বসতি নেই, নেই এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো পাড়া বা বসতি। অথচ সেখানে ৫০ গজের মধ্যেই পাশাপাশি একই দিকে দুটি ইট বিছানো সড়ক এইচবিবি) নির্মাণ করা হয়েছে। থানচি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার
(পিআও) কার্যালয়ের তত্ত¡াবধানে সড়ক দুটি এক কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ সম্পন্ন হয়।
কিন্তু ওই সড়ক পথে এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো মানুষের বসতি বা পাড়া না থাকায় চলাচল হয় না বললেই চলে। ফলে জনমানবহীন এলাকায় সরকারের বিপুল টাকা ব্যয়ে সড়ক নির্মাণ করলেও রাস্তায় এখন আগাছা- জঙ্গলে ভরা। একটি সড়কে কিছু ইট বিছানো রাস্তা দেখা গেলে অন্য সড়কটি বোঝার কোনো উপায় নেই যে, এখানে ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়ক রয়েছে। সম্প্রতি সরেজমিন থানচি উপজেলায় বলিপাড়া ইউনিয়নের প্রধান সড়কের পাশেই এমন সড়কের দেখা মিলেছে।
বান্দরবান-থানচি প্রধান সড়কের থানচি উপজেলার বলিপাড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেনরোয়া পাড়া হচ্ছে ক্রাক্ষ্যংপাড়া পর্যন্ত এলাকায় ১০০০ মিটার (এক কিলোমিটার) এলাকায় মাত্র ৫০ গজের মধ্যে পাশাপাশি একই বিভাগ (পিআইও) সড়ক দুটি নির্মাণ করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি সড়কে ৬৫ লাখ টাকা করে মোট এক কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়ক দুটি বাস্তবায়ন করে থানচি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়। তবে সরেজমিন দেখা যায়, এইচবিবি
হেরিং বোন বন্ড) সড়কটি (ইট বিছানো রাস্তা) রাস্তা দীর্ঘদিন কোনো মানুষের চলাচল না থাকায় ইটের ফাঁকে ফাকে আগাছ-জঙ্গলে ভরে গেছে। বোঝার কোনো উপায় নেই যে, এখানে তিন বছর আগে সরকারের এক কোটি ৩০ লাখ
টাকা ব্যয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পিআইও কার্যালয়ের তত্ত¡াবধানে ২০১৯- ২০ অথ বছরে রাস্তা দুটি ৬৫ লাখ টাকা করে মোট এক কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। সূত্র জানায়, এক কিলোমিটার রাস্তা হলে প্রকল্পে বলা হয় ১০০০ মিটার দীর্ঘ রাস্তা। সরেজমিন সেখানে গিয়ে প্রায় ২০০ মিটার পথ পর্যন্ত গেলেও কোনো বসতি বা পাড়া দেখা যায়নি। নেই কোনো মানুষের অবস্থান বা চলাচল। সেখানে কিছু আমবাগান দেখা গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাউ মারমার আমলে সড়ক দুটি নির্মাণ করা হয়। সড়ক দুটির নাম মেনরোয়া পাড়া হতে ক্রাক্ষ্যংপাড়া পর্যন্ত বলা হলেও ক্রাক্ষ্যংপাড়া প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে। এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো বসতি না থাকলেও কেন রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে আশেপাশে কয়েকজন এ বিষয়ে কোনো কিছু জানাতে পারেনি। তবে ওই সড়কের পাশে কাজ করতে যাওয়া স্থানীয় বাসিন্দা ৪৬ বছর বয়সী রুমরাও ¤্রাে জানান, তিনি ওই এলাকায়।
কিন্তু এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো বসতি নেই। প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে ৬টি বসত ঘর রয়েছে। একই এলাকামুখি (ক্রাক্ষ্যংপাড়া) কোনো অল্প দূরত্বে দুটি রাস্তা করা হয়েছে তিনি নিজেও বিস্মিত। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উক্ত সড়ক পথে এলাকার প্রভাবশালী মালিরাম ত্রিপুরা, জিয়া অং মারমা এবং চসাথোয়াই মারমা নামে তিনজনের আম বাগান রয়েছে ওই এলাকায়।
অভিযোগ রয়েছে আম বাগানে চলাচলের জন্য সরকারি বিপুল অর্থ ব্যয় করে অল্প দূরত্বে একটি প্রতিষ্ঠান দুটি সড়ক কি করে নির্মাণ করা হলো! তবে এ ব্যাপারে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাউ মারমার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইহ্লা অং মারমা বলেন, সড়ক দুটি তাঁর সময়ে নির্মাণ না হওয়ায় তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
সড়ক দুটির ঠিকাদার হলেন থোয়াইপ্রæ অং মারমা ও মো. মামুন। এরমধ্যে এক ঠিকাদার বলেন, তাঁরা টেন্ডারের মাধ্যমে উক্ত কাজ করেছেন। এ ব্যাপারে বর্তমান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুজন মিয়া গতকাল শুক্রবার বলেন, এ বিষয়েয় তিনি কিছুই জানেন না। তিনি দু মাস আগে থানচি উপজেলার দায়িত্বে এসেছেন। খবর নিয়ে পরে বিস্তারিত জানানো সম্ভব।
ইবাংলা / জেএন /২১ মে,২০২২