শরিফপুর ইউনিয়নের গোদাশিমলা গ্রামের ভেন চালক ফরিদ উদ্দিনের মেয়ে ফাহিমা তাবাসসুম। কোন মতে কষ্ট করে লেখা পড়া চালিয়ে যাচ্ছিল, হঠাৎ একদিন অভাবের সংসারে বাবার অটোরিকশা চুরি হওয়ার পর সংসারে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। সংসারের হাল ধরতে তাবাসসুমও চাকরির জন্য ছুটাছুটি শুরু করে। বেশ কিছু জায়গায় চাকরির জন্য চেষ্টা করে শেষে বুঝল টাকা ছাড়া চাকরি হয়না। অভাবের সংসারে থেকে তাই চাকরির আশা ছেড়েই দিয়েছিল।
কিন্তু ক্ষুধা আর জীবন বাচাঁতে মাথা উচু করে সম্মান জনক কিছু করার তাগিদ ঠিকই অনুভব করত। এরই মধ্যে জানতে পারলো জামালপুরে পুলিশে লোক নিবে কোন তদবির ও টাকা ছাড়া। শুধু যোগ্য মেধাবীদের নিয়োগ প্রদান করা হবে। বিশ্বাস না হলেও একবার যাছাই করার জন্য পরীক্ষা দেয় সে। মেধা তালিকায় নাম উঠে আসে ভেন চালকের মেয়ে তাবাসসুমের। পরিবার হতবাক টাকা ছাড়া চাকরি হয়েছে ! সংবাদ শুনে বাবা মেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরে। পরিবারে সকল দুঃখ কষ্ট চোখের জলে ভাসিয়ে দিয়ে, নতুন ভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে এখন তাবাস্সুম।
জামালপুর পুলিশ লাইন্সে নিরপেক্ষতা আর স্বচ্ছতার ভিত্তিতে কোন রকম অবৈধ লেনদেন ছাড়াই কেবল মাত্র জনপ্রতি ১০৯ টাকা খরচ আর যোগ্যতা বলেই এবার পুলিশের চাকরি পেয়েছেন ৪৮ জন শিক্ষিত বেকার। এদের মধ্যে ৪১ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী । এ নিয়ে পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগে অসহায় পরিবারের সদস্যরাও সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এবারের নিয়োগ পরীক্ষায় জেলার মোট ১৯২০জন পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করলেও মেধা তালিকায় উত্তীর্ন হয়েছে ৪৮জন এদের মধ্যে ৭জন নারী ও ৪১জন পুরুষ। প্রত্যেকেই সরকারি চালানের জন্য একশত ও ফি বাবদ আরো নয় টাকা খরচ করে মোট ১০৯ টাকায় সরকারি চাকরি পেয়েছে। এবারে যারা চাকরি পেয়েছেন তারা অধিকাংশ অসচ্ছল পরিবারে মেধাবী ছাত্র ও ছাত্রী।
এ ব্যাপারে জামালপুরেরর পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ জানান,আইজি স্যারের দিক নির্দেশনা মোতাবেক নিয়োগ প্রক্রিয়া সচ্ছ নিরপেক্ষ সম্পর্ন্ন করা হয়েছে। এখানে চাকরি নিতে কোন প্রকার অবৈধ টাকার লেনদেনে ও তদবির প্রযোজন হয়নি। জেলা পুলিশ শুধু যোগ্যতা ও মেধার মুল্যায়ন করেছে। আমরা আগামীতেও এভাবেই বিনা টাকায় চাকরি দেব। ফলাফল ঘোষনার পরে প্রাথমিক ভাবে চাকরি প্রাপ্তদের সকলকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান হয়।
ইবাংলা / টিপি/ ২৮ নভেম্বর, ২০২১