়া টিকা বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে সরকারি আদেশ প্রত্যাহার এবং করোনা বিধিনিষেধ উঠিয়ে নিতেও স্লোগান দিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।

এর আগে যেসব স্বাস্থ্যকর্মী ও শিক্ষক-শিক্ষিকা করোনা টিকার ডোজ নেওয়া থেকে বিরত থাকছেন, তাদের জন্য ‘টিকা না নিলে চাকরি নেই’ নীতি নেয় নিউজিল্যান্ডের সরকার। সেই অনুযায়ী, গত অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নিউজিল্যান্ড সরকারের করোনা প্রতিরোধ মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় যুগপৎভাবে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে।

বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী ১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের যেসব ডাক্তার ও নার্স করোনা টিকার দুই ডোজ নিতে ব্যর্থ হবেন, পরের দিন ২ ডিসেম্বর থেকে তাদের চাকরি থাকবে না।

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য এই মেয়াদ অবশ্য আরও এক মাস বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ, ২০২২ সালের জানুয়ারির ১ তারিখের মধ্যে দেশটির যেসব শিক্ষক-শিক্ষিকা টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ না করবেন, পরের দিন ০২ জানুয়ারি চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে তাদেরকে।

অবশ্য চলতি বছর করোনার অতিসংক্রামক ধরন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কার্যত সংগ্রাম করছে নিউজিল্যান্ডের জেসিন্ডা আরডার্ন সরকার। ফলে করোনা বিধিনিষেধ ও লকডাউন তুলে নিতে টিকাদানের গতিতে মনোযোগ দেয় দেশটি।

এছাড়া দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ পুরোপুরি টিকার আওতায় চলে আসলে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সকল বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জেসিন্ডা আরডার্ন। তবে বিক্ষোভকারীরা টিকা নেওয়া ছাড়াই করোনা বিধিনিষেধ উঠিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় নিউজিল্যান্ডে করোনায় সংক্রমণ ও প্রাণহানির সংখ্যা অনেক কম। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮ হাজারের কম মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং মোট ৩২ জন মারা গেছেন।

ইবাংলা/ টিপি/ ৯ নভেম্বর, ২০২১

Contact Us