নিউজিল্যান্ডের নাম নিলে আপনার মনে কী ভেসে উঠে? ক্রীড়াপ্রেমীদের মনে পড়বে রাগবির কথা। নিউজিল্যান্ডে রাগবি খুবই প্রচলিত ক্রীড়া। নগর, শহর থেকে কমিউনিটি পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে তাদের নিজস্ব ক্রীড়াদল রয়েছে। রাগবি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ান হয়েছিল দেশটির জাতীয় রাগবি দল, তারা নিখিল নিউজিল্যান্ডের অহংকার।
২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর নিউজিল্যান্ডের রাজধানী ওয়েলিংটনে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জন ফিলিপ কি’র সঙ্গে একটি যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সাংবাদিক সম্মেলন শেষে রাগবি ক্রীড়াবিদ ও অল ব্ল্যাকস দলের সদস্য মা ননু প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে একটি ব্ল্যাক জার্সি উপহার দেন। ওই জার্সির নম্বর হলো আট, যা চীনা জনগণের প্রিয় নম্বর।
আরও পড়ুন…স্মার্ট প্রতিরক্ষা’ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বেইজিং
‘সি চিন পিং’ শব্দ লেখা থাকা এ জার্সি গ্রহণ করে সি চিন পিং বলেছেন, ‘আপনাকে চীন সফরে স্বাগত জানাই”। এ জার্সি যত্নে রাখার কথাও বলেন সি চিন পিং। মাও ননু বলেন, ‘আমি এখন চীনে যেতে পারব”। সি বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রদূত এখানে আছেন’। উপস্থিত সবাই তাদের কথাবার্তায় মজা পান।
অল্প কয়েক দিন পর অল ব্ল্যাকস দলের সদস্যরা চীন সফর করেন। তারা বেইজিংয়ে প্রশিক্ষণে অংশ নেন। একজন সদস্য বলেন, “আশা করি, ভবিষ্যতে আরও বেশি খেলোয়াড় চীনে আদান-প্রদান করবে। নিউজিল্যান্ডে আমরা চীনা খেলোয়াড়দের স্বাগত জানাই”।
ক্রীড়া সীমাহীন এবং জাতিহীন। এটি মানব জাতির অভিন্ন ভাষা। বিভিন্ন কূটনৈতিক মঞ্চে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ক্রীড়ার প্রতি তাঁর ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন…দরজার চৌকাঠে ইবির সাধারণ কর্মচারী সমিতি নির্বাচন
২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আইল্যান্ড সফরকালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ফুটবল মাঠে ফুটবলের কৌশল দেখিয়েছেন। তাঁর সে মুহুর্তটি ছবিতে ধারণ করেছেন জনৈক সাংবাদিক। ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর নববর্ষের শুভেচ্ছাবার্তা দেওয়ার সময় ভিডিওতে সে ফুটবল খেলার ছবি প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং’র অফিসে দেখতে পাওয়া গিয়েছিল।
ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে বৃটেনের ম্যানচেস্টারের সিটি ফুটবল একাডেমিতে ক্রীড়াবিদ সার্গিউ আগুয়েরোর সঙ্গে তুলা সি চিন পিং’র ছবি আরও বেশি প্রচলিত।আগুয়েরো যোগাযোগ মাধ্যমে একটি সেলফি শেয়ার করে বলেন, “আপনার সঙ্গে সেলফি তুলে খুব ভালো লাগছে, ধন্যবাদ প্রেসিডেন্ট সি”। অনেক নেটিজেন মন্তব্য করেন, ‘সি সব সময় মানুষের কাছাকাছি আছেন’, ‘প্রেসিডেন্ট সি হয়ত বিভিন্ন দেশের নেতাদের মধ্যে বৃহত্তম ফুটবলপ্রেমী। তাঁকে কূটনৈতিক মঞ্চে ‘মিস্টার ফুটবল’ বলে ডাকা যায়।
বড় ক্রীড়াপ্রেমী হিসেবে সি চিন পিং বেশ কিছু ক্রীড়া সামগ্রী উপহার পেয়েছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে অনেক জার্সি। আর্জেন্টিনা থেকে তিনি পরপর দেশটির জাতীয় ফুটবল দল ও বোকা জুনিয়রস দলের ১০ নম্বর জার্সি উপহার পেয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনি লিংকন হাইস্কুলের ১ নম্বর জার্সি উপহার পেয়েছেন। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানছেজ পেরেজ-কাসট্জন রিয়াল মাদ্রিদ এবং অ্যাটলেটিকো ডি মাদ্রিদের জার্সি সি চিন পিংকে উপহার দিয়েছেন। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এক সময় সফরকালে তাঁর সঙ্গীদের বলেছেন, প্রাণের মূল হলো ক্রীড়া। কূটনীতির মূল হলো তৎপরতা। চীনা কূটনীতিবিদদের উচিৎ বেশি করে বাইরে বের হওয়া এবং অনেকের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা।
আরও পড়ুন…নয়াপল্টনের ঘটনায় কূটনৈতিক মিশনগুলোতে চিঠি দিয়েছে সরকার
২০১৪ সালের বসন্তে রাশিয়ার আমন্ত্রণে সি চিন পিং সোচি শীতকালীন অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন, যা বিদেশে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ইভেন্টে চীনা শীর্ষ নেতার অংশগ্রহণের ইতিহাস তৈরি করে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সি চিন পিংকে সোচি শীতকালীন অলিম্পিকের পদক উপহার দিয়েছেন। পদকে সোচি’র দৃশ্য দেখা যায়, তাতে ক্রীড়া কূটনীতিতে দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ক্রীড়া প্রেমের মাধ্যমে বন্ধুত্ব বৃদ্ধি করেছেন, তাঁর কারণে চীনের ‘বন্ধু বৃত্ত’ বৃদ্ধি পেয়েছে। সারা বিশ্বে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং’র মাধ্যমে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী ও প্রাণচঞ্চল চীনকে দেখা যাচ্ছে।সূত্র: রুবি,সিএমজি।
ইবাংলা/জেএন/১৩ ডিসেম্বর, ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.