‘ভালো কাজের হোটেল’
নাফিজ আলম, ঢাকা
সময়টা ২০০৯ সাল। বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া কয়েকজন তরুণের ভাবনাকে নাড়া দিয়েছিল অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো এক ব্যক্তির গল্প। ২০০৯ সালে বিশেষ কয়েকটি দিনে এ ধরনের আয়োজন হতো। ২০১৯ সাল থেকে প্রতি শুক্রবার করা হয় আয়োজন। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির কারণে লকডাউন শুরু হলে প্রতিদিন একবেলা করে খাবারের আয়োজন করা হয়।
ঢাকার ছয়টি পয়েন্টে এ খাবার বিতরণ করা হয়; কমলাপুর, সদরঘাট, হাতিরঝিল এফডিসি, ধানমন্ডি রবীন্দ্র সরোবর, বনানী কবরস্থান এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশন। এসব জায়গার মধ্যে কমলাপুরে প্রতিদিন সন্ধ্যা বা রাতে খাবার দেওয়া হয়। বাকি চারটি স্থানে সপ্তাহে এক দিন খাবার বিতরণ করা হয়। প্রতিদিন প্রায় ৭শ-৮শ মানুষের জন্য খাবার রান্না হয়।
আরোও পড়ুন……ব্রিটিশ রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যু
খাবার দেওয়ার আগে তাদের নাম, বয়স, কী কী ভালো কাজ করল তা লিখে রাখা হয়। কেউ যদি মিথ্যা কথা বলে তাকেও ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। তাকে বোঝানো হয় সত্য কথা বলাও একটা ভালো কাজ। লিখে রাখা তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে তাদের উৎসাহ দেওয়া হয় ভালো কাজ করার। কী ধরনের ভালো কাজ করতে হয়? অন্ধ বা শিশুকে রাস্তা পারাপারে সহায়তা, রিকশা ভাড়া না নিয়ে অসহায় মানুষকে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া, রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু বিশেষ করে কাচের টুকরো, ইট- পাথর, পিন সরিয়ে ফেলা এবং কাঁধে বোঝা বহন করতে কষ্ট হলে সহায়তা করার মতো অনেক ভালো কাজ করেন অনেকে।
রবি থেকে বৃহস্পতি, খাবারের মেন্যুতে থাকে ডিম-খিচুড়ি। শুক্র ও শনিবারের খাদ্য তালিকায় বিরিয়ানি, পোলাও বা মুরগি তেহারির ব্যবস্থা থাকে। সংগঠনের সদস্যরা নিজেদের চাঁদার টাকায় নিজেরাই বাজার করেন। প্রতিদিন রান্না করে নিজেরাই প্যাকেটে করে পরিবেশন করেন সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে। ইয়ুথ ফর বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠনের সদস্যরাই বর্তমানে এই সাধু উদ্যোগটি চালাচ্ছে।
সংগঠনসূত্রে জানা গেল, এই হোটেল চালুর পেছনে তাদের উদ্দেশ্য দুটি। প্রথমত, ভালো কাজের চর্চায় সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা। আর দ্বিতীয়ত, ক্ষুধার কষ্ট কমিয়ে ক্ষুধামুক্ত এক বাংলাদেশ গড়া।
সংগঠনটির প্রধান স্বেচ্ছাসেবক মোঃআরিফুর রহমান, সিনিয়র স্বেচ্ছাসেবক মোঃজাকির হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক মোঃ সাকিব আল শাওন তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের দশ জন ডেলিগেট মেম্বার এর পাশাপাশি দুইজন রাধূনী, এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন অনেক শুভাকাঙ্খী আছে যাদের অর্থায়নে চলে এই ভালো কাজের হোটেল।
ইবাংলা/আরএস/৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.