নাম ‘সমলয়’। কৃষি বিভাগের আদুরে কন্যার যেনো এ ‘সমলয়’। এ নিয়ে চলছে বিস্তর হাঁকডাক।চলছে বিশাল দৌড়ঝাঁপ ব্যস্ততা। কৃষক পর্যায়ে কৃষি যন্ত্রের ব্যবহার বাড়াতে কৃষি বিভাগের এ আয়োজন। প্রায় পুরো একটি ফসলের মাঠ নিয়ে এর কর্মযজ্ঞ। এতে সম্পৃক্ত মনোহরদীর সকল কৃষি কর্মী,কর্মকর্তা ও প্রায় একশ’ কৃষক। তাদের সবার নিরলস অবদানে ‘সমলয়’ দিনে দিনে নিজ রুপে আবির্ভূত হচ্ছে।
মনোহরদীর হাররদীয়া গ্রামের মাঠে ‘সমলয়’ নামের একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য এন্তার কাজকর্ম চলছে মনোহরদী উপজেলা কৃষি অফিসের। কৃষক, মাঠকর্মী থেকে শুরু করে স্থানীয় এবং জেলা পর্যায়ের কৃষি- কর্তাদের ব্যস্ত সময় কাটছে এতে।
কি হচ্ছে এই ‘সমলয়’ নিয়ে? ‘সমলয়’ যেনো মনোহরদী কৃষি অফিসের এক আদুরে কন্যার নাম। আদর যত্নের অভাব নেই। কতো কদর সমাদর তার। এই ‘সমলয়’ কৃষি বিভাগের একটি পরিকল্পনার বাস্তবায়ন পর্ব। চলতি বোরো মওসুমে হাররদীয়া গ্রামের মাঠে দেড়শ’ বিঘে জমি নিয়ে শতেক কৃষকের সক্রিয় অংশগ্রহনে হাতে কলমে কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহার শেখন এটি।
এ জন্য চলতি বোরো মওসুমের পুরো সময়টাই কৃষি বিভাগ কৃষকদের সাথে মাঠে থাকছে এখানে।’সমলয়ের প্রাথমিক পর্যায় এখন। এর প্রস্তুতি পর্বে সারি সারি ট্রেতে ধানের চারা উৎপাদন চলতে দেখা গেলো সেখানে। বৈরিআবহাওয়া ঝড়বৃষ্টি,মাত্রারিতিক্ত কুয়াশা রুখতে তার উপর করা হয়েছে পলিথিন শেড।
চারা উৎপাদন থেকে শুরু করে একেবারে বোরো ফসল কর্তন,আহরন পর্যন্ত কৃষি অফিস সাথে থেকে কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার শেখাবে কৃষকদের। কৃষি অফিস জানায়,’সমলয়’এর শিক্ষার মাধ্যমে যান্ত্রিক চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করা গেলে ফসল উৎপাদন ব্যয় অনেকটাই কমে আসবে কৃষক পর্যায়ে। এখন বীজতলায় ট্রে পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন পর্ব চলছে এখানে।
সংশ্লিষ্ট কৃষি উপসহকারী কৃষ্ণ চন্দ্র পাল জানান,এ জন্য তারা সবাই নিরলসভাবে কাজ করছেন এ মাঠে। তারা ‘সমলয়’ বাস্তবায়নে কৃষক সম্পৃক্ততায় সব করছেন।যাতে পরবর্তীতে কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়িয়ে তারা ফসল উৎপাদন খরচ কমাতে পারেন। মনোহরদীর সিনিয়ার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার এপ্রসঙ্গে জানান,’সমলয়’এর মাধ্যমে কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধিই হচ্ছে মূল লক্ষ্য।
এতে ফসলের উৎপাদন ব্যয় অনেকাংশেই কমে আসবে। কৃষি শ্রমিক নিয়ে কৃষকদের হয়রানিও দূর হবে এতে। হাররদীয়া মাঠের ‘সমলয়’ কর্মসূচীর একজন কৃষক আঃ মান্নান (৬১)।
তিনি জানান, এ ব্যবস্থায় উজ্জীবিত তিনি। চাষাবাদে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়াতে পারলে মওসুমে কামলা মুনির হাঙ্গামা কমবে। ফসলের উৎপাদন ব্যয়ও প্রায় অর্ধেকে এসে ঠেকবে। একই মাঠের আরেক কৃষক মাসুম রানা দাদন (৩৬)। তিনি জানান, ‘সমলয়’ থেকে শিক্ষা নিয়ে কৃষি যন্ত্রের ব্যবহার বাড়াতে পারলে মওসুমে কৃষি শ্রমিকের দুষ্প্রাপ্যতা দূর হবে। চাষাবাদে বিঘে প্রতি ৫/৭ হাজার টাকা খরচ কমবে বলেও মনে করেন এ কৃষক।
ইবাংলা /টিআর/ ২৪ ডিসেম্বর