রেলিগেশন খরায় থাকা কাডিজের কাছে ঘরের মাঠে গতকাল লা লিগায় ১-০ গোলের হতাশাজনক পরাজয় বরণ করেছে বার্সেলোনা। এই পরাজয়ে শীর্ষ চারে থেকে লিগ শেষ করার পথে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে কাতালান জায়ান্টদের। ক্যাম্প ন্যুতে লুকাস পেরেজের ৪৮ মিনিটের গোলে কাডিজের জয় নিশ্চিত হয়। এনিয়ে টানা দ্বিতীয় পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ গ্রহণ করলো বার্সা। এর আগে বৃহস্পতিবার এইনটাখট ফ্রাংকফুর্টের কাছে পরাজিত হয়ে ইউরোপা লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছে জাভি হার্নান্দেজের দলকে।
এই পরাজয় সত্তেও সেভিয়া ও এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের সাথে সমান ৬০ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে লা লিগা টেবিলের দ্বিতীয় স্থানেই থাকলো বার্সেলোনা। মাত্র তিন পয়েন্ট পিছিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে রিয়াল বেটিস। বার্সেলোনা অবশ্য এই তিনটি দলের থেকে একটি ম্যাচ কম খেলেছে। কিন্তু এই পরাজয়ের মাধ্যমে শেষ চারটি ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে জয়ী হতে সক্ষম হলো বার্সেলোনা। ১৯তম স্থানে থাকা লেভান্তের বিপক্ষে একমাত্র জয়টি এসেছিল ইনজুরি টাইমের গোলে। শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ এই সুযোগে ১৫ পয়েন্টের সুস্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
কাল (১৮ এপ্রিল) ম্যাচ শেষে জাভি বলেছেন, ‘আমাদের অবশ্যই নিজেদের সমালোচনা করতে হবে। একে অপরের দিকে তাকিয়ে ভুলগুলো ধরিয়ে দিতে হবে। আমাদের অবশ্যই এর থেকে ভাল কিছু করার সক্ষমতা আছে। ঘরের মাঠে আমাদের আরো বেশী নিজেদের প্রমানের সুযোগ ছিল। এই ম্যাচটিতে আমরা কোনদিক থেকে ভাল খেলতে পারিনি, যার ফল পেয়েছি।’বার্সেলোনার কাছ থেকে তিন পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়ে কাডিজ রেলিগেশন জোন থেকে উপরে উঠে টেবিলের ১৬তম স্থানে অবস্থান করছে। তলানির তিনটি দলের থেকে তারা এই মুহূর্তে দুই পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার ফ্র্যাংকফুর্টের কাছে পরাজয়টি ছিল সত্যিকার অর্থেই বার্সেলোনার জন্য দারুন হতাশার। ক্যাম্প ন্যুতে ঐ ম্যাচে উপস্থিত প্রায় ২০ হাজার এ্যাওয়ে সমর্থকদের কাছে স্বাগতিকদের লজ্জায় পড়তে হয়েছে। শনিবার ঐ ম্যাচের পর জাভি মন্তব্য করেছিলেন ‘দেখে মনে হচ্ছে বার্সেলোনা নিজের ঘরেই ডাকাতি করেছে।’এই পরাজয়ের পর ক্লাবের অন্যতম জনপ্রিয় একটি ফ্যান গ্রুপ প্রতিবাদ স্বরুপ কাডিজের বিপক্ষে ম্যাচটি বয়কট করেছে। জাভি বলেন, আমাদের প্রত্যেককেই প্রয়োজন আছে। এই মুহূর্তে অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় আমাদের আরো বেশী একত্রিত থাকতে হবে।’
গত বছর নভেম্বরে সঙ্কটময় মুহূর্তে দলের দায়িত্ব নেবার পর এই প্রথম জাভিকেও বেশ বিচলিত মনে হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মিশন থেকে শেষ পর্যন্ত ছিটকে পড়লে তাতে অবাক হবার কিছুই থাকবে না। মৌসুমের শুরুতেই ক্লাবের আর্থিক ক্ষতি ছিল প্রায় এক বিলিয়ন ইউরোর বেশী। এই অবস্থায় ক্লাবকে টেনে তোলা মোটেই সহজ কাজ ছিলনা।
বিরতির আগেই কাডিজ এগিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু পেরেজের শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ওসমানে ডেম্বেলে বার্সেলোনার জন্য সবচেয়ে সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু তার শট সরাসরি কাডিজ গোলরক্ষক জেরেমিয়াস লেডেসমার হাতে ধরা পড়ে। কাডিজ অবশ্য একের পর এক আক্রমন চালাতে থাকে।
তারই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর দুই মিনিটের মধ্যে তারা লিড পায়। মধ্যমাঠে বলের নিয়ন্ত্রন হারান জোর্দি আলবা। এই সুযোগে এ্যালেক্সের ক্রসে সোবরিনোর হেডে পেরেজ মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগানকে পরাস্ত করলে এগিয়ে যায় কাডিজ। ইভান আলেহোর পুল-ব্যাক থেকে এ্যালেক্স গোল করতে পারলে বার্সেলোনার আর কোন আশাই থাকতো নায়। বদলী হিসেবে মাঠে নামা লুক ডি জংয়ের একটি হেড সরাসরি লেডেসমার হাতে জমা পড়ে।
ইবাংলা/ এসআর / ১৯ এপ্রিল,২০২২