তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সিলেটসহ দেশের কয়েকটি বন্যাপ্লাবিত এলাকায় প্রশাসনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছে এবং তারা ছাড়া অন্য কোনো দলের নেতাকর্মীরা বন্যার্তদের পাশে নেই।’
তিনি বিকেলে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার এড. নুরুচ্ছফা তালুকদার অডিটরিয়ামে উপজেলার স্কুল ও কলেজ শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকায় বসে বসে কেউ টক শোতে বক্তৃতা দিচ্ছেন আর ঢাকায় নয়াপল্টনে কিংবা প্রেসক্লাবের সামনে সরকারের বিরুদ্ধে অনেকে বিষোদগার করছেন, কিন্তু বন্যার্তদের সাহায্য করার জন্য কেউ ঝাঁপিয়ে পড়েনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।’
পদ্মা সেতু নিয়ে তিনি বলেন, ‘কেউ ভাবেনি কখনো নিজের টাকায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পারবে। পরে যখন আমরা পদ্মাসেতু নির্মাণ শুরু করে দিয়েছি, বিশ্বব্যাংক কানাডার আদালতে হেরে যায়। কানাডার আদালতে আমাদের সরকার যায়নি, বিশ্বব্যাংকই গেছে এবং তারাই হেরে গেছে। তাদের অভিযোগ যে ভূয়া, মনগড়া এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিলো, কানাডার আদালতে সেটি প্রমাণিত হয়েছে এবং আদালত রায় দিয়েছে-পদ্মা সেতু নিয়ে কোন দুর্নীতি হয়নি, দুর্নীতির চেষ্টাও হয়নি।’
ড. হাছান বলেন, এরপর বিশ্বব্যাংক প্রস্তাব দিয়েছিলো পদ্মা সেতুতে তারা অর্থায়ন করতে চায়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন আমার বিশ্বব্যাংকের অর্থ দরকার নাই। আজকে তিনি বিশ্বমোড়লদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিয়েছেন নিজের টাকায় পদ্মাসেতু করে।
‘আমাদের দেশের একটি বড় পত্রিকায় হেডিং হয়েছিলো পদ্মাসেতু আর হচ্ছে না, আমাদের দেশের কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী বলেছিল এই সরকারের আমলে আর পদ্মাসেতু হচ্ছে না’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ড. ইউনুসও এমনই বলেছিলেন, আমি উনার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখে বলতে চাই, সত্যটা হচ্ছে বিশ্বব্যাংক যাতে পদ্মা সেতু থেকে সরে যায়, সেজন্য এই ষড়যন্ত্রের পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। একইভাবে টিআইবি, সিপিডিসহ আরো অনেকে বলেছিল পদ্মা সেতু হবে না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী দেখিয়ে দিয়েছেন, নিজের টাকায় পদ্মা সেতু হয়।’
এসময় শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে- শুধুমাত্র বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমেই দেশকে উন্নত করা নয়, নতুন প্রজন্মের মাঝে মেধা, মূল্যবোধ দেশাত্ববোধ, মমত্ববোধের সমন্বয় ঘটিয়ে উন্নত মানবিক রাষ্ট্র গড়া। সেজন্য শিক্ষার্থীদেরকে পাঠদানের পাশাপাশি মূল্যবোধ, দেশাত্ববোধ, মমত্ববোধ এবং একইসাথে গুরুজনের প্রতি দায়িত্ববোধ শেখাবার অনুরোধ জানাই।’
রাঙ্গুনিয়াবাসীর প্রতি তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত সাড়ে ১৩ বছর ধরে রাঙ্গুনিয়ার সবার জন্য আমার দরজা খোলা রেখেছি। কে আমাকে ভোট দিয়েছে কিংবা দেয়নি, তা কখনো দেখিনি। কে আওয়ামী লীগ করেছে বা করেনি তা কখনো জিজ্ঞেস করিনি। আমার বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন করেছে এমন অনেকের চাকুরি আমার হাত ধরে হয়েছে। আমি চেষ্টা করেছি সব মানুষের কথা রাখতে। তাই আপনাদের দরজাও আমার জন্য খোলা রাখবেন।’
রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মুহাম্মদ আবদুল মাবুদের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির প্রাক্তন সভাপতি অধ্যাপক ড. সেকান্দার চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ একেএম সুজা উদ্দিন প্রমুখ।
ইবাংলা / জেএন / ১৮ জুন,২০২২