নড়াইলের কলোড়ায় বয়স্ক ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!

নড়াইল প্রতিনিধিঃ

নড়াইল সদর উপজেলার ৮নং কলোড়া ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের বয়স্ক ভাতা টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। রোববার (১৭ জুলাই) দুপুরের দিকে নড়াইল শহরের রূপগঞ্জ এলাকায় সংবাদ সম্মেলনে নেতৃত্ব দেন কলোড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহারিয়ার আলম মুক্ত ও সাধারণ সম্পাদক উৎপল বিশ্বাস।

সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্থদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় ২০২১-২২ অর্থ বছরে অসহায় হতদরিদ্রদের বয়স্ক ভাতা হিসাবে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক তালিকাভুক্ত করে বিকাশ এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৬ হাজার টাকা করে দেয়ার কথা। এরই ধারাবাহিকতায় কলোড়া ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে বাছাইকৃত নতুন ১৭০ ও পূর্বের ১২৯ জন, সর্বমোট ২৯৯ জনের তালিকা নিবন্ধিত হয়ে আসে।

এর মধ্যে প্রায় ১৫০ জনের বয়স্ক ভাতার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যাদের বয়স্ক ভাতার টাকা আতœসৎ করা হয়েছে, তারা হলেন- আগদিয়ারচর গ্রামের অরবিন্দ সমাদ্দার (৬৫), যার বিকাশ এ্যাকাউন্ট নং-০১৮৬১-৫৯৬৬৪৮।

একই গ্রামের গৌর রায় (৭৫), যার বিকাশ এ্যাকাউন্ট নং-০১৮৬৭-৩৮৭৭১৪, হিমেল মালাকারের স্ত্রী হিরামতি মালাকার (৭০), যার বিকাশ এ্যাকাউন্ট নং-০১৮৬৭-৩৮৮২৫৪, প্রভাষ কুমার বিশ্বাস (৬৮), যার বিকাশ এ্যাকাউন্ট নং ০১৮৬১-৫৯৬৬৭৯, সহ আরোও অনেকের বিকাশ এ্যাকাউন্ট নাম্বার খোলা হয়েছে,যাদের সকলের এ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড নাম্বার একই।

আরও পড়ুন…ফুলবাড়ীতে ফেন্সিডিলসহ এক যুবক আটক

আর এই বিকাশ এ্যাকাউন্ট খোলার কাজের দায়িত্ব পান কলোড়া ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার মঞ্জিরা বেগমের ছেলে তুহিন। উপরোক্ত ভুক্তভোগীরা জানান, মহিলা মেম্বার মঞ্জিরা বেগমের ছেলে তুহিন গত ১২ জুলাই তাদের সকলের নতুন বিকাশ এ্যাকাউন্টের সিমকার্ড দিয়ে দেন। সিমকার্ড দেয়ার সময় বলে দেন আপনাদের সকলের বিকাশ এ্যাকাউন্টে ৬ হাজার টাকা করে পেয়ে যাবেন। তার কথায় সবাই আশ্বস্ত হয়ে কিছু দিন অপেক্ষা করেন।

এরপর নিবন্ধিত বিকাশ এ্যাকাউন্টের সিমকার্ড নিয়ে বিকাশ এজেন্টের কাছে গিয়ে জানতে পারেন এ্যাকাউন্টে টাকা এসেছিল, তা-তুলে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর দোকানদার তুহিনের কাছে গেলে সে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। এবিষয়ে ভুক্তভোগিরা চেয়ারম্যান আশিষ বিশ্বাসের নিকট মৌখিক ভাবে অভিযোগ দিলেও তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি।

মহিলা মেম্বর মঞ্জিরা বেগমের ছেলে আগদিয়া এলাকার দোকানদার তুহিনের নিকট জানতে চাইলে, তিনি বলেন লোকজন গেলে তাদের নতুন বিকাশ এ্যাকাউন্ট খোলার কাজে সহায়তা করেছেন। কে বা কারা টাকা তুলে নিয়ে গেছে তা তিনি জানেন না।

অভিযোগের বিষয়ে আশিষ বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ অভিযোগ সত্য নয়। যারা টাকা পায়নি বলে অভিযোগ করেছেন, তাদের কারো বয়স্ক ভাতা পাওয়ার বয়স হয়নি। তাদের নাম তালিকায় নেই। ষড়যন্ত্রমুলক ভাবে কলোড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বহিস্কৃত সভাপতি ও সম্পাদক কুচক্রীদের নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেছে।

নড়াইল সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা উত্তম কুমার সরকার বলেন,ক্ষতিগ্রস্থদের কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সচেতন মহলের দাবি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বয়স্ক ভাতার টাকা আতœসাতকারি চক্রের বিরূদ্ধে কঠোর শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়া হোক।

ইবাংলা/জেএন/১৮জুলাই,২০২২

Contact Us