মেয়াদোত্তীর্ণ পাউরুটি নতুন তারিখ ও মোড়কে বিক্রয়
সিটি রিপোর্টার :
পাউরুটি সব মানুষেরই সকালে বা হাল্কা খাবারের নিত্যদিনের তালিকায় অন্যতম একটা মেনু। এছাড়াও শিশুদের যখন তখন খাবারে একটা সহজ মেনু। সেই মেনু পাউরুটি যদি হয় নিম্ন মানের তৈরি! যদি দেখা যায় মেয়াদোত্তীর্ন হতে বাকি ২/ ৩ দিন আছে এর মধ্যেই পাউরুটিতে ছত্রাক বা ফাংগাস পরে গেছে। আর এসব চত্রাকজনিত পাউরুটি খেয়ে শরীর বা পেটের বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি হতে পারে নিশ্চিভাবেই বলা যায়।
এরকমই একটা পউরুটি তৈরির কারখানর খোঁজ মিলেছে রাজধানীর পল্লবীর সেকশন ১১/বি এভিনিউ ৭, পল্ট-১/১ ঠিাকানায় উজ্জল বেকারি নামে একটা কারখানার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই উজ্জল বেকারীর কারখানার বিক্রয়কর্মীরা পচা ও বাসি পাউরুটি দোকানে দোকানে প্রতিনিয়তই বিক্রি করছে।
পল্লবীর ডি ব্লকের এসব নিম্ন মানের পাউরুটি ক্রয়কৃত কয়েকটি দোকানদার জানালেন, তারা বিভিন্ন প্রকার বেকারির রুটি বিস্কুট রাখেন। রোববার (৪ জুলাই) উজ্জল বেকারির পাউরুটি এক ক্রেতা চায়ের সাথে খাওয়ার সময় দুর্গন্ধ পান এবং পরক্ষণে দেখতে পায় রুটির প্রতিটা পিচে নীল জাতীয় ছত্রাক পড়ে আছে। পরে পাউরুটি পুরোটা খুলে দেখেন পচা গন্ধ ও পোকা।
ওই ক্রেতার নিকট খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাউরুটির মেয়াদ দেওয়া ছিলো ৫দিন এর ২/৩ দিন বাকি থাকতেই রুটিতে নীল জাতীয় চত্রাক এবং ফাঙ্গাসসহ দুর্গন্ধ পাওয়া যায়। এমতবস্থায় পরেরদিন বিক্রয়কর্মীর ভ্যান থেকে আরও অনেক পচা ও ছত্রাক পরা রুটি পাওয়া য়ায়।
ওইসময় স্থানীয় কয়েকজন জনতাকে ডেকে ক্রেতা দোকানদারকে রুটি ফেরত দেন। দোকানদার সাথে সাথে উজ্জল বেকারির মালিক মোহাম্মদ বাবুল আক্তারকে ফোন করে বিষয়টি জানান। বেকারির/ কারখানার মালিক ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে পাউরুটি পচন হওয়ার বিষয়টি স্বচোখে দেখেন এবং স্বীকার করেন।
মালিক বাবুল আক্তার তাৎক্ষণিক বিক্রয়কর্মীর উপরে দোষ চাপিয়ে দিয়ে বলেন, কর্মচারীরা এমন কাজ করতে পারেন। তবে কর্মচারীদের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানায় গেছে মালিকের নির্দেশেই মেয়াদ উত্তীর্ণ পাউরুটি ফেরত নিয়ে নতুন প্যাকেটে পুনরায় রুটিগুলো বিভিন্ন দোকানে বিক্রয় করে। ফলে ওই পাউরুটিগুলোতে পচন ও পোকা ধরা স্বাভাবিক।
এ বিষয়ে উজ্জ্বল বেকারির মালিক বাবুল আক্তারের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান বিক্রয়কর্মীরা এমনটি করতে পারেন। আমি নিজেই কারখানা তদারকি করে থাকি। এক প্রশ্নের জবাবে বাবুল জানান, আর কখনো এমনটি হবে না এ বিষয়ে তিনি সজাগ থাকবেন বলে এ প্রতিবেদক এর কাছে অনুরোধ করেন।
কারখানার কয়েকজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আমরা ২৪ থেকে ২৫টি ভ্যান গাড়ী দ্বারা রুটি সাপ্লাই করে থাকি। দীর্ঘদিন ধরেই মেয়াদ উত্তীর্ণ রুটি ফেরত নিয়ে এসে নতুন মোড়কে নতুন মেয়াদের তারিখ নির্ধারণ করে রুটিগুলো পুনরায় দোকানে বিক্রয় করা হয়। এবিষয়টি বেকারের মালিক জানেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন ই-বাংলাকে জানান, যাচ্ছেতাইভাবে উজ্জল বেকারি/ কারখানায় রুটি বিস্কুট তৈরি করা হয়। কারখানার কর্মচারীদের কোন এ্যাপরণ গ্লাভস বা মাস্ক ব্যবহার করতে দেখেননি তারা। ঘর্মাক্ত শরীরে রুটি তৈরির কারখানায় আটা ময়দা খামি করতে দেখা যায়। এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের নজরদারি বৃদ্ধি করার দাবি জানান স্থানীয়রাস ভুক্তভোগিরা।
ই-বাংলা/রাজধানী/ ৬ জুলাই, ২০২১