ইসলামী ব্যাংকের এমডি অপসারন, দায়িত্বে ওমর ফারুক

ইবাংলা ডেস্ক

লাস্টনিউজবিডি ৬ এপ্রিল: নানা জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটে অবশেষে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বাধ্য হলেন মুহাম্মদ মনিরুল মওলা। চলতি দায়িত্বে দেয়া হয়েছে এডিশনাল এমডি ওমর ফারুক খানকে ।

Islami Bank

আজ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর পরিচালনা পরিষদের সভায় এই সদ্দান্ত নেয়া হয় । ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে অনুষ্ঠিত ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মোঃ আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক মোঃ আবদুল জলিল ও প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ ওমর ফারুক খান, মোঃ আলতাফ হুসাইন ও মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম সভায় অংশগ্রহণ করেন।একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায় , মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে অপসারনের সিদ্দান্তের সময় বোর্ড মিটিং থেকে বাইরে পাঠানো হয় ।

এর আগে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মনিরুল মওলার অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন, ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার আবুল কালাম আজাদ।

তিনি ২৯ জানুয়ারি তার ফেসবুক পোস্টে মনিরুল মওলাকে ‘বিশ্ববিখ্যাত দুর্নীতিবাজ, ইতিহাসের সেরা মিথ্যাবাদী, ফ্যাসিস্ট হাসিনার অর্থনৈতিক দোসর’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

এরপর, আবুল কালাম আজাদকে প্রধান কার্যালয়ের এইচআর ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড সার্ভিস ডিভিশন থেকে চক মোগলটুলি শাখায় বদলি করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, ব্যাংকের এমডি এবং অন্যান্য অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তাকে বারবার বদলি করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ইসলামী ব্যাংকের এমডি মুহাম্মদ মনিরুল মওলার বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করেছে। মামলায় তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

one pherma

আরও পড়ুন…শুল্ক ইস্যুতে ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে

আবুল কালাম আজাদ প্রশ্ন তুলেছেন, সার্ভিস রুলস যদি সবার জন্য হয়, তাহলে যারা এস আলমকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটে সহযোগিতা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এই পরিস্থিতিতে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ উত্তপ্ত রয়েছে এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছিল।

ব্যাংকটির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জালিয়াতির মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক থেকে এক হাজার ৯২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও আলোচিত ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাইফুল আলম ওরফে এস আলম, ব্যাংকটির এমডি ও সিইও মনিরুল মওলাসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।

দুদক চট্টগ্রামের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ বাদী হয়ে মামলাটি করেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক ইয়াছিন আরাফাত। মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে মুরাদ এন্টারপ্রাইজের নামে এই টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- এস আলমের ছেলে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলম, সাবেক পরিচালক ও ইসি কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর আহমদ, সাবেক পরিচালক মো. ফসিউল আলম, কাজী শহীদুল আলম, মো. সিরাজুল করিম, জামাল মোস্তফা চৌধুরী, মো. জয়নাল আবেদীন, খুরশীদ উল আলম, সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ সালেহ জহুর ও মোহাম্মদ সোলায়মান, পরিচালক মো. কামরুল হাসান ও সাবেক নমিনি পরিচালক সৈয়দ আবু আসাদ।

আরও রয়েছেন- ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল মওলা, সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ কায়সার আলী ও কে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, সাবেক ডিএমডি ও চিফ হিউম্যান রিসোর্স অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী, মিফতাহ উদ্দিন, মোহাম্মদ আলী ও মোহাম্মদ সাব্বির, সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. রেজাউল করিম, বর্তমান উপব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম, সাবেক এসইভিপি ও এএমডি মো. আলতাফ হোসেন, এসইভিপি জি এম মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন কাদের, আবু ছাঈদ মুহাম্মদ ইদ্রিস ও সাবেক এসইভিপি মোহাম্মদ উল্লাহ, বিনিয়োগ প্রশাসন বিভাগের প্রধান ও এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ফরিদ উদ্দিন, ব্যাংকের কক্সবাজার শাখার ম্যানেজার আমান উল্লাহ, চট্টগ্রামের চাক্তাই শাখার সাবেক ম্যানেজার ও বর্তমান এফএভিপি মোহাম্মদ আলী আজগর, চাক্তাই শাখার সাবেক বিনিয়োগ ইনচার্জ খাজা মোহাম্মদ খালেদ, চাক্তাই শাখার প্রধান ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনজুর হাসান, ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জোনের প্রধান মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী ও দক্ষিণের অপর জোনপ্রধান ও এসইভিপি মিয়া মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে ১৯৮৬ সালে ইসলামী ব্যাংকে যোগদান করেন এবং টানা ৩৭ বছর সফলতার সঙ্গে ব্যাংকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদসহ অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকারস বাংলাদেশ এর একজন অ্যাসোসিয়েট এবং ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স এর সার্টিফাইড ডকুমেন্টারি ক্রেডিট স্পেশালিস্ট (সিডিসিএস)। তিনি থাইল্যান্ড, ভারত, মালয়েশিয়া, সুইজারল্যান্ড ও দুবাইতে ক্রেডিট ম্যানেজমেন্টসহ ব্যাংকিং বিষয়ে বিভিন্ন সেমিনার ও প্রশিক্ষণে অংশ গ্রহণ করেন।
ইবাংলা বাএ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us