চলতি (২০২৪-২০২৫) অর্থবছরের বাজেট পাস হওয়ার পর এখন তা নিপুনতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (০১ জুলাই) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় মন্ত্রী ও সচিবদের মাধ্যমে এই নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে বিকেলে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সভার সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। রোববার (৩জুন) জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে নতুন অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বাজেট। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী একটি বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। সেটি হলো সবাই যেন খুব যতেœর সঙ্গে ও নজরদারির মধ্যে দিয়ে বাজেট বাস্তবায়নে মনোযোগ দেন। নিপুনতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে যেন বাজেট বাস্তবায়ন হয়।
আরও পড়ুন…জাতীয় সংসদে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট পাস
মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘পদ্মা ব্রিজ অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স কোম্পানি, পিএলসি’ গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। পদ্মা সেতু পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আলাদা এই কোম্পানি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি হবে শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি। এর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর টোল আদায়সহ পরিচালনার কাজ হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, কোম্পানি আইন অনুযায়ী এই কোম্পানি গঠন হচ্ছে। এই বোর্ডে থাকবেন ১৪ জন। তারা জনবল কাঠামো ঠিক করবে। বোর্ডে সেতু বিভাগ, অর্থ বিভাগসহ বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বর্তমানে কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে ও চীনের মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) সেতুটি রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ের কাজ পরিচালনা করছে। পাঁচ বছরের জন্য তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পদ্মা সেতুর পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ কবে নাগাদ কোম্পানির অধীনে যাবে-এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ওই চুক্তি শেষ হওয়ার পর এই কোম্পানি কাজ শুরু করবে।
এদিকে, মন্ত্রিসভার আজকের বৈঠকে এ ছাড়া ইনস্টটিউট অব ফ্রনটিয়ার টেকনোলজি (আইএফটি) আইন, ২০২৪ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি হবে মাদারীপুরে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটি নাম শেখ হাসিনার ইনস্টটিউট অব ফ্রনটিয়ার টেকনোলজি করার প্রস্তাব করা হলেও প্রধানমন্ত্রী তাঁর নিজের নামে এটি করার বিষয়ে সম্মতি দেননি। এখন এটির নাম হবে ইনস্টটিউট অব ফ্রনটিয়ার টেকনোলজি। এই ইনস্টটিউট বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ ও গবেষণাসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ হবে। এ ছাড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে রপ্তানি নীতি-২০২৪-২৭ এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন…দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতেই এই বাজেট
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব হোসেন বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোন ধরনের শিথিলতা দেখানো হচ্ছে না। কিছু দুষ্টুচিন্তা ও দুষ্টুবুদ্ধির কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে, তারা দুর্নীতি করতে চায়। তবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সহযোগিতা করছে।
সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ সফরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারী প্রকল্পের টাকায় বিদেশ যাওয়ার সংখ্যা শতভাগ কমাতে না পারলেও অন্তত শতকরা ৯০ ভাগ কমিয়েছি। কিন্তু সরকারী কর্মকর্তারা গ্র্যান্টের (অনুদান) টাকায় বিদেশ গেলে সরকারী টাকার কোন অপচয় হওয়ার সুযোগ নেই। তবে ঋণের টাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ যাওয়ার বিষয়টিকে গ্রহণ করা হচ্ছে না।
ইবাংলা/ বাএ
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.