সপ্তাহ ধরে পদ্মা যমুনা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এ দুটি প্রধান নদীর পানি বৃদ্ধিতে মানিকগঞ্জে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীগুলোর পানিও হুহু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়ছে মানিগঞ্জের বিভন্ন অঞ্চলে বাস করা মানুষ।
দ্রুত পানি বৃদ্ধির ফলে পদ্মা,যমুনা,কালীগঙ্গা ও পুরাতন ধলেশ্বরী নদীর পাড় এলাকায় ভাঙন বেড়েছে। এসব নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে রাস্তাঘাট,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,মসজিদ,মাদ্রাসা,ফসলি জমি,বসতভিটাসহ অসংখ্য স্থাপনা। এতে এলাকার মানুষের দুর্ভোগের অন্ত নেই।
সরজমিনে ঘুরে জানা গেছে, যমুনা নদীর পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর উপজেলার বাচামারা,বাঘুটিয়া ও চরকাটারি এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। শিবালয় উপজেলায় অন্বয়পুর,কাশাদহ এলাকায় যমুনার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাম্প হাউজ, প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অসংখ্য স্থাপনা। গত দুই মাসে পদ্মা নদীর ভাঙনে হরিরমাপুর উপজেলার কয়েক’শ বিঘা ফসলি জমি,বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
এখনও পদ্মা নদীর ভাঙনে ধূলশুরা ,কাঞ্চনপুর এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। কালীগঙ্গা নদীতে পানি বাড়ায় সদর উপজেলার কুশেরচর ও সিংগাইর উপজেলার জামশা এলাকায় ভাঙন বেড়েছে। পুরাতন ধলেশ্বরী নদীর ভাঙনে ঘিওর উপজেলার অর্ধশতাধিক বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে। নতুন করে পানি বাড়াতে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে কয়েকশো পরিবার।
যমুনা নদীর আরিচা পয়েন্টের পানির স্তর পরিমাপক মো. ফারুক হোসেন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার আরিচা পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৯ দশমিক ২৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । গত এক সপ্তাহে এ পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। ফলে পদ্মা নদীসহ জেলার অভ্যন্তরীণ নদীগুলোতে পানি বেড়েছে।
হরিরামপুর উপজেলার ধূলশুরা এলাকার মজিদ মিয়া বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে পদ্মার ভাঙন বেড়েছে। অনেকেই ঘরবাড়ি নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিচ্ছেন।’
ঘিওর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য নাহিদা আক্তার বলেন, ‘পুরাতন ধলেশ্বরী নদীর ভাঙনে দুই পাড়ে অর্ধ শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও নদীতে পানি বাড়তে থাকায় ফসলি জমিসহ বাড়িঘর ভাঙনে হুমকিতে রয়েছে।’
হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, ‘নদীতে পানি বাড়তে থাকায় এ উপজেলায় ভাঙন আতঙ্ক বেড়েছে। প্রতিদিন ভাঙনে নতুন নতুন এলাকার বসতভিটা ও ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে।এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানালে কিছু এলাকায় জিও ব্যাগ ফেললেও বেশিরভাগ এলাকায় ভাঙন ঠোকানো যাচ্ছে না।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন জানান, জেলার ৫০ কিলোমিটার এলাকা পদ্মা ও যমুনা নদীড় পাড় হওয়ায় প্রতি বছর ভাঙনের কবলে পড়ে।গুরুত্ব বিবেচনায় ১৩ দশমিক ৮ কিলোমটিার এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে ভাঙনরোধ করা হয়েছে।এছাড়া আরো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। জরুরিভাবে ভাঙরোধে বিভিন্ন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙনরোধের চেষ্টা করা হয়েছে।
ই-বাংলা.প্রেস/ আইএফ/ ২০ আগস্ট, ২০২১