ডিজিটাল মানবিক সভ্যতা গড়ে তুলতে কাজ করার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা আমাদের মানব সম্পদ। বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসুর উত্তরাধিকারী এই জাতি হিসেবে আমাদের এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। এই জন্য আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা আমাদের দায়িত্ব।

Islami Bank

প্রযুক্তিতে ৩২৪ বছর পিছিয়ে থাকা জাতি প্রযুক্তি বান্ধব পরিবেশের ফলে গত ১৩ বছরে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্বের জায়গায় উপনীত হয়েছে এবং পঞ্চম শিল্প বিপ্লবেও বাংলাদেশ নেতৃত্ত্ব দেবে নতুন প্রজন্ম। একটি ডিজিটাল মানবিক সভ‌্যতা গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্ট সকলকে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।

বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত শীর্ষক মনিসিংহ- ফরহাদ ট্রাস্ট আয়োজিত ভার্চুয়াল সভায় প্রধান অতিথির বক্তেব্যে এসব কথা বলেন।

ট্রাস্ট সভাপতি শেখর দত্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের উন্নয়ন গবেষণা প্রধান ড. নজরুল ইসলাম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ঢাকসু‘র সাবেক জিএস মাহবুব জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ‌্যাপক ড. মজিবুর রহমান. ঢাকা বিশ্ববিদ‌্যলয়ের শামসুন্নাহার হলের প্রভোস্ট ড. লাফিফা জামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ‌্যালয়ের অধ‌্যাপক সংগীতা আহমেদ প্রমূখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ঘোষিত হওয়ার ৮ বছর আগে বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসুচির ঘোষণা দেয়া হয়। ২০০৯ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশের যাত্রা শুরুর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করে প্রযুক্তিতে শতশত বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বিশ্বে নেতৃত্বের সক্ষমতা অর্জন করেছে। জাপানসহ পশ্চিমা বিশ্ব এখন ডিজিটাল মানবিক বিপ্লব তথা ৫ম শিল্প বিপ্লবের বা স্যোসাইটি ফাইভ পয়েন্ট জিরো‘র কথা ভাবছে।

তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধারণা হচ্ছে যন্ত্র মানুষের জায়গায় কাজ করবে । যন্ত্র আমাদের প্রয়োজন কিন্তু যন্ত্র মানুষকে স্থলাভিষিক্ত করতে সেটি আমরা হতে দেব না। আমাদের পপুলেশন ডিভিডেন্ট কাজে লাগিয়ে আমরা যন্ত্র

one pherma

প্রযুক্তিতে ১৯৮০‘র দশককে একটি সুবর্ণ সময় উল্লেখ করে বলেন, ভারত সে সময় প্রযুক্তি বান্ধব নীতি ও কর্মসূচি গ্রহণের মাধ‌্যমে আইটি দুনিয়ায় নেতৃত্বের আসনে পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে কিন্তু দুর্ভাগ‌্য নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে বিনা মাশুলে সাবমেরিন ক‌্যাবল সংযোগের সুযোগটিও আমাদের তৎকালীন বিএনপি সরকার তথ‌্য পাচারের অজুহাতে প্রত‌্যাখ‌্যান করে। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১ বছরের জঞ্জাল অপসারণ করে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে যুগান্তকারি কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেন। ৪টি মোবাইল ফোন আপারেটরকে লাইসেন্স প্রদান, কম্পিউটারের ওপর থেকে ভ‌্যাট ট‌্যাক্স প্রত‌্যাহার, ভিস‌্যাটের মাধ‌্যমে ইন্টারনেট যুগে বাংলাদেশের প্রবেশ, দেশে দশ হাজার প্রোগ্রামার তৈরির কর্মসূচি গ্রহণ, মহাকাশে স‌্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের উদ‌্যোগ গ্রহণ ইত‌্যাদি কর্মসূচি দেশে ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল ভিত্তি স্থাপিত হয়।

গত ১৩ বছরে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে সরকারের গৃহীত উদ‌্যোগের পরিসংখ‌্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে ব্রডব‌্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। দেশের ৯৮ ভাগ অঞ্চল ফোর-জি নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। ২০১৩ সালে থ্রি-জি চালু করার মাধ‌্যমে মোবাইলে ইন্টারনেট যুগ শুরু হয়। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ফোর জি প্রযুক্তি যুগে এবং ২০২১ সালে ফাইভ-জি যুগে প্রবেশ করেছে ।

তিনি বলেন, দেশের উপজেলা পর্যন্ত ফাইভ-জি অবকাঠামো নির্মাণের কাজও আমরা শুরু করতে যাচ্ছি। ফাইভ-জির মাধ‌্যমে আমরা যে ডিজিটাল মহাসড়ক নির্মাণ করছি তা হবে ৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার অন‌্যতম প্রধান শক্তি।

ইন্টারনেট সহজলভ‌্য করতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উদ‌্যোগ তুলে ধরে বলেন, ২০০৮ সালে দেশে প্রতি এমবিপিএস ইন্টারনেটের মূল‌্য ছিলো ২৭ হাজার টাকা। বর্তমানে তা মাত্র ৬০ টাকায় পাওয়া যায়।

অনুষ্ঠানের সভাপতি স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ডিজিটাল শব্দটাই মোস্তাফা জব্বারের মুখে প্রথম শুনেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীকে আগামীদিনের প্রযুক্তির চ‌্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপযোগী করে তৈরি করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ইবাংলা/ এইচ/ ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

Contact Us