চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার জুড়ানপুরে সুফিয়া খাতুন (৩২) নামে দুই সন্তানের জননীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় তার স্বামী জাকিরুল ইসলাম তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের।
নিহত সুফিয়া খাতুন দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর গ্রামের রাজমিস্ত্রি জাকিরুল ইসলামের স্ত্রী এবং একই গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের মেয়ে। শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।
নিহতের মা আছিয়া খাতুনের অভিযোগ, ২০০৪ সালে নিজাম উদ্দিনের ছেলে জাকিরুল ইসলামের সঙ্গে সুফিয়া খাতুনের বিয়ে হয়। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়েও রয়েছে। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় যৌতুকের দাবি করে আসছে জাকিরুল। কয়েকবার মোটা অঙ্কের টাকাও দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু সে প্রায়ই সুফিয়াকে মারধর করত।
তিনি আরও জানান, যৌতুকের টাকা দাবি করে গত ২৮ ডিসেম্বর সুফিয়াকে মারধর করে একটি দাঁত ভেঙে দেয় জাকিরুল। পরে বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুনরায় তাকে মারধর করে।
এর পর সুফিয়া ফোন করে আসতে বললে তার ফোনটি আছাড় মেরে ভেঙে দেয় জাকিরুল। সেখানে গেলে বাড়ির গেট থেকে বের করে দেয় সে। পরে সকালে শুনতে পাই সুফিয়া মারা গেছে। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শরীর ফুলে গেছে। তাকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এর সুষ্ঠু বিচার চান তিনি।
একই অভিযোগ করেছেন নিহতের বড় ভাই আবদুর রশিদ ও ছোট ভাই সাইফুল ইসলামও। অভিযুক্ত স্বামী জাকিরুল ইসলাম বলেন, আমার স্ত্রী দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ। আমি তাকে চিকিৎসা করাচ্ছি। আমি তাকে হত্যা করিনি।
খবর পেয়ে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। আটক করে থানায় নেওয়া হয় অভিযুক্ত জাকিরুলকে। এ সময় ঘটনাস্থলের ছবি নিতে গেলে স্থানীয় এক সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করে দামুড়হুদা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক কামরুল হাসান ও কনস্টেবল আবদুর রহিম।
এদিকে স্থানীয় একটি পত্রিকার সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ঘটনাস্থলে ছবি নিতে গেলে পুলিশ তাকে বাধা দেয় এবং লাঞ্ছিত করেন। এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই ঘটনায় আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আর সাংবাদিকের সঙ্গে হয়তো দায়িত্বরত পুলিশের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। এ বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।
ইবাংলা /টিআর / ৭ জানুয়ারি