আল্লাহ তায়ালার প্রতি ধ্যান রেখে পরিপূর্ণ মনোযোগের সঙ্গে নামাজ আদায়ের কথা বলা হয়েছে কোরআনে। বর্ণিত হয়েছে, ‘সেসব মুমিনরা সফলকাম, যারা তাদের নামাজে বিনয়াবনত থাকে।’ -(সূরা মুমিনুন, আয়াত: ১-২) শরীয়তের বিধান মতে নামাজ ভেঙ্গে যাওয়ার অন্যতম একটি কারন হলো বিনা ওজরে কাশি দেওয়া। অপ্রয়োজনে কাশি দেওয়ার দ্বারা নামাজ ভেঙে যায়। (ফাতাওয়ায়ে শামী ৩/৬১৮, মারাকিল ফালাহ ১/১২১, আল বাহরুর রায়েক ২/৫)
নামাজে মনোযোগ ধরে রাখার বিভিন্ন উপায় বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে জনৈক ব্যক্তি সংক্ষিপ্ত উপদেশ কামনা করলে তিনি তাকে বলেন, ‘যখন তুমি নামাজে দণ্ডায়মান হবে তখন এমনভাবে নামাজ আদায় করো, যেন এটিই তোমার জীবনের শেষ নামাজ।’ -(ইবনে মাজাহ, মিশকাত, হাদিস : ৫২২৬)
নামাজ আদায়ের সময় দায়সারা ভাব দেখানো উচিত নয়। এ নিয়ে হাদিসে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। হজরত আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিকৃষ্টতম চোর হলো সেই ব্যক্তি, যে নামাজে চুরি করে।’ জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! নামাজে কিভাবে চুরি করে? তিনি বলেন, ‘যে রুকু-সিজদা পূর্ণভাবে আদায় করে না।’ -(মুসনাদ আহমাদ, মিশকাত, হাদিস : ৮৮৫)
নামাজ সঠিকভাবে, সবগুলো বিধান মেনে আদায় করার প্রতি সবিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে হাদিসে। নামাজ ভঙ্গের কারণগুলো যেন না ঘটে এ বিষয়েও খেয়াল রাখার কথা বলা হয়েছে।
কোরআন হাদিসের আলোকে ইসলামী আইন ও ফেকাহ শাস্ত্রবিদেরা যেসব বিষয়কে নামাজ ভঙ্গের কারণ বলেছেন তার একটি হলো বিনা প্রয়োজনে কাশি দেওয়া। তবে যদি নামাজের মধ্যে গলায় কফ জমার কারণে বা এ ধরনের কোনো সমস্যার কারণে কাশি দেওয়া হয় তাহলে নামাজের কোনো ক্ষতি হবে না। তাই আলেমদের মতে, একান্ত প্রয়োজন না হলে কাশি বা হাচি না দেওয়া উচিত। -(আলমুহিতুল বুরহানি : ২/১৫১; তাবয়িনুল হাকায়েক : ১/৩৯২; আলবাহরুর রায়েক : ২/৫; মাজমাউল)
হজরত আবদুল্লাহ ইবনু সাইব রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে নিয়ে মক্কায় ফজরের নামাজ আদায় করলেন। তিনি সূরাহ আল মু’মিনূন পড়া শুরু করলেন।… এ সময় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাশি এলে তিনি রুকূতে চলে গেলেন।- (মুসলিম শরীফ ৯০৯,ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ৯০৪, ইসলামিক সেন্টার, ৯১৬)
ইবাংলা/জেএন/১৪ ডিসেম্বর, ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.