জনশক্তি রপ্তানিখাতে সহায়তার আহ্বান এফবিসিসিআই’র
বাণিজ্য প্রতিবেদক, ঢাকা
জনশক্তি রপ্তানিখাতে সরকারের নীতিগত সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)’র জনশক্তি ও দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি। এ কমিটির প্রথম সভায় এ আহ্বান জানানো হয়।
বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) এফবিসিসিআই ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এফবিসিসিআই’র স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মেদ ফারুক এ সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভায় আরও জানানো হয়, বৈশ্বিক করোনা মহামারি শুরুর আগে বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রচ্যগামী উড়োজাহাজের টিকেটের দাম ছিলো গড়ে ৫০ হাজার টাকা। এখন তা দ্বিগুণ বেড়ে লাখ টাকার ওপরে গেছে। মধ্যপ্রচ্যগামী উড়োজাহাজের টিকেটের চড়া দামে ভোগান্তিতে পড়েছেন অভিবাসী কর্মীরা। সেইসাথে বিপাকে পড়েছে জনশক্তি রপ্তানিকারকরাও।
সভায়, জনশক্তি রপ্তানীকারকদের পক্ষ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিমান টিকেটের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনার জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
এ সভায় জানানো হয়, মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানোর লক্ষ্যে গত ১৯ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। শিগগিরই স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওরস (এসওপি) প্রণয়নের কথা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে এফবিসিসিআই’র স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মেদ ফারুক অভিযোগ করেন, ‘বিগত সময়েও মালয়েশিয়াতে জনশক্তি পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়া মাত্র ১০টি প্রতষ্ঠানের হাতে ছিল।
ঐসব প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি-অনিয়মের কারণেই একপর্যায়ে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া সরকার। এখন ঐ একই চক্র ২৫টি কোম্পানির মাধ্যমে দেশটিতে অভিবাসী কর্মী পাঠানোর অপকৌশল করছে।’
সভায় স্ট্যান্ডিং কমিটির অন্য সদস্যরাও জনশক্তি খাতে সিন্ডিকেটের ব্যাপারে তাদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন। নেপাল, ভারত, ও পাকিস্তানের উদাহরণ দিয়ে তারা জানান, প্রতিটি দেশেই দেড় হাজারেরও বেশি রিক্রুটিং এজেন্ট মালয়েশিয়াতে জনশক্তি রপ্তানি করছে। বাংলাদেশে এ সুবিধা গুটিকয়েক এজেন্টের হাতে রাখার তীব্র বিরোধিতাও করেন তারা।
এ খাতে সিন্ডিকেট ভাঙতে মালয়েশিয়া-বাংলাদেশের যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এফবিসিসিআই’র মনোনীত সদস্যকে অর্ন্তভূক্ত করার দাবি জানান জনশক্তি রপ্তানিকারকরা।
এছাড়াও এ সভায়, মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন সংশোধন, রেমিট্যান্সের ওপর প্রণোদনার হার ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করার বিষয়েও আলোচনা হয়।
এছাড়াও,এফবিসিসিআই’র জনশক্তি ও দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির এ সভায় জনশক্তি রপ্তানিখাতের বিদ্যমান সমস্যাগুলো এফবিসিসিআই’র মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
মহামারির মন্দা মোকাবিলায় জনশক্তি খাতকে সরকারি প্রণোদনার আওতায় আনার সুপারিশ করেন এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি ও জনশক্তি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর-ইন-চার্জ মো. হাবীব উল্লাহ ডন।
তিনি জানান, দেশের জিডিপিতে ১২ শতাংশ অবদান রাখছে জনশক্তি খাত। তাই এ খাতটির ব্যাপারে তারা সরকারের কাছ থেকে বাড়তি মনোযোগ আশা করছেন। একই সঙ্গে অর্থনীতিতে অবদান রাখার জন্য জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সরকারিভাবে সম্মানিত করার উদ্যোগ নেয়ারও তাগিদ দেন তারা।
এ সভায় স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান রিয়াজ-উল-ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মাহমুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মুস্তাফা (বাবুল), বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মেদ সেরাজ মিয়া, মফিজ উদ্দিন, মো. রেদওয়ান খান (বোরহান) ও কাজী এম. এ. কাশেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ইবাংলা/ ইবা/ ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১