‘রাসায়নিক দ্রব্যাদির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ, আমদানিকরণ, পরিবহন, বিপণন সম্পর্কে সবাইকে জানতে হবে। মাধ্যমিক থেকে পাঠ্যপুস্তকে রাসায়নিক দ্রব্যের ধরণ সম্পর্কে অধ্যায় যুক্ত করতে হবে। ব্যবহারজনিত ত্রুটির কারণে সৃষ্ট নিকট অতীতের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডসমূহ থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রসায়ন বিভাগ ও বাংলাদেশ স্টেম ফাউন্ডেশন জবি ইউনিটের যৌথ আয়োজনে ‘Chemical Management and Safety Measures: Recent Incidents’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে আমরা নড়েচড়ে বসি, তখন আইনের ব্যবহার শুরু হয়। ঘটনা না ঘটলে আমাদের টনক নড়ে না। রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন আইন আছে, এগুলোর প্রয়োগ করতে হবে।আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা সবসময় এসবের ব্যবস্থাও নেন না।
আবার আমাদের সচেতনতারও অভাব আছে। বিভিন্ন দুর্ঘটনার পর সরকার সাভারে ট্যানারি কারখানাগুলো স্থানান্তর করতে চেয়েছিল, কিন্তু ব্যবসায়ীদের রাজি করানো যায়নি। দেশের স্বার্থে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার ও সচেতনতা বিষয়ে মানুষকে জানাতে হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এসব আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করবে।
তিনি আরও বলেন, সারা বাংলাদেশে আমাদের রসায়ন বিভাগ প্রথম স্থান অর্জন করেছে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও এই অর্জনে আমরা গর্বিত। আমরা এই ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।
বাংলাদেশ স্টেম ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আল নাকিব চৌধুরী বলেন, রাসায়নিক কারখানায় শিশুদের ব্যবহার করা হয়। এটা শিশুশ্রম হিসেবে নিন্দনীয় এবং ভয়াবহ। রাসায়নিক কারখানায় কাজ করা অনেকেই এই ধরণ ও ব্যবহার সম্পর্কে জানেন না।
রাসায়নিক দ্রব্যের ভয়াবহতা আমরা নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডে দেখেছি। সীতাকুণ্ডের ঘটনার জন্য রাসায়নিক দ্রব্য দায়ী না হলেও কন্টেইনার ভর্তি রাসায়নিক দ্রব্য সেখানে বেহাল অবস্থায় পড়ে ছিলো। রাসায়নিক দ্রব্য সম্পর্কে জানা সকলের মৌলিক অধিকার। তাই মাধ্যমিক থেকে পাঠ্যপুস্তকে এবিষয়ে পড়াতে হবে। সরকারের পলিসি লেভেলেও আমরা এবিষয়ে দাবি জানিয়েছি।
বাংলাদেশ স্টেম ফাউন্ডেশন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. একেএম লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাফিস আহমদের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী সাখাওয়াত হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য, বিশিষ্ট রসায়নবিদ অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল হক এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কেমিকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ইয়াসির আরাফাত খান ও বাংলাদেশ বিস্ফোরক বিভাগের উপ-প্রধান পরিদর্শন ড. মো. আব্দুল হান্নান প্রমুখ।
ইবাংলা / জেএন / ০১ জুলাই,২০২২