বরগুনার ভূমি ও গৃহহীনরা জমি ও নির্মিত পাকা ঘর পেয়ে খুুশি

বরগুনা প্রতিনিধি

দারিদ্র্যের চাবুকে জর্জরিতদের আলোর দিকে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের দেয়া হয়েছে এক টুকরো জমি ও নির্মিত একটি পাকা ঘরও। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় জমিসহ আধাপাকা ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন বরগুনার বেতাগীর উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক ভূমিহীন ও গৃহহীন দরিদ্র মানুষগুলো।

ভূমিহীন ও ঘরহীন পরিবারগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ উপহারের ঘরে আশ্রয় পেয়ে এখন সবজি উৎপাদন, নদীতে মৎস্য আহরণ, হাঁস-মুরগি পালনসহ ক্ষেত খামারে কাজ করে নিশ্চিন্তে উপার্জন করে স্বচ্ছন্দে দিনানিপাত করছেন। উপহারের ঘরে আশ্রয় পাওয়া পরিবারগুলো জানান, তারা কোনো দিন ভাবেননি মাথা গোঁজার মতো নিজেদের এমন একটি ঠিকানা হবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দ্যোগ ও স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে দিন রাত পরিশ্রম করেছেন বরগুনার বেতাগী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো: সুহৃদ সালেহীন। অপরদিকে বেতাগী উপজেলা প্রশাসনকে সাজাতে যিনি সার্বক্ষনিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এদের মধ্যে একজন মো: সুহৃদ সালেহীন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন সারাদেশে সৎ,আদর্শবান ,ভদ্র,মার্জিত কর্মকর্তাদের উপজেলায় ইউএনও হিসাবে দায়িত্ব দিচ্ছেন। সে হিসেবে বলা যায়, বেতাগী উপজেলাবাসীর আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে ইউএনও মো: সুহৃদ সালেহীনকে পেয়েছেন। যোগদানের পর আজ পর্যন্ত কোন অনিয়ম তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। তার বিরুদ্ধে নেই কোন আনিত অভিযোগ।

সদ্ম নামে (বিধবা ও পঙ্গু ঝর্ণা) বেগম বলেন, তিনবছর পূর্বে স্বামীর মৃত্যুর পরে একমাত্র প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে কোথাও যাওয়ার জায়গা ছিল না। মানুষের বাড়িতে গৃহস্থালির কাজ করে অতিকষ্টে জীবন যাপন করেছি। কবির ফরাজি ও কোহিনুর বেগম বলেন, বিনামূল্যে ঘরসহ জমি পেয়ে আমরা অনেক খুশি। বেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের অন্ধ কেরামত আলী (৬৭) ও বারেকের স্ত্রী মল্লিকা আধাপাকা ঘর পেয়ে যেন আকাশের চাঁদ পেয়েছেন।

১৯৭০ সালে প্রলয়ঙ্কারী বন্যা ও জলচ্ছ্বাসে তার পরিবারের অনেকেই মারা যান। নদীগর্ভে তাদের জমিজমাও বিলীন হয়ে যায়। এতিম ও অসহায় কেরামত অন্যের বাড়িতে কাজকর্ম করে পেট চালাতেন। পরে তিনি মল্লিকা বিবিকে বিয়ে করে বেতাগীর মানুষের বাড়িতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করে জীবনযাপন করেন।

তিনি বলেন, তার দুই ছেলে মেয়ের মধ্যে ১০বছর বয়সে তার মেয়েটি মারা যায়। জ্বরে অসুস্থ্য হয়ে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই অন্ধ হয়ে যান বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। মল্লিকা বিবি আরো বলেন, ছেলে দিনমজুরের কাজ করে অতিকষ্টে আমাদের নিয়ে অন্যের জমিতে বসবাস করে। দারিদ্রের চাবুকে জর্জরিত স্বামী স্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘরসহ দুই শতাংশ জমি পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছেন। উপার্জন বাড়াতে ছেলে হাঁস-মুরগি পালনের পাশাপাশি শাকসবজি চাষ করে সংসারে বাড়তি আয় করছেন বলেও জানান তারা।

এ দম্পতির মতো একই এলাকায় অনেক পরিবারকে মুজিব বর্ষের ঘর প্রদান করা হয়। উপহারের এ প্রকল্পের আওতায় প্রত্যেকটি পরিবারের জন্য আধাপাকা ঘরে থাকছে ২টি থাকার কক্ষ, ১টি রান্নাঘর, ১টি টয়লেট ও ১টি বারান্দা এবং প্রতিটিঘরে বিদ্যুৎ সহ পাঁচটি ঘর মিলে পাচ্ছে একটি করে গভীর নলকূপ।

এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: সুহৃদ সালেহীন বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ভূমিহীন ও গৃহহীন দারিদ্র্য পরিবারগুলোর জন্য ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে ১২ টি হস্তান্তর করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৯৯ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বিনামূল্যে আধাপাকা ঘর হস্তান্তর করা হয়।এ ছাড়া তৃতীয় পর্যায়ে ৫০টি ঘরের নির্মাণকাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছেন ।

ইবাংলা/ এসআর / ০৬ মে, ২০২২

Contact Us