দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হচ্ছে। করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় হাসপাতালে অস্বাভাবিক চাপ তৈরি হয়েছে। বেশিরভাগ জেলায় হাসপাতালে আইসিইউ না থাকায় এবং বেডের সংখ্যা অনেক কম থাকায় গুরুতর রোগীরা বিভাগীয় শহরের হাসপাতালে ছুটছেন। এতে বিভাগীয় শহরের হাসপাতালগুলো রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। খবর বিবিসি বাংলার।
বিভাগীয় শহর খুলনায় কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য ১০০ বেডের একটি হাসপাতাল করা হয়েছিল। সাতক্ষীরা থেকে শুরু করে বাগেরহাট অন্যদিকে কুষ্টিয়া, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, ঝিনাইদহ, নড়াইল, গোপালগঞ্জ ও পিরোজপুর থেকে কোভিড রোগীরা যাচ্ছেন খুলনার সেই হাসপাতালে। ফলে গুরুতর নয় এমন রোগীদের ঐ হাসপাতালে ভর্তি হতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
হাসপাতালটির মুখপাত্র ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সুহাশরঞ্জন হালদার বলেন, খুলনা ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালটি ১০০ শয্যার। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় আমরা ৩০ শয্যা বাড়িয়ে সেবা দিচ্ছিলাম। তাতেও এখন আর স্থান সংকুলান হচ্ছে না। গুরুতর রোগীর সংখ্যাও অনেক বেশি। সেজন্য বেড না থাকায় অনেককে ফ্লোরে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘কোভিড রোগীর চিকিৎসা বিশেষ ধরনের হওয়ার কারণে কখনও কখনও তাদের হাইফ্লো অক্সিজেন বা ভেন্টিলেটার দেয়ার প্রয়োজন হয়। সে কারণে এ ধরনের রোগীদের ফ্লোরে রেখে চিকিৎসা সেবা দেয়া মোটেই সম্ভব নয়।’
অপরদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালেও প্রতিদিনই রোগীর চাপ বাড়ছে। গত একদিনে ঐ হাসপাতালে ১৫ জন কোভিড রোগীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আশেপাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর ছাড়াও পাবনা থেকেও কোভিড রোগী চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন রাজশাহীর ঐ হাসপাতালে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, ‘হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইনসহ বেড আছে ২৭১টা। এর বাইরে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর দিয়ে ১৮৩টা বেড লাগাতে পারবো। আর আইসিইউ বেড আছে ১৮টা। সেগুলোতে রোগী আছে। আইসিইউ যাদের লাগছে, তাদের সবাইকে দিতে পারছেন না। কিন্তু যাদের অক্সিজেন বেশি দরকার হচ্ছে, হাইফ্লো নেজাল ক্যানালা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন।’
অপরদিকে সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই দফায় মোট ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন দেয়ার পর সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘রোগীর সংখ্যা যে বাড়ছে, সেই বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর হাসপাতালে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আইসিইউর শয্যা সংখ্যা কোথাও আনলিমিটেড থাকা সম্ভব না বা থাকে না। কিন্তু রোগীদের দরকার অক্সিজেন।
এজন্য অক্সিজেন জেনারেটর ইউনিট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে আছে। পুরোনো জেলা শহরের হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রত্যেকদিনই আসলে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। যেখানে শয্যা বাড়ানো প্রয়োজন, সেখানে বাড়বে। সেভাবেই চলছে এখন পর্যন্ত।’