মিথ্যা অভিযোগ এনে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে পরে ৯৯৯ এ কল করায় ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বামনা থানার ওসি বশিরুল আলমের বিরুদ্ধে।
এছাড়াও ভুয়া অভিযোগ করিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে পুনরায় লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছেন এই ওসি। অভিযুক্ত ওসি বশিরুল আলম বরগুনার বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিশেবে দায়িত্বরত আছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বামনা উপজেলার খোলপটুয়া বাজারে ইলেকট্রিক পন্যের একটি দোকান রয়েছে রাসেল মল্লিক নামের স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর। গত বছর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বশিরুল আলম রাসেলের দোকান থেকে ইলেকট্রিক তার কেনেন।
কিছুক্ষণ পরে নিন্মমানের তার বিক্রির অভিযোগ এনে ব্যবসায়ী রাসেলকে থানায় নিয়ে যান ওসি বশিরুল। পরে স্বজনরা থানায় গেলে ওসি বলেন রাসেল নিন্মমানের তার বিক্রি করছে। এবং কারাগারে পাঠানোর ভয়ভীতি দেখি ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে। উপায় না পেয়ে স্বজনরা ২০ হাজার টাকা দিয়ে ব্যবসায়ী রাসেলকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে।
একই দিন সন্ধ্যায় ব্যাবসায়ী রাসেল মল্লিক জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করে ২০ হাজার টাকা নেয়ার বিষয়টি জানান। পরে ওসি বশিরুল আলম ঘুষ দেয়া ২০ হাজার টাকা ফেড়ত দিয়ে দেন। এরপর স্থানীয় অসাধু চক্রকে দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করে ব্যবসায়ী রাসেল ও তার পরিবারকে। এছাড়াও মামলার ভয় দেখিয়ে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি।
এরপর আজ মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) এসব মিথ্যা অভিযোগ ও হয়রানি থেকে পরিত্রান পেতে বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার ও জেলা পুলিশ সুপার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন রাসেলের বোন।
ব্যবসায়ী রাসেলের বোন সাহানা বেগম বলেন, দুই নাম্বার তার বিক্রির মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ওসি বশিরুল আমার ভাইকে ধরে নিয়ে যায়। সে আমাদের কাছে ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করলে আমরা ২০ হাজার টাকা দিয়ে ভাইকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাই।
তিনি বলেন, ভাই ৯৯৯ এ কল করে বিসয়টি জানালে ওসি আমাদের টাকা ফেড়ত দিয়ে দেয়। এরপর থেকেই আমরা নানান মিথ্যা অভিযোগ, ও হয়রানির শিকার হচ্ছি। এমনকি তিনি আবারও আমাদের কাছে ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করে।আমরা এবিষয়ে উর্ধতন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ী রাসেল মল্লিক বলেন, আমার দোকানে কোন ভেজাল বা দুই নম্বার মাল রাখিনা। ওসি সাহেব শুধু শুধু আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ধরে নিয়ে যায়। পরে আমার বোন ২০ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। ওইদিনই আমি ৯৯৯ এ কল করে পুরো ঘটনা বলি। পরদিন ওসি আমার দুলাভাইয়ের কাছে ২০ হাজার টাকা ফেরত দেয় এবং আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।
রাসেল আরো বলেন, এরপর স্থানীয় কয়েকজন বাজে মহিলাদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও হুমকির অভিযোগ দেওয়ায়। এরপর থানায় ডেকে নিয়ে ১ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে নাকি আমাকে ধর্ষণ মামলায় দেয়ার হুমকি দেয়। নিরূপায় হয়ে ডিআইজি ও পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দেই।
অভিযুক্ত ওসি বশিরুল আলম বলেন, বিষয়টি মিথ্যা। এরকম কিছু হয়নি। অন্যকোন ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য আমাকে নিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর মল্লিক বলেন, এষিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পাথরঘাটা সার্কেল) বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন। তদন্তের পর অভিযোগের সত্যতা পেলে ওসি বশিরুল আলমের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইবাংলা/ জেএন/ ৩০ মার্চ, ২০২২