প্রতিষ্ঠার ৩০ বছরেও নির্মাণ হয়নি বরগুনার পাথরঘাটা পৌরসভার নিজস্ব ভবন। ১৫ বছর আগের ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা অডিটরিয়াম কাম পাবলিক লাইব্রেরীর একটি জড়াজীর্ণ ভবনে এখনো চলছে পৌরসভার কার্যক্রম। অথচ পৌরসভার নতুন পৌর ভবনের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের হদিস মিলছে না। কাগজে কলমে ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দের অর্থ তুলে নেয়া হলেও বাস্তবে ভবনের কোনো অস্তিত্ব নেই।
জানা গেছে, বরগুনার পাথরঘাটা পৌরসভা স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ণ ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতায় এটি ২য় শ্রেণীর পৌরসভা। বাইরে থেকে দেখে মনে হবে সুসজ্জিত একটি ভবন। ভেতরে প্রবেশ করলে বাস্তবে ঠিক এর বিপরীত চিত্র। ১৫ বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা জড়াজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাথরঘাটা পৌরসভার কার্যক্রম। নিজেদের জীবনে ঝুঁকি নিয়ে যেমন পৌরপরিষদ নাগরিকদের সেবা দেয়ার কাজ চালাচ্ছেন। ভবন নির্মাণের জন্য পৌরসভার নিজস্ব কোনো জমি না থাকায় এ জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। কাউন্সিলরদেরকে বাধ্য হয়ে চা দোকানে বসে নাগরিকদের সেবা দিতে হয়
পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু বকর সিদ্দিক মিল্লাত বলেন, জড়াজীর্ণ ভবনের পলেস্তারা ধসে বেশ কয়েকবার বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাছাড়া পৌরবাসীকে ঝুঁকির মধ্যেই সেবা নিতে আসতে হয়। যার ফলে সঠিক সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। নিজস্ব ভবন না হওয়ার কারণ হিশেবে জমি নিয়ে নানা জটিলতার কথা তুলে ধরেণ পৌর মেয়র সাহেব। পৌরভবনের দূরাবস্থা তুলে ধরতে পৌরসভায় যাওয়ার পর সাংবাদিকদের দেখে এগিয়ে আসেন ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম কাকন।
তিনি কিছু তথ্য প্রমাণ দেখান, কাকনের দেয়া তথ্য ঘেটে দেখা যায়, ২০১১-২০১২ অর্থবছরে উন্নয়ণ অর্থ বাজেট থেকে বগুনার পাথরঘাটা পৌরসভার নতুন পৌরভবন নির্মাণের জন্য ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ণ ও সমবায় মন্ত্রণালয়। গত ১৩ নভেম্বর ২০২১ তারিখ এই কাউন্সিলর স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ণ ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব, উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকারবিভাগ ও পৌর মেয়রসহ মোট সাতজনকে আইনগত নোটিশ প্রদান করেন।
এদিকে আইনগত নোটিশের বিপরীতে জেলা হিশাব রক্ষণ কর্মকর্তা তন্বয় গোস্বামী তথ্য উপাত্তে সরবরাহ করেন, এতে দেখা যায়, ২০১২ সালের ১৪ জুন তারিখে পৌর কর্তৃপক্ষ ৫০ লাখ টাকা পৌর ভবনের নির্মাণবাবদ বিল তুলে নিয়েছে। অথচ, বরাদ্দপত্রের ৭নং কলামে নির্দেশনায় স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়। বরাদ্দকৃত খাত ছাড়া অন্য কোনো খাতে অর্থ ব্যয় করা যাবে না।
পৌর ভবন নির্মাণের জন্য টাকা উত্তোলনের বিষয়ে পাথরঘাটা পৌরসভার হিসাব রক্ষক বেলায়েত হোসেন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি পৌর মেয়র এর সাথে কথা বলতে বলেন।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা পৌরসভা মেয়র আনোয়ার আকন জানান, ২০১১ -১২ তৎকালীন সময়ে মেয়র ছিলেন আইয়ুব মল্লিক। আমি মেয়র হয় সে অর্থ খরচ করেননি। সমুদয় অর্থই পাথরঘাটা পৌরসভা কাছে আছে।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, কাজ না করে রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ আত্মসাৎ করলে, তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইবাংলা/এইচ/ ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২