বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য, সাক্ষ্য-প্রমাণ ও অন্যান্য সহায়তা গ্রহণের জন্য ১০টি দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) তিন মাস সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড ও হংকং-চায়না। বুধবার (২৬ অক্টোবর) বিএফআইইউর প্রতিবেদন দাখিলের পর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান।
আরও পড়ুন…সন্তানের কথা ভেবে অনেক কথা বলা যায় না
গত ১০ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি শুয়ার্ড বলেন, সুইস ব্যাংকে জমা রাখা অর্থের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির জন্য তথ্য চায়নি। সুইস ব্যাংকের ত্রুটি সংশোধনে সুইজারল্যান্ড কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। সুইজারল্যান্ড কালোটাকা রাখার কোনো নিরাপদ ক্ষেত্র নয়।
তিনি বলেন, গত বছর সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশ থেকে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা জমা হয়েছে। তবে উভয় দেশের সম্মতিতে ব্যাংকিং তথ্য লেনদেন হতে পারে এবং সেটা সম্ভবও। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।
এরপর ১১ আগস্ট বিষয়টি নজরে নিয়ে সুইস ব্যাংকে অর্থ জমাকারীদের তথ্য কেন জানতে চাওয়া হয়নি, তা রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) জানাতে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ দেন হাইকোর্ট। এরপর আদালতে দুদক এবং বিএফআইইউ-এর পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ হলফনামা আকারে তথ্য দাখিল করে। ওই হলফনামায় যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় বিএফআইইউ প্রধানকে তলব করা হয়।
রাষ্ট্রদূতের বক্তেব্যের প্রতিক্রিয়ায় গত ১২ আগস্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘সুইস রাষ্ট্রদূত মিথ্যা বলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও ফিন্যান্স সেক্রেটারি আমাকে আগে জানিয়েছিলেন, তারা তথ্য চেয়েছিলেন, সুইস ব্যাংক কোন উত্তর দেননি।’
বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) হাইকোর্টকে জানায়, গত ১৪ আগস্ট সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশি ব্যক্তিদের অর্থ রাখার বিষয়ে তথ্য জানাতে সর্বমোট ৩ বার চিঠি দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন…ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তীব্র যানজট
হাইকোর্টের তলবে ৩১ আগস্ট হাজির হয়ে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস ক্ষমা চাইলে আদালত তাকে সতর্ক করে দেন। একই সঙ্গে বিএফআইইউ কোন কোন দেশের কাছে অর্থ পাচার ও পাচারকারীদের তথ্য চেয়েছে, কী তথ্য পেয়েছে, তথ্য পেয়ে থাকলে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে এবং পাচার করা অর্থ উদ্ধারে কী পদক্ষেপ নিয়েছে-এসব বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করতে আদালত নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশ ২৬ অক্টোবর।
ইবাংলা/জেএন/২৬ অক্টোবর ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.