শিগগিরই রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। কিন্তু খালেদার সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তার ছেলে ও দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
দলীয় সংশ্লিষ্ট গোপন সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে দলটির সিনিয়র এক নেতার সঙ্গে এ বিষয়ে মেজাজ হারান তারেক রহমান। সূত্রটি আরো জানায়, খালেদা জিয়ার বাসায় ফেরার বিষয়টি শোনার সঙ্গে সঙ্গে তারেক রহমান স্কাইপিতে ফোন দেন।
এ সময় তিনি বলেন, তোমাদের কতবার বললাম, কত করে বললাম, যেভাবেই হোক দলীয় নেত্রীকে হাসপাতালে রাখো! সুস্থ হলেও যেন রিলিজ না পান। কিন্তু কে শোনে কার কথা? তোমরা আমার কথা শুনলে না। এখন কী হবে বুঝতে পারছো? রাজনীতি করার আর কোনো ইস্যুই থাকবে না। তখন কি করবে? আঙুল চুষবে?
সূত্রটির তথ্যমতে, মাঠের রাজনীতিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ ও জনসমর্থনহীন দল বিএনপির বর্তমানে কোনো সাংগঠনিক তৎপরতা নেই। যা টুকটাক সভা-সমাবেশ-মানববন্ধন করছে, সেটাও দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে। কিন্তু সম্প্রতি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া সম্পর্কে তার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠছেন বিএনপি নেত্রী। কয়েকদিনের মধ্যেই নেয়া যাবে বাসায়। আর এ খবর লন্ডনে পৌঁছাতেই মাথায় হাত দিয়েছেন তারেক রহমান।
তার মতে, এতদিনের প্ল্যান-প্রোগ্রাম সব ধুলোর সঙ্গে মিশে যেতে বসেছে। কারণ, নেত্রী বাসায় গেলেই রাজনীতি করার ইস্যু শেষ। তাছাড়া দলের সাংগঠনিক অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়। তাই রাজনীতির ইস্যু নিয়ে চিন্তার ভাঁজ তার কপালে।
লন্ডনের কিংস্টনভিত্তিক একটি সূত্র বলছে, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) বাসায় ফেরার খবর পাওয়ার পর থেকেই নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক প্রকার যোগাযোগ করা ছেড়ে দিয়েছেন তারেক রহমান।
বিষয়টি নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, সন্তান হিসেবে মায়ের হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার খবরে খুশি হওয়ার কথা তারেক রহমানের। কিন্তু তেমনটা হয়নি। তার প্রচণ্ড মন খারাপ। কারণ, স্বার্থে টান পড়েছে। এখন আর তার চিকিৎসা কিংবা মুক্তির কথা বলে তিনি নিজের পকেট ভারি করতে পারবেন না। পারবেন না রাজনীতি করতেও।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহানুভবতা দেখিয়ে শুধু কারামুক্তিই নয়, নিজের পছন্দমত হাসপাতালে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসারও সুযোগ দিয়েছে সরকার। বর্তমানে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন তিনি। শিগগিরই ফিরবেন বাসায়। কিন্তু দলীয় চেয়ারপার্সন ভালো হয়ে যাওয়ায় তারেক রহমানের মুখে হাসির পরিবর্তে জমেছে অসন্তোষ। কারণ, তার রাজনীতি করার ইস্যু শেষ হয়ে যাচ্ছে।
তাদের ভাষ্য, যে ছেলে নিজের মাকে নিয়েও রাজনীতি করতে পিছপা হন না, তিনি আর যাই হোক প্রকৃত মানুষ হতে পারেন না। সূত্র: ডেইলি-বাংলাদেশ
ইবাংলা / নাঈম/ ২২ জানুয়ারি, ২০২২