বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম জেলায় নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দক্ষিণ টিউবের পূর্তকাজ শেষ হয়েছে। চীনের অর্থায়ন ও সহায়তায় নির্মাণ করায় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানান, এই টানেল নির্মাণ করায় চট্টগ্রাম হবে সাংহাইয়ের মতো ওয়ান সিটি টু টাউন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, চীন-বাংলাদেশ নির্ভরযোগ্য কৌশলগত অংশীদার।
দক্ষিণ এশিয়ায় পানির নিচ দিয়ে নির্মাণ করা এটাই প্রথম টানেল, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। প্রায় ৩৮০ একর জায়গাজুড়ে নির্মাণাধীন এই টানেলের প্রবেশ পথে আছে বৃষ্টি থেকে সুরক্ষা পাবার শেল্টার। পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারা, দুই পাড়ে চলাচলের জন্য আছে ২টি করে মোট ৪টি লেন। আছে চমৎকার ডিজাইনের টোলপ্লাজা ও সার্ভিস এরিয়া বাংলো।
আরও পড়ুন…অবৈধভাবে মদ বিক্রি করা হলে পুলিশ যে কোনো সময় অভিযান চালাতে পারে-ডিআইজি আক্তারুজ্জামান
২০১৩ সালে ফিজিবিলিটি স্টাডি করার পর টানেল নির্মাণের জন্য চায়না কমিউনিকেশনস কন্সট্রাকশন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয় ২০১৫ সালের জুনে। পুরো নির্মাণ কাজে অর্থায়ন করে চায়না এক্সিম ব্যাংক।
লি ছেং, প্রকল্প ব্যবস্থাপক, চায়না কমিউনিকেশন্স কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিডেট চীনের অর্থায়নে নির্মিত দুই টিউববিশিষ্ট এই টানেলের একটির নির্মাণ কাজ হওয়ায় সম্প্রতি আয়োজন করা হয় উদযাপনের। রাজধানী ঢাকা থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগদেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, চীন-বাংলাদেশ নির্ভরযোগ্য কৌশলগত অংশীদার। আর এই টানেল বেল্ট এন্ড রোড উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সামনের দিনগুলোতে দুই দেশের মধ্যকার সহযোগিতা নতুন উচ্চতায় পৌছে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন লি জিমিং।
লি জিমিং, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত এই টানেলের নির্মাণ করতে অর্থায়নের জন্য চীনকে রাজি করাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রচলিত কূটনীতির বাইরেও কাজ করেছেন বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল হক। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সে দিনের স্মৃতিচারণ করে প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং ও সে সময়ের চীনা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে টানেলের অপর প্রান্তে পরিকল্পিতভাবে ভারী শিল্প বিনিয়োগ হচ্ছে, এই টানেলের মাধ্যমে টুইন সিটি গড়ে উঠবে। পদ্মাসেতু নির্মাণকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে বাংলাদেশ যে পারে সরকার তা প্রমাণ করে দিয়েছে মন্তব্য করে নির্মাণে সহায়তা করায় চীনকে আবারো ধন্যবাদ জানান। এই টানেল নির্মাণের ফলে চট্টগ্রাম শহরের যানজট ও ভোগান্তি থেকে স্থানীয়দের স্বস্তি মিলবে বলে জানায় সড়ক ও সেতু বিভাগ।
আরও পড়ুন…ইসলামী ব্যাংক ও.আর. নিজাম রোড শাখা স্থানান্তর
কর্ণফুলী নদীর একপাড়ে শিল্প এলাকা আনোয়ারা আর অন্যপাশে পতেঙ্গা। এই টানেলের মাধ্যমে এই দুই পাড়কে একত্রিত করার ফলে চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থারই কেবল উন্নয়নই হবে না বরং এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পদক্ষেপে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। পাশাপাশি চট্টগ্রামের আনোয়ারায় নতুন পরিকল্পিত শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠছে তাকে যুক্ত করবে মূল যোগাযোগ নেটওয়ার্কের সঙ্গে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খুলে দেওয়ার পর চট্টগ্রামসহ গোটা দেশের অর্থনীতিতেও যোগ হবে এক নতুন মাত্রা। সূত্র : সাজিদ রাজু,সিএনজি।
ইবাংলা/জেএন/৪ ডিসেম্বর, ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.