দুই পর্বে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারের প্রথম পর্বে মূল প্রবন্ধের ওপর উন্মুক্ত আলোচনার পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের ৫০ বছরের পথচলার তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। ঢাকার গুলশানে জারা কনভেশন সেন্টারে ‘ঢাকা শহরের বায়ু দূষণ রোধ-যুবদের ভাবনা ও ঘোষণা’ শিরোনামে জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের উদ্যোগে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শের-ই বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের যুবসমাজ নিজেদের মতামত ও ভাবনা তুলে ধরেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। দুই পর্বে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারের প্রথম পর্বে মূল প্রবন্ধের ওপর উন্মুক্ত আলোচনার পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের ৫০ বছরের পথচলার তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
এ ছাড়া এই পর্বে শিক্ষার্থী ও বিশিষ্টজনদের অংশগ্রহণে প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইফুল মোমেন, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ড. আহমেদ কামরুজ্জামান, ড. লেলিন চৌধুরি এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ থেকে চন্দন জেড গোমেজ। পর্বটি সঞ্চালনা করেন অর্চি রহমান।
প্যানেল আলোচনায় আলোচকরা ঢাকা শহরের বায়ুদূষণের বিভিন্ন কারণ, এর ফলাফল ও কীভাবে এর প্রতিকার করা যায় সে বিষয়ে আলোকপাত করেন। এ ছাড়া এই সমস্যা সমাধানে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে তরুণ শিক্ষার্থী ও যুবসমাজ কী ভূমিকা পালন করতে পারে, সে বিষয়েও তারা দিকনির্দেশনা দেন।
আরও পড়ুন…বিএসএমএমইউতে পিএইচডি কোর্সের প্রথম ব্যাচের ক্লাস শুরু
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, ‘পরিবেশের উন্নয়নের জন্য আমাদের কথার চেয়ে কাজ বেশি করতে হবে। সমাজের প্রত্যেক স্তরের মানুষকে এই বিষয়ে অন্তর্ভুক্তের পাশাপাশি তাদের সচেতন করতে হবে। যদি জনগণকে সম্পৃক্ত না করতে পারি, তাহলে আমাদের মন্ত্রণালয়ের কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।
‘পরিবেশের উন্নয়নের জন্য যেমন পুরস্কারের ব্যবস্থা থাকা দরকার, তেমনি পরিবেশ দূষণে মাঠপর্যায়ে ক্ষুদ্র শাস্তির ব্যবস্থাও রাখতে হবে।’ ঢাকায় বায়ুদূষণ রোধে জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত দুপুরের পর দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় জাতীয় অধ্যাপক আইনুন নিশাতের আলোচনার মাধ্যমে। জলবায়ু পরিবর্তন ও বায়ুদূষণ রোধে যুবাদের গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে আমাদের যুবাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনতে হবে এবং তাদেরকেই দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদের বেশি বেশি শহরকেন্দ্রিক সমস্যার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। কেননা শহরে জনসংখ্যা বাড়ছে প্রতিনিয়ত, যা পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। পাশাপাশি আমাদের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোও পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে এবং আমাদের পরিবেশ সম্পর্কিত যেসব আইন রয়েছে সেগুলোকে বাস্তবায়নের পাশাপাশি মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।’
এই পর্বে আরও আলোচনা করেন ‘অপারেজয় বাংলাদেশ’-এর নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানু। সেমিনার শেষ হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পাশাপাশি ‘ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ’-এর ‘ইয়ুথ ভিশন-২০২৩’ সম্পর্কিত আলোচনার মধ্য দিয়ে।
এ পর্বটি ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের টেকনিক্যাল ম্যানেজার আরবান প্রোগ্রামের যোয়ান্না ডি রোজারিও পরিচালনা করেন। তিনি এই পর্বে ভিশন বাংলাদেশের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড, উন্নয়ন পরিকল্পনা, প্রচারণার মাধ্যমে দেশের শিশু ও বৃদ্ধদের জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশগত বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন। এ বিষয়ে তরুণ শিক্ষার্থী ও যুবকদের অংশহগ্রহণে তাদের প্রতিষ্ঠান কাজ করছে বলে জানান । বায়ুদূষণ রোধে যুবদের মধ্যে সচেতনতা তৈরির গুরুত্বও তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন…দেশের উন্নয়নে কৃষকের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি
অন্যদের মধ্যে সেমিনারে অংশ নেন ঢাকা সিটি করপোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদুর রহমান, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. সাদাত আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আদিল মোহাম্মদ খান, ইয়ুথ ফোরাম বাংলাদেশের সভাপতি সজিব মিয়া এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের সাগর মারান্ডি।
ইবাংলা/জেএন/২৫সেপ্টেম্বর, ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.