অবশেষে ভারতের কৃষকদের মুখে হাসি ফুটতে যাচ্ছে। বিতর্কিত তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে যে আন্দোলন চলছিল তা সফল হতে চলেছে। বিতর্কিত সেই ৩ কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।
শুক্রবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান চলতি মাসে শুরু হওয়া পার্লামেন্ট অধিবেশনেই আইন তিনটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
ভাষণে তিনি বলেন -“আজ আমি আপনাদেরকে, পুরো দেশকে বলতে এসেছি, আমরা তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ মাসের শেষদিকে পার্লামেন্টের যে অধিবেশন শুরু হতে যাচ্ছে, সেখানে এ কৃষি আইনগুলো প্রত্যাহারের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে,”
গত বছরের সেপ্টেম্বরে পাস হওয়া বিতর্কিত এ তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে ভারতের হাজার হাজার কৃষক মাসের পর মাস দিল্লির উপকণ্ঠে অবস্থান নিয়ে তাদের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে বিতর্কিত তিনটি আইন পাস হওয়ার পর এর প্রতিবাদ জানিয়ে কৃষকরা বলেছিলেন, নতুন এ কৃষি সংস্কার আইনগুলো ভারতের নিয়ন্ত্রিত বাজারব্যবস্থাকে ভেঙে দেবে এবং সরকারও ধীরে ধীরে নির্ধারিত মূল্যে গম ও ধান কেনা বন্ধ করে দেবে; যার ফলশ্রুতিতে তাদেরকে ফসল বেচতে বেসরকারি ক্রেতাদের সঙ্গে দরকষাকষিতে নামতে হবে।
আরো পড়ুন: বায়ু দূষণ চরমে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা
আইনগুলো এভাবে জীবন-জীবিকাকে অনিশ্চিত অবস্থার দিকে ঠেলে দেবে দাবি করে ভারতের কৃষকরা আইনগুলো বাতিল, ফসল কিনতে সরকারের বাধ্যবাধকতা বহালসহ আরও বেশ কিছু দাবি জানিয়েছিলেন।
শুক্রবারের ভাষণে আইনগুলো প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে মোদী বলেছেন, ‘‘আমাদের উদ্দেশ্য সৎ ছিল। কিন্তু কৃষি আইনের সুফলের কথা কিছু কৃষককে আমরা বোঝাতে পারিনি।’’
শিখ ধর্মীয় নেতা গুরু নানকের জন্মদিনে মোদীর কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণাকে অনেক বিশ্লেষকই ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন । তাদের ভাষ্য, কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দিল্লির উপকণ্ঠে অবস্থানকারী কৃষকদের বড় অংশই পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। এদের মধ্যে শিখ এবং জাঠ জনগোষ্ঠীর সংখ্যাও অনেক। এদিকে আগামী বছরের শুরুতেই পাঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন।
নরেন্দ্র মোদীর হঠাৎ কৃষি আইন বাতিলের এ সিদ্ধান্তকে অনেকেই নির্বাচনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছেন। এ দুই রাজ্যে নির্বাচনে খারাপ ফল ভারতজুড়ে বিজেপির আধিপত্যে ‘চিড় ধরাতে পারে’। তাই এ দুই রাজ্যের ভোট পেতে এটিকে মোদীর কৌশুলি পদক্ষেপই বলছেন বোদ্ধারা।
ইবাংলা /টিপি /১৯ নভেম্বর ২০২১