ভালো খেলেও এমন সুযোগ অনেক বড় দল পায়নি। বাদ হয়ে গেছে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো টি-টোয়েন্টির পরাশক্তিরা।
বাংলাদেশের সামনে সুযোগ এসেছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার, সুপার এইটে টানা দুই ম্যাচ বাজেভাবে হারার পরও।
আজ (মঙ্গলবার) আফগানিস্তানকে মাত্র ১১৫ রানেই আটকে দিয়েছিলেন টাইগার বোলাররা। এই রান ১২.১ ওভারে তাড়া করতে পারলেই সেমিফাইনালে উঠে যেতো বাংলাদেশ।
কিন্তু সেমিতে নাম লেখানো তো দূরে, ১১৫ তাড়া করতে গিয়ে হেরেই বসেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।বিশ্বকাপের সুপার এইটপর্বে তিন ম্যাচের সবকটি হেরে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ। হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচেও পায়নি জয়।
এমন হারের পর ভীষণ হতাশ বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমাদের বোলাররা দারুণ করেছে। এই উইকেটে আমাদের অবশ্যই জেতা উচিত ছিল। ব্যাটিং গ্রুপ হিসেবে আমরা অনেক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যা আমাদের আজ ভুগিয়েছে।
বাংলাদেশ কি আসলেই সেমিতে খেলতে ১২.১ ওভারে রান তাড়া করার কথা মাথায় এনেছিল? শান্ত বলেন, ‘প্রথমত আমরা ম্যাচটা জিততে চেয়েছি। এটা আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল।
তবে যখন তাদের প্রথম ইনিংস ১১৫ রানেই আটকে যায়, তখন আমাদের পরিকল্পনা ছিল ১২.১ ওভারে জিততে পারি কি না। এটাই পরিকল্পনা ছিল। আমার মনে হয়, ব্যাটিং গ্রুপ হিসেবে আমরা খুব বাজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
আফগানদের কাছে এমন হার কতটা হতাশার? শান্তর সরল স্বীকারোক্তি, ‘অবশ্যই অনেক হতাশার, অনেক কষ্টেরও। এই ম্যাচ খেলতে আসার আগে সবারই পরিকল্পনা ছিল ম্যাচটা আমরা জিতব। ওইরকম পরিস্থিতি যদি হয়, আমরা সুযোগ নেব। যেটা আমাদের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু আমরা সেটা পারিনি। ব্যাটাররা সবাই বাজে বাজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
টাইগার অধিনায়ক আরও বলেন, ‘পরিকল্পনা ছিল আমরা প্রথম ছয় ওভার চেষ্টা করব। যদি আমরা ভালো শুরু করি, আরলি উইকেট না পড়ে সুযোগটা নেব। কিন্তু যখন তিনটি উইকেট দ্রুত পড়ে গেলো।তখন আমরা পরিকল্পনা বদলাইে যে কীভাবে ম্যাচটা জিততে পারি। আমাদের মিডলঅর্ডাররা ভালো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তাই আমরা ম্যাচটা হেরেছি।
যেহেতু ১২.১ ওভারে তাড়া করতে পারলে সেমিতে খেলার সুযোগ ছিল। তাওহিদ হৃদয়ের মতো হার্ডহিটার ব্যাটারকে কেন আগে নামানো হয়নি? তাকে খেলানো হয়েছে ছয় নম্বরে।
এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শান্ত বলেন, ‘ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে যে আমরা মিক্সআপটা করেছি, সেটার কারণ হলো লেফটহ্যান্ড রাইটহ্যান্ড কম্বিনেশন। লিটন একপাশে ব্যাটিং করছিল আর ওদের বোলিংয়ে অনেক ভ্যারিয়েশন ছিল। এটার কারণে লেফটহ্যান্ড রাইটহ্যান্ড কম্বিনেশন করার চেষ্টা করেছিলাম আমরা। সবাই এটা জানতো। এই কারণেই করা হয়েছে। ’
সবমিলিয়ে পুরো টুর্নামেন্টে তার দল সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। তাই তাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন শান্ত। তিনি বলেন, ‘পুরো টুর্নামেন্ট হিসেব করলে, প্রথমেই আমি বলতে চাই, আমরা দল হিসেবে পুরো বাংলাদেশের ফ্যানদের লেটডাউন করেছি।
যারা আমাদের খেলা ফলো করে বা আমাদের সবসময় সাপোর্ট করেন, তাদের আমরা লেটডাউন করেছি। আমি দলের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইছি। আমরা ব্যাটিং গ্রুপ হিসেবে দেশের মানুষকে ভালো কিছু দিতে পারিনি। এটার জন্য আমরা দুঃখিত। আমাদের চেষ্টা থাকবে এটা থেকে কীভাবে বের হয়ে আসতে পারি।’
বোলিং ইউনিট দারুণ করেছে। বিশেষ করে আমি রিশাদের কথা বলব, সে পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ বোলিং করেছে। তানজিম সাকিবও ভালো করেছে। আমার মনে হয়, বোলাররা সবাই ভালো করেছে। ফিল্ডিংয়েও আমরা ভালো করেছি সব ম্যাচে। ইতিবাচক অনেক কিছুই আছে, যা আমরা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারি’-যোগ করেন শান্ত।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.