চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে এডিস মশা নির্মূলে সাতদিনের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শুরু করেছে সিটি কর্পোরেশন। নগরীর নাসিরাবাদ আবাসিক এলাকার পার্কের সামনে ওষুধ ছিটিয়ে মশক নিধন ক্র্যাশ প্রোগ্রামের উদ্বোধন করেন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
মেয়র এ সময় বলেন, সমন্বিত মশক নিধন ব্যবস্থাপনার আওতায় প্রথম পদক্ষেপটিই হচ্ছে পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা। চার পাশ্বে যে সব জায়গায় এডিস মশা জন্মায়, সেসব জায়গায় যাতে এডিস মশা জন্মাতে না পারে সে ব্যাপারে সকলকে সচেতন হতে হবে। আবহাওয়াগত কারণে নগরীতে এখন মশার উপদ্রব বেড়েছে।
আরও পড়ুন…নোয়াখালীতে মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১,আহত ২
এই ক্র্যাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে নগরীর ৪১ টি ওয়ার্ডে ৭ দিনব্যাপী এই ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চলবে। তিনি ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশা নিন্ত্রয়ণে নগরীরবাসীর সচেতনতার ওপর জোর দিয়ে বলেন, এডিস মশা বাসাবাড়ির স্বচ্ছ পানিতে জন্মায়, পানি জমিয়ে রাখা যাবে না।
দেখা গেছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের বেশিরভাগই উচ্চবিত্ত বা উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণীর। কারণ এডিস মশার জীবনাচরণ নালা, নর্দমায় জন্ম হওয়া কিউলেস মশার তুলনায় অন্য রকম। বৃষ্টি হলেই জমে থাকা পানিতে এই মশা সহজে বিস্তার লাভ করে। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন কেবল বাড়ির বাইরের মশা মারতে পারে, তাই আমাদের নিজ নিজ বাসা-বাড়ির আঙ্গিনা পরিষ্কার রাখতে হবে।
আরও পড়ুন…দক্ষিণ-চীন সাগরের বার্ষিক আলোচনার উদ্বোধনীতে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মেয়র আরো বলেন, করোনা মহামারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অদৃশ্য জীবাণুর সাথে লড়াই যেহেতু করছি তাই ডেঙ্গুর বাহক দৃশ্যমান এডিস মশা নিধন করা সম্ভব। প্রয়োজনে আরো কঠোর অবস্থানে যাওয়া হবে। এডিসের উৎস খুঁজে পেলে দায়ী ব্যক্তিদের জেল জরিমানায় ছাড় দেওয়া হবে না বলে মেয়র হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, বর্জ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপাতি কাউন্সিলর মোবারক আলী, মো. মোরশেদ আলম, হাজী নুরুল হক, হাসান মুরাদ বিপ্লব, আবদুস সালাম মাসুম, মো. শফিউল ইসলাম, সংরক্ষিত কাউন্সিলর জেসমীন পারভিন জেসী,
সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ও মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির সহসভাপতি মাহফুজুল হক চৌধুরী, মো. ইদ্রিস. সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর পারভেজ, মুজিবুর রহমান বাচ্চু ও পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ।
মেয়র আরো বলেন, নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডের ঝোপঝাড় পরিষ্কার ও নালায় যেখানে মশার জন্ম হয় সেখানে ওষুধ ছিটানো হবে। আমাদের যে পরিমাণ মশা ধ্বংসকারী ওষুধ আছে এই ওষুধের সদব্যবহারের মাধ্যমে প্রাপ্তবয়স্ক মশা নিধনের জন্য এডালটিসাইড এবং মশার লার্ভা (ডিম) ধ্বংসের জন্য লার্ভিসাইড ওষুধ ছিটানো হবে।
তিনি ছাদবাগান, এসি, ফ্রিজ, ফুলের টপ, ডাবের খোশা, গাড়ির পরিত্যাক্ত টায়ার, প্লাস্টিক বোতল, ভাঙা বালতিতে যাতে তিনদিনের বেশি পানি জমে না থাকে সে দিকে খেয়াল রাখার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহবান জানান।
আরও পড়ুন…‘দাঁড়িওয়লা একটা আছে না, উল্টো করে ঝুলিয়ে পাছার ছাল তুলে ফেলব’
তিনি বলেন, এডিস মশা যেন বংশবৃদ্ধি করতে না পারে। ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়াসহ সকল মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে এই বিশেষ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের পাশাপাশি মশক নিধন কার্যক্রম চলমান থাকবে। এ ছাড়াও জনসচেতনতা সৃষ্টিতে রেডক্রিসেন্ট ও আরবান ভলানটিয়ারের মাধ্যমে নগরীতে ১ লক্ষ লিফলেট বিতরণ এবং মাইকিং-এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি নগরীতে কেউ ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়া সর্ম্পকিত যে কোন প্রয়োজনে নিকটস্থ চসিক পরিচালিত স্বাস্থ্য কেন্দ্র, হাসপাতালে বা চিকিৎসক ডাক্তার মোহাম্মদ ইমান হোসেন রানার সাথে ০১৮১৭-৭০৬০৫৫ নম্বরে এবং মশক সংক্রান্ত অভিযোগের জন্য মশক নিধন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সাথে ০১৮১২-৬০৩০৬৯ নাম্বারে যোগাযোগ করার আহবান জানান। তিনি স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ, বাসযোগ্য ও পরিচ্ছন্ন শহর গড়তে নগরবাসির সহযোগিতা কামনা করেন।
ইবাংলা/জেএন/২৬ জুলাই,২০২২