রমজান আর ঈদকে ঘিরে চাহিদা বাড়ে দইয়ের আর গরমকালে তো কথাই নেই। এই সুযোগে বেশি লাভের আশায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী, কাপড়ের রং আর রাসায়নিক মিশিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করছে দই, মিষ্টি ও বোরহানি। চিকিৎসকরা বলছেন, সারাদিন রোজা রেখে রাসায়নিক মিশ্রিত খাবার খেয়ে পেটের অসুখসহ নানান জটিল রোগে ভুগছেন সাধারণ মানুষ।
নেই কোনো অনুমতি, তাই নেই পরিচ্ছন্নতা কিংবা সচেতনতার বালাই। কব্জি পর্যন্ত হাত ডুবিয়ে বোতলে ভরা হচ্ছে ঘরে বানানো বোরহানি। সহজেই যা পৌঁছে যাচ্ছে দোকান থেকে ইফতারির টেবিলে।গরমে ঘেমে নেয়ে একাকার, সে অবস্থাতেই গোলানো হচ্ছে বোরহানি; যাতে মেশানো হচ্ছে ছাতা পড়া টক দই।খাদ্য প্রস্তুতকারী একজন বলেন, বোরহানি বানাচ্ছি- টক দই, পুদিনা পাতা, বিট লবণ, গোলমরিচ, কাচামরিচ দিয়ে।
একটু পাশেই তৈরি হচ্ছে মিষ্টি দই। বাহারি চেহারা দিতে এতে মেশানো হচ্ছে শিল্প কারখানায় ব্যবহার করা রং।ওই খাদ্য প্রস্তুতকারী জানান, আমাদের খাবার রং বলে দেয়। আমরা দইয়ে মেশাই। আমরা এত কিছু জানি না।আরেকজন বলেন, এখানে মিষ্টি, দই, ছানা ও বোরহানি বানায়।অপরিচ্ছন্ন খাবারে পানিবাহিত রোগ সহজে ছড়াচ্ছে। চিকিৎসকরা জানান, সারাদিন রোজা রেখে রাসায়নিকে বানানো খাবার স্বাস্থ্য ঝুঁকি আরও বাড়াচ্ছে।
এনআইডিসিএইচের মেডিসিন ও চেস্ট বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক ডা. জিয়াউল করিম বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যাল যদি কেউ খায়, তার ক্যানসার হতে পারে। এই কেমিক্যাল দইয়ে ব্যবহার করার উপাদান নয়। দামে কম এবং সহজলভ্য হওয়ায় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা না করে এ কাজগুলো করে। এটা মোটেও উচিত না। এতে ক্যানসার হতে পারে। এমনকি ডায়রিয়া হতে পারে।নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের দাবি, জনবল সংকটে সবদিকে নজর দিতে পারেন না তারা।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি) মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ বলেন, জনগণকে নিরাপদ খাদ্য গ্রহণে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। জনগণ যত দ্রুত নিরাপদ বা পুষ্টিকর খাদ্যের চাহিদা তৈরি করবে, ততই বাজারে নিরাপদ এবং পুষ্টিকর খাদ্যের সরবরাহ বাড়বে।অনুমোদনহীন অস্বাস্থ্যকর কারখানার খোঁজ পেলে তা প্রশাসনকে জানানোর আহ্বান নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের।
ইবাংলা / জেএন / ২৬ এপ্রিল, ২০২২