৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) সমবেত জনসমুদ্রে জাতির উদ্দেশে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর এই ভাষণ জাতিকে অনুপ্রাণিত করে স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে। ২০১৭ সালে ইউনেস্কো এই ঐতিহাসিক ভাষণকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে
যে ভাষণে এখনও উজ্জীবীত হয় বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কতটা দূরদর্শী নেতা ছিলেন তার প্রমাণ ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বিশ্ববাসির কাছে তা জানা দিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।। একদিকে জাতিকে স্বাধীনতার পূর্ণ দিকনির্দেশনা দেয়া, অন্যদিকে লক্ষ্য বিচ্ছিন্নতাবাদি হিসেবে যাতে চিহ্নিত না হন। এই দুটি বিষয়ের ভারসাম্য রক্ষা করেই ১৮ মিনিটের এই ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।
১৯৭১ সালের পহেলা মার্চ থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল ছিল ঢাকার রাজপথ। দেশের মানচিত্র খচিত পতাকা ওড়ানো, স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ ও জাতীয় সংগীত ঠিক করা। দ্রুতই স্বাধীকার আন্দোলন এগিয়ে চলে স্বাধীনতার পথে। দেশের জনগণ তখন অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে বঙ্গবন্ধু দিকনির্দেশনার অপেক্ষায়। ৩রা মার্চ পল্টনে ছাত্র সমাবেশে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দিলেন ৭ই মার্চে ভাষণেই সব বলবেন।
অবশেষে এলো ৭ই মার্চ, ১৯৭১। রোববার বিকেলে স্বাধীনতার দাবিতে উত্তাল দেশের সব জনস্রোত সেদিন মিলিত হয়েছিল তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে। লাখ লাখ মানুষের জনসভায় ভাষণ দেবেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
রেসকোর্স ময়দানে যখন উত্তাল জনতার গর্জন চলছে, তখন ৩২ নম্বরে চলছিল বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নেতাদের আলোচনা। একপক্ষ বঙ্গবন্ধুকে চাপ দিচ্ছিল সেদিনই স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার। কিন্তু, দূরদর্শী বঙ্গবন্ধু জানতেন সেই মূহুর্তে কি বলতে হবে।
পৌনে তিনটায় ভাষণ শুরু করলেন বঙ্গবন্ধু। শেষ করলেন ৩টা তিন মিনিটে। ১৮ মিনিটে স্বাধীনতাকামী জাতিকে দিলেন সব নির্দেশনা। ভাষণ শেষ হতেই আবারো স্বাধীনতার পক্ষে শ্লোগানে শ্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে রাজপথ।
ইবাংলা/ জেএন/ ৬ মার্চ, ২০২২