অনেকটা শুটকি খোলায় করতে মাছ শুকাতে দেয়ার গন্ধের মতো। তিরপলে রোদে শুকানো হচ্ছে সাদা রঙের কিছু। কাছে গেলে ভুল ভাঙবে। এতো মাছের আঁশ। ছয় জন যুবক এখানে কাজ করছেন। কেউ মাছের আঁশ পরিস্কার করছেন, কেউ সেই আঁশ রোদে উল্টে দিচ্ছেন। যে মাছের আঁশ উচ্ছিষ্ট হিসেবে ফেলে দেয়া হতো, সেই উচ্ছিষ্ট চীন-জাপান রপ্তানি করা হয়।
মাছের আঁশ দিয়ে ঘরের শো-পিস, ক্যাপসুলের বাহ্যিক অংশ ও গহনা তৈরি করা হয়। মাছের আঁশে স্বচ্ছলতা এসেছে অনেক পরিবারে। এখানে মাছের আঁশ শুকানোর উদ্যোক্তা মো. মাহবুব আলম। তার বাড়ি পাশের কুমিল্লা নগরীর সংরাইশ এলাকায়।
মাহবুব আলম বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১’শ কেজি আঁশ সংগ্রহ করেন। মাসে প্রায় ৩ টন। রোদে শুকানোর পর প্রতিকেজি আঁশ ৪০ টাকা দরে বিক্রি করেন। আঁশ শুকানোর তার ছয়জন কর্মচারী রয়েছে। প্রতিজনকে থাকা খাওয়াসহ মাস শেষে ১০ হাজার টাকা করে বেতন দেন। সব খরচ বাদে প্রতিমাসে এখন তার ১৫ হাজার টাকার মতো লাভ হয়।
আরও পড়ুন: ৯ প্রতিষ্ঠান পাচ্ছে সেরা ভ্যাটদাতার পুরস্কার
তিনি আরও জানান, ঢাকা থেকে যারা তার কাছ থেকে শুকনো আঁশগুলো কিনেন তারা চীন, জাপানে, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়াতে এইগুলো রপ্তানি করেন।
মাছের আঁশ দিয়ে ঘরের শো-পিস, ওষুধ, ক্যাপসুলের বাহ্যিক অংশ ও গহনা তৈরি করা হয়। তিনি বলেন, ১০ বছর আগে যে আঁশ কেজি ৪০ টাকা ছিলো তা মাঝে কমে যায়। এখন তা আবার ৪০ টাকা হয়েছে। দাম বাড়লে আমরা ভালো লাভ করতে পারতাম।
ব্যবসায়ী নেতা শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খান বলেন, মাহবুব আলমের মাছের আঁশ সংগ্রহ ও বিক্রি ব্যবসায় নতুন সংযোজন। তার দেখাদেখি এই ব্যবসায় আরো অনেক তরুণ এগিয়ে আসছে। তাদের এগিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভূমিকা রাখার আহবান জানাচ্ছি।
বিসিক কুমিল্লার ডিজিএম মিরাজ শফিক বলেন, ফেলনা উচ্ছিষ্টকে যারা সম্পদে পরিণত করছেন তারাই প্রকৃত উদ্যোক্তা। মাহবুব আলমের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ অনেকের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। আমরা তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করবো।
ইবাংলা/ নাঈম/ ১৮ নভেম্বর, ২০২১