ভাড়া বৃদ্ধি বন্ধে চার প্রস্তাব

আমিনুল ইসলাম, ঢাকা

ভাড়া বৃদ্ধি বন্ধে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীকে চারটি প্রস্তাব দিয়েছে । ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ার কারণে বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত ভাড়া নিয়ে বাস যাত্রীদের সাথে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

তাই জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে পরিবহণ মালিকরা দেশবাসীকে পরিবহণ ধর্মঘটের নামে জিম্মি করে ভাড়া বৃদ্ধির নাটক মঞ্চস্থ করে।

পরে সরকারের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে আতাঁতের মধ্যে দিয়ে ভুয়া অযৌক্তিক একটি ব্যয় বিশ্লেষণ নাটক দেখিয়ে একচেটিয়া ভাবে মালিকদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ভাড়া বৃদ্ধি করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, সরকার যে হারে ভাড়া বাড়িয়েছেন মালিকরা এখন তার কয়েক গুণ বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। এতে দেশের সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। এহেন অন্যায় ও অন্যায্যভাবে বাড়ানো বাস ও লঞ্চের ভাড়া বাতিলের দাবি জানান তিনি।

সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি আয়োজিত যাত্রী স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে মালিক শ্রমিক ও সরকার মিলেমিশে একচেটিয়াভাবে গণপরিবহণ ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

এ প্রতিবাদ সভায় তিনি ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরের আলাদা আলাদা ভাড়া নির্ধারণ। পুরনো গাড়ি ও নতুন গাড়ির আলাদা ভাড়া নির্ধারণের নানা অযৌক্তিক দিক তুলে ধরার পাশাপাশি দুরত্ব জালিয়াতি ও  তালিকাসহ ভাড়া নির্ধারণের নানা অনিয়মের চিত্র তুলে ধরেন। এসব অনিয়ম বন্ধ করে মালিক শ্রমিকদের সংখ্যানুপাতে যাত্রী সাধারণের প্রতিনিধি নিয়ে গণপরিবহণের ভাড়া নির্ধারণ কমিটি পুনঃগঠনের দাবি করেন।

সভায় বলা হয় ২০১৬ সালে তেলের মূল্য প্রতি লিটারে ৩ টাকা কমানো হলে বাসের ভাড়া কমানো হয় প্রতি কিলোমিটারে ৩ পয়সা। আর বাসের ভাড়া বাড়ানোর ক্ষেত্রে বাড়ানো হয়েছে ২৭ শতাংশ, লঞ্চে ৩৫ শতাংশ। তারা প্রতি লিটারে ১৫ টাকা তেলের মূল্য বৃদ্ধি অনুপাতে প্রতি কিলোমিটারে ১৫ পয়সা বাস ও লঞ্চ ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানান। সভায় জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে সারা দেশে গণপরিবহণগুলোতে চলমান ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ জানান।

সভায় সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ মোকতার উদ্দীনের সভাপতিত্বে এই প্রতিবাদ সভা সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমেদ। এতে বক্তব্য রাখেন ন্যাপ সাংগঠনিক সম্পাদক মিটুল দাশগুপ্ত, মহানগর জাতীয় পার্টি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম সাইফুল্লাহ সাইফু, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক মো: জাফর ইকবাল, এসডিজি ইয়ুথ ফোরাম’র সভাপতি নোমান উল্লাহ বাহার, পরিবেশবিদ নেছার আহমদ খান, যাত্রী কল্যাণ সমিতির চট্টগ্রাম মহানগরের সিনিয়র সহ-সভাপতি ওসমান জাহাঙ্গীর, প্রচার সম্পাদক মোঃ সোহেল আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম নুরুল আমিন, মো: জাহিদুল ইসলাম, আবুল কালাম প্রমুখ।

বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে যাত্রী কল্যাণ সমিতি এ প্রস্তাব পাঠায়। চিঠিতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরী এবং দূরপাল্লার বিভিন্ন রুটে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার সরেজমিন চিত্র তুলে ধরে সমিতি।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পক্ষ থেকে চিঠিটি পাঠানো হয়। সমিতির প্রস্তাবগুলো হলো দেশে অযৌক্তিকভাবে বাড়ানো গণপরিবহন ভাড়া বাতিল করে ন্যায্য ও গ্রহণযোগ্য ভাড়া নির্ধারণ করা, আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে দেশে সব ধরনের যানবাহনের সামনে সেটি কোন ধরনের জ্বালানি তা উল্লেখ করে স্টিকার লাগানো, রাজধানীর বাসগুলোতে ওয়েবিল পদ্ধতি বাতিল করা, গণপরিবহনে টাকা তুলতে মালিকদের চাপানো দৈনিক টার্গেট বাতিল করা।

ইবাংলা /আমিন /১২ নভেম্বর ২০২১

Contact Us