বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, যারা আগের রাতে ভোট চুরি করে নিয়ে যায়, ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করে, বন্দুক আর পিস্তল দিয়ে জোর করে ক্ষমতায় বসে থাকে, তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না।
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের লজ্জা হয় না, যখন গণতন্ত্রের কথা বলে?’
আজ মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের প্রতিনিধি সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। গত ২ সেপ্টেম্বর হাসান জাফির তুহিন ও শহিদুল ইসলাম বাবুলের নেতৃত্বে নবগঠিত কৃষক দলের আংশিক কমিটি গঠনের পর এটি তাদের প্রথম সম্মেলন। সারাদেশ থেকে কৃষক দলের জেলা প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশ নেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দেশের কোথাও আওয়ামী লীগ নেই। এখন হচ্ছে আমলা লীগ। এখন ডিসি, এসপি, ওসি- এরা অনেক বড় সাহেব। আওয়ামী লীগের চাইতে তারা অনেক বড় আওয়ামী লীগ। এই অবস্থার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে, তার সরকারকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।’
আগামী জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে দলের অবস্থা স্পষ্ট করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এদেশে অবশ্যই একটা নির্বাচন হতে হবে। সেই নির্বাচনের মধ্যদিয়ে জনগণ তাদের মতামত দেবেন এবং সেই নির্বাচন হতে হবে সম্পূর্ণ নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। যাতে জনগণ ভোট দিতে যেতে পারে। যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবে- সেই ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে।’
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা নির্বাচন কমিশন নিয়ে খুব মাতামাতি করছেন। সার্চ কমিটির কথা বলছেন। কিসের সার্চ কমিটি? এটা নাটক। কারণ তারা যাকে দেবেন তাকে দিয়ে ইসি গঠন করা হবে। তারা যাকে চাইবেন সেই হবে। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার কিছু সত্য কথা বলেছেন। এখন তার বিরুদ্ধে উঠে-পড়ে লেগেছে, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম কথা বলছে, তাকে মানসিক রোগী বলছে। মানসিক রোগী তো আওয়ামী লীগ সরকার।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘২০১৪ ও ২০১৮ সালে কোনো নির্বাচন হয়নি। মানুষ ভোট দিতে পারেননি। বর্তমান সরকার ১২ বছর ধরে এ দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করছে। শেখ হাসিনার প্রতি, আওয়ামী লীগের প্রতি মানুষের কোনো আস্থা নেই। সরকার মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে নষ্ট করে দিয়েছে।’
কৃষক দলকে গণসংগঠনে রূপ দিতে হবে উল্লেখ করে সংগঠনের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘কৃষক দলের সঙ্গে আমি দীর্ঘদিন জড়িত ছিলাম। তাই এ সংগঠনের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। আমরা আশা করবো কৃষকদলকে সত্যিকার অর্থেই জনগণের একটা সংগঠনের পরিণত করবেন, গণসংগঠনে পরিণত করবেন নতুন নেতারা। এই দুঃসময়ে কৃষক দলকে সংগঠিত করে জনতার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেন আমরা এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারকে সরাতে পারি এবং সত্যিকার অর্থে জনগণের একটা সরকার, জনগণের একটা রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারি।’
কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় এই প্রতিনিধি সম্মেলনে কৃষক দলের নবগঠিত কমিটির হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, গৌতম চক্রবর্তী, টিএস আইয়ুব, মোশাররফ হোসেন, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।