বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা ইউনিয়নের চরাঞ্চলের অর্ধশতাধিক মানুষ প্রতারণার শিকার হয়েছে প্রতারক বিল্লাল হোসেন কর্তৃক। প্রতারক বিল্লাল হোসেন গ্রামের সহজ সরল মানুষকে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে প্রায় ৭০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
প্রতারক বিল্লালের নিখুঁত কারসাজির ফাঁদে পড়া ভুক্তভোগীরা জানান, আমাদের এখান থেকে ব্যাংকিং সুবিধা পেতে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার পথ দূরে যেতে হয়। তাই আমাদের বিভিন্ন ফসলসহ গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, বিক্রির টাকা ব্যাংকে জমা রাখার তেমন কোন সুযোগ থাকে না। এসব দুর্বলতার সুযোগ নিয়েই সহজ সরল মানুষদের বেশি লাভের প্রলোভন দেখিয়ে স্থানীয় যুবক বিল্লাল হোসেন গচ্ছিত অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
প্রতি লাখ টাকায় তিন থেকে চার হাজার টাকা প্রতি মাসে ব্যবসার লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে একেক জনের কাছ থেকে দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে নিয়েছে প্রতারক বিল্লাহ। ২০১৮ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত এসব টাকা দেই দিচ্ছি করে ফেরত দিতে টালবাহানা করছেন।
ভুক্তভোগিরা জানান, লাভের অংশ তো দূরের কথা আসল টাকাও প্রতারক আমাদের দিচ্ছে না। এ বিষয়ে স্থানীয় মান্যগণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিচার সালিশ করার পরেও বিভিন্ন তারিখ দিয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে থাকে। ফলে নদী ভাঙ্গন এলাকার এসব মানুষ প্রতারকের খপ্পরে পড়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অনেকেই হয়েছেন সর্বশান্ত।
প্রতারিতদের মধ্যে ফারুখ শেখ। সে জানায় তার গরু বিক্রির আড়াই লাখ টাকা বিল্লাল নিয়েছে। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও আসল এবং লাভের কোন টাকায় সে দিচ্ছে না।
এমনকি স্থানীয় একটি এনজিওর মাধ্যমে গ্রামের সহজ সরল মানুষ কে বোকা বানিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বিল্লাল। আবার এমনও দেখা গেছে জমি বন্ধক রেখে টাকা নিয়েছে। একই জমি একাধিক ব্যক্তি দাবি করে এতে করে জানা গেছে বিল্লাল এক জমি তিন থেকে চার জনের কাছে বন্ধক রেখে লাখ লাখ টাকা নিয়েছে।
সোনাতলার পাকুল্লা ইউনিয়নের রাধাকান্তপুর গ্রামের শিক্ষিত যুবক বিল্লাল হোসেন এলাকা থেকে অর্ধ কোটিরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বগুড়া শহরের জয়পুর পাড়ায় একটি ইউনানী হারবাল কারখানা ক্রয় করেছেন। কারখানাটির নাম ফেয়ার ল্যাবরেটরী।
এসব বিষয় বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে জানতে চাইলে, টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি লভ্যাংশ প্রদান মর্মে টাকা এনে কারখানাটি চালু করতে চেয়েছি কিন্তু এখনো তা সম্ভব হয়নি।
বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে প্রতারণার বিষয়ে জানতে চাওয়ার পরক্ষণে সময় টিভির বগুড়া প্রতিনিধি পরিচায়ধারী মাজেদুর রহমান এ প্রতিবেদককে ফোন করে জানান আপনি বিল্লালকে আর ফোন দিবেন না।
কেন ফোন দিব না এমন প্রশ্নের উত্তরে মাজেদুর আর কোনো কথা বলেননি। খোঁজ নিয়ে জানা যায় মাজেদুর রহমান এর বাড়ী জয়পুরহাট। সে বাংলাদেশ প্রতিদিনের জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি এবং সময় টিভির বগুড়া জেলা প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতে পেরে জয়পুরহাট থেকে তাকে বহিস্কার করে।
প্রথম সারির দুটি গণমাধ্যমে ভিন্ন দুটি জেলায় কিভাবে প্রতিনিধিত্ব করে এ বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদকরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
নিম্নে উল্লেখ্য ব্যক্তিরা বিল্লালের প্রতালনার শিকার ১).মোঃ আব্দুল কাফি ২).মোছাঃ সেলিনা আক্তার ৩).মোঃ মেহেদী হাসান হিরু ৪).মোঃ রশিদ বেপারি ৫).মোঃ বোরাহান মন্ডল ৬).মোঃ আবুল কালাম ৭).মোঃ ফারুক মিয়া ৮).মোঃ তাহেরুল সরকার ৯).মোছাঃ শিমা আক্তারসহ আরও অনেকর কাছ থেকে অভিনব কায়দায় প্রতারনার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়ে গা ঢাকা দিয়ে আছে।
নির্ভরযোগ্য এক সূত্রে জানা গেছে, প্রতারক বিল্লাল হোসেনে আমতলী ১০ নম্বরে গ্রামীণ অর্থনীতি ফাউন্ডেশন নামে একটি এনজিও খুলে পাকুল্লা, আচারের পাড়া, চারালকান্দি গ্রামের প্রায় শতাধিক মানুষের কাছ থেকে বীমা করে দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
ই বাংলা/ আমিনুল/ ১৩ জুন, ২০২১