অনুষ্ঠিত হল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

দীর্ঘ এক বছর পর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হল। কাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত প্রায় ৫ ঘণ্টাব্যাপি এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সভাপতিমণ্ডলীর ১০ সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ৩ জন এবং ১২ জন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও সব সাংগঠনিক সম্পাদকসহ মোট ৫০ জন আওয়ামী লীগ নেতা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

সকাল ১০টায় শুরু হওয়া কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সারা দেশের সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করা হয়।

কার্যনির্বাহী কমিটির সভার আয়োজন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনার কারণে এই বৈঠকটি করা সম্ভব হয়নি। করোনা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং টিকা চলছে তাই এই সভার আয়োজন করা হয়।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের জন্য কাজ করেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। আর আওয়ামী ক্ষমতায় আছে বলেই দেশে উন্নতি হচ্ছে করোনা মোকাবিলা সম্ভব হয়েছে। এবারে করোনার সময় আমাদের দলের লোকেরা যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তা আর কোনো দল সেভাবে জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি।’ বৈঠকে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘সরকার ভূমিহীনদের জন্য দেড় লক্ষ ঘর তৈরি করেছে যার মাঝে ৩০০ ঘর কিছু দুষ্কৃতিকারীরা ভেঙ্গেছে। আর শুধু ৯টি ঘরে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। কিন্তু, পুরো ঘটনা বা সত্য না জেনেই যারা সংবাদ প্রচার করেছ গণমাধ্যম।’

বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, সভার মেইন ফোকাসটা ছিল সাংগঠনিক বিষয় এবং পরবর্তি (জাতীয়) নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির লক্ষ্যে আমাদের অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন এবং বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টগুলোকে সেমিনারের মাধ্যমে যেমন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য বিষয়গুলো আপডেট (সংস্কার) করার জন্য উপ-কমিটিগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সভায় উপ-কমিটির কয়েকজন সদস্যের বক্তব্যও শুনেছেন নেত্রী।

‌‘তবে সভায় তিনি (শেখ হাসিনা) আটটি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আমাদের আট অর্গানাইজেশন সেক্রেটারির বক্তব্য শুনেছেন। এরমধ্যে চট্রগ্রামের অর্গানাইজেশন সেক্রেটারি দেশে নাই, তার জায়গায় মাহবুবুল-আলম-হানিফ রিপোর্ট উত্থাপণ করেছেন। বাকীরা উপস্থিত ছিলেন তারা একেবারে নিজেদের লিখিত বক্তব্য শুনিয়েছেন। তারা তাদের এলাকার একদম ইউনিয়ন ওয়ার্ড পর্যন্ত বিস্তারিত রিপোর্ট শুনিয়েছেন নেত্রীর কাছে। নেত্রী তাদের বক্তব্য শুনেছেন। যেগুলো ইমিডিয়েটলি সমাধান করা দরকার সেগুলোর বিষয়ে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া কিছু ছোট কলহ ও বিবাদ আছে সেগুলোও মিমাংসা করার ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, পাবনায় পৌরসভার নির্বাচন নিয়ে সেখানে অনেক বিদ্রোহ করেছিল। পৌর ও সদর মিলে ২০ জনের মতো তারা ক্ষমা চেয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন নেত্রী বরাবর। তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি এটাও বলেছেন, যারা দলের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন বিভিন্ন জায়গায় তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিকভাবে শান্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। কাউকে কোন ব্যাপারে ছাড় দেয়া যাবে না।

সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও চক্রান্ত চলছে। যতই নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে ততই অপপ্রচারের মাত্রা বাড়ছে। সভায় নেত্রী বলেছেন, এসব অপপ্রচারের জবাব দিতে হবে। চক্রান্তমূলক তৎপরতার বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা সারাদেশে ঘুরে ঘুরে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করছেন। এ ব্যাপারটিও সভায় আলোচনা হয়েছে। এজন্য নেত্রী সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন এবং সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

ইবাংলা / ৯ সেপ্টেম্বর

 

 

Contact Us