জাজিরা সাব রেজিষ্টার অফিসের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন মিল্টনের বিরুদ্ধে ঘুষ,দুনীর্তি ও নানা অনিয়ম কওে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সরকারী চালানের মাধ্যমে সাড়ে সাত পার্সেন্ট জমা দেওয়ার কথা থাকলে অফিস সহকারীকে দিতে হয় ১০-১২ পার্সেন্ট। তাকে খুশি না করে জাজিরা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে হয় না কোন দলিল। যার অংশ যায় তার উপর মহল পর্যন্ত।
ঢাকার বারিধারার জে ব্লকের সাউথ পয়েন্ট স্কুলের সামনের সুভাষ টাওয়ারে ফ্লাট ও শরীয়তপুর শহরের পাসপোর্ট অফিসের সামনে তার স্ত্রীর নামে রয়েছে প্লট। এ ছাড়া ও বে-নামে অনেক সম্পদ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
শরীয়তপুর জেলা রেজিষ্ট্রার ও জাজিরা উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিস সুত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া পৌরসভার নড়িয়া থানার সামনে বৈশাখী পাড়া এলাকার সাবেক নড়িয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কেরানী ভুইয়া বাড়ীর দেলোয়ার হোসেন ভুইয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন মিল্টন।
তিনি ১৯৯৭ সালে শরীয়তপুর জেলা রেজিষ্টার অফিসে অস্থায়ী কর্মচারী হিসাবে (মাষ্টর রোল) যোগদান করেন। ২০১০ সালে মোহরার হিসাবে পদ উন্নতি পায়। এরপর ২০১৯ সালে সে জাজিরা উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে অফিস সহকারী হিসাবে যোগদান করে।
এর পর থেকে আর তাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বনে গেছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। প্রতিটি দলিলের ক্ষেত্রে প্রত্যেক গ্রাহক কে তার ভেন্ডার বা (দলিল লিখকের মাধ্যমে) উৎস কর ২ শতাংশ, স্ট্যাপ দেড় শতাংশ, রেজিস্ট্রি বাবদ ১ শতাংশ ও স্থানীয় কর হিসাবে ৩ শতাংশ হিসাবে ব্যাংক চালানের মাধ্যমে জমা দিতে হয়।
সেখানে এ সকল নিয়ম মেনে দলিল জমা দিলে ও জাজিরা সাব রেজিস্টি অফিসের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন মিল্টনকে দিতে হয় অতিরিক্ত নগদ টাকা। তাকে নগদ টাকা না দিলে জাজিরা উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে হয় না কোন দলিল।
জাজিরা উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার মোঃ জাহিদ হোসেনের সহয়তায় সেখানে সে কায়েম করেছে তার নিজস্ব রাম রাজত্ব। প্রতিটি দলিলে নগদ ৩০০ টাকা, সামান্য ভুলের জন্য ১ হাজার থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা তিনি আদায় করে থাকেন। যার অংশ বিশেষ যায় তার উপর মহলে।
এ সকল টাকার ভাগ হয় সাব রেজিষ্টার, মহরার ২ জন, টিসি ২ জন সহ কেরানী আনোয়ার হোসেন মিল্টন। এ সকল টাকা নিজে ভাগ বাটোয়ারা করে থাকেন বলে জানা গেছে। এ সকল অবৈধ টাকার সাব রেজিষ্টর পায় ৪৫ পার্সেন্ট,অফিস সহকারী ২৫ পার্সেন্ট, ২ জন মহরারের জন্য ৩০ পার্সেন্ট করে ভাগ বাটোয়ারা করা হয় বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা রেজিষ্টার অফিস সুত্রে জানা গেছে।
আর অফিসের সকলকে ম্যানেজ করে অফিস সহকারী মিল্টন হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। ইতি মধ্যে সে ঢাকার অভিজাত এলাকা বারিধারার জে বøকের সাউথ পয়েন্ট স্কুলের সামনে সুভাষ টাওয়ারে ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ে কিনেছেন একটি ফ্লাট।
শরীয়তপুর শহরের পাসপোট অফিসের সামনে সাড়ে সাত শতাংশের একটি প্লট কিনেছেন তার স্ত্রী নিশি আক্তারের নামে। বর্তমানে সে ১৪ হাজার ৪ শত ৭০ টাকা স্কেলে বেতন পান। সেখানে তিনি ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় কিভাবে জমি ও প্লাট কিভাবে রাখেন ? কিন্তু বনে গেছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। সুশীল সমাজের দাবী এ সকল দুনীর্তিবাজদের তদন্তে করে বিচারের আওতায় আনা হউক।
জাজিরা নাওডোবা এলাকার আলী আজগর বয়াতী বলেন, জাজিরা সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসের অফিস সহকারীর নিকট নগদ টাকা দেওয়া ছাড়া কোন দলিল হয় না। দলিল প্রতি তাকে ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা দিতে হয়। এ সকল করে আনোয়ার হোসেন মিল্টন ঢকায় ও দেশে বহু সম্পদেও মালিক হয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দলিল লিখক (ভেন্ডার) বলেন, জাজিরা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হয় না। কোন কারনে দিনে দলিল না হলেও ঘুষ দিলে রাতে দলিল হয়ে যায়।
জাজিরা সাব রেজিষ্টার অফিসের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন মিল্টন বলেন, আমার বিরোদ্ধে যে সকল অভিযোগ করা হয়েছে তা আসলে সঠিক নয়। আমি আমার শশুর বাড়ী থেকে সাপোট পেয়েছি । পাশাপাশি আমার ভাইরা প্রবাসে থাকে তাদের সহয়তায় আমি এ সকল সম্পদ কিনেছি। অফিসের কাজ কর্ম নিয়ম নীতি মেনেই করি।
জাজিরা উপজেলা সাব রেজিষ্টার মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমার অফিসে কেউ দুনীর্তি করলে আমাকে লিখিত ভাবে জানালে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। পাশা পাশি কিছু কিছু টাকা নগদ নেওয়ার বিধান রয়েছে।
ইবাংলা/ টিএইচকে/ ৬ এপ্রিল, ২০২২