খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগের দিন শুরু হয়েছে দুই দিনের ‘পরিবহন ধর্মঘট’। এ কারণে যশোর থেকে খুলনাগামী আন্তঃজেলা বাসসহ সব ধরনের যাত্রীবাহী বাস বন্ধ রেখেছেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
বিশেষ করে, শুক্রবার সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা থাকায় অনেক চাকরিপ্রত্যাশী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। অনেকেই আবার পরীক্ষা শেষে বাস না পেয়ে আটকা পড়েছেন।তবে যশোর থেকে খুলনাগামী যাত্রীবাহী বাস বন্ধ থাকলেও বাকি ১৯ টি রুটে সব পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
জানা গেছে, শনিবার (২২ অক্টোবর) বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে খুলনায় দুই দিনের (শুক্রবার-শনিবার) ‘পরিবহন ধর্মঘট’ চলছে। তবে, বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি বলছে, মহাসড়কে তিন চাকার যানবহন বন্ধ না হওয়ায় তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিএনপির নেতারা দাবি করছেন, ২২ অক্টোবর সমাবেশকে সামনে রেখে খুলনাকে বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন…রিকশা চার্জ দেওয়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে চালকের মৃত্যু
এদিকে ধর্মঘটের কারণে খুলনার সঙ্গে সব রুটে বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এমনকি লঞ্চ চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু রুটে বাস চলাচল করলেও অধিকাংশ জায়গায় বন্ধ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
বিভিন্ন বাস টার্মিনাল ঘুরে প্রতিনিধিরা জানান, বাসগুলো টার্মিনালে এসে থেমে যাচ্ছে। যাত্রীদের চাপ থাকলেও বাস তেমন একটা ছাড়তে দেখা যায়নি। কিছু বাস ছাড়লেও অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অনেকেই রিকশা, ইজিবাইক, ভ্যানে এবং পায়ে হেঁটে গন্তব্যস্থলে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন…নারী পুলিশ ধর্ষণের অভিযোগে বাংলাদেশি গ্রেফতার
চাকরিপ্রত্যাশী মিলন জানান, যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলা থেকে সকালে সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা দিতে শহরে এসেছি। পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার জন্যে টার্মিনালে এসে দেখি বাস চলছে না। বাধ্য হয়ে ইজিবাইকে ভেঙে ভেঙে যেতে হয়েছে। তবে, ভাড়া লেগেছে বাসের চেয়ে তিনগুণ।
তুষার নামে এক যাত্রী বলেন, রাজনৈতিক সমাবেশের কারণে বাস বন্ধ করে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কোনোভাবেই মানা যায় না। বাধ্য হয়ে অন্য রুটে যেতে হচ্ছে। পরিবহন মালিকরা বলছেন, সরকারের নিষেধাজ্ঞা নেই। সমাবেশকে কেন্দ্র করে যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেই কারণে বাস বন্ধ রেখেছি। তাছাড়া বিশেষ অভিযান চলছে, পুলিশ গাড়িতে মামলা দিতে পারে।
এদিকে বিএনপির নেতারা বলছেন, সমাবেশে যেতে অনেক বাস ও মাইক্রোবাসের ভাড়া করা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বাস মালিকরা অগ্রিম যে টাকা নিয়েছিল, তা ফেরত দিচ্ছেন। এসব করে গণসমাবেশ প্রতিহত করতে পারবে না। অনেকে আগেই খুলনায় পৌঁছে গেছে। বাকিরাও বিকল্প উপায়ে পৌঁছে যাবে।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চলছে। যতই বাধা-বিপত্তি আসুক, গাড়ি বন্ধ করা হোক পায়ে হেঁটে হলেও নেতাকর্মীরা সমাবেশে আসবে।
আরও পড়ুন…হাশরের মাঠে প্রতিটি আদম সন্তানকেই পাঁচটি প্রশ্নের জবাব দিতে হবে
খুলনার সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সমাবেশটিকে ব্যর্থ করে দিতে সরকার নানা ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।যশোর শহরের বিএনপির একজন কর্মী বলেন, ‘খুলনাতে যাওয়ার কোনো যানবাহন পাচ্ছি না। শেষমেষ কিছু না পেলে মোটরসাইকেলে চড়ে যাব। সেখানেও বাধা পেলে পায়ে হেঁটে চলে যাব।’ মানুষ একসময় হেঁটে মক্কায় গিয়ে হজ করত। আমাদের নেতাকর্মীরা দরকার হলে পায়ে হেঁটে এসে সমাবেশে যোগ দেবেন।
ইবাংলা/জেএন/২১ অক্টোবর ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.