ইউক্রেনের মারিউপোল শহরের কর্তৃপক্ষ ও ইউক্রেনীয় সেনাদেরকে আত্মসমর্পণসহ রাশিয়া যেসব শর্ত দিয়েছিল, তা প্রত্যাখ্যান করেছে ইউক্রেন।
সোমবার (২১ মার্চ) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ইউক্রেনীয় উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক জানিয়ে দিয়েছেন, আত্মসমর্পণের কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আত্মসমর্পণ বা অস্ত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা হতে পারে না। । প্রস্তাব প্রত্যাখান করা নিয়ে মস্কোর পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ইউক্রেনীয় বাহিনীর উদ্দেশে রাশিয়ার পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, অস্ত্র সমর্পণ করুন। যারা অস্ত্র সমর্পণ করবে তাদের সবাইকে নিরাপদে মারিউপোল ছেড়ে যাওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হবে। বেসামরিকদের জন্য মানবিক করিডোর খুলে দেওয়া হবে। এ জন্য সোমবার ভোর ৫টার মধ্যে ইউক্রেনকে লিখিত সম্মতি দিতে হবে। তাহলে ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এই দুই ঘণ্টা চুক্তি অনুযায়ী সাময়িক যুদ্ধ বন্ধ থাকবে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কয়েক বছর আগে আবেদন করে ইউক্রেন। মূলত, এ নিয়েই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে যুদ্ধ শুরুর দুই মাস আগ থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রাখে মস্কো। কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে না আসায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। ঠিক তার দুদিন পর ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে।
এ দিকে চলমান এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে ইউক্রেন ছেড়েছেন প্রায় ৩৩ লাখ মানুষ। যুদ্ধে ইউক্রেনের ১৩শ’ সেনা নিহত এবং রাশিয়ার ১৪ হাজার ৭০০ সৈন্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। তবে রাশিয়া বলছে, যুদ্ধে তাদের প্রায় ৫০০ সৈন্য নিহত এবং ইউক্রেনের আড়াই হাজারের বেশি সেনা নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া জাতিসংঘ জানিয়েছে, রুশ অভিযানে ইউক্রেনে ৯০২ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
ইবাংলা / জেএন / ২১ মার্চ ২০২২