বাড়তি দরে ডলার কিনছে ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রবাসী বাংলাদেশি তার ভাইয়ের জন্য এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে ৫ হাজার ১৫৪ ডলার পাঠায় ঢাকা ব্যাংকে। ব্যাংক তার ভাইকে ডলার প্রতি ১১২ টাকা ৫০ পয়সা হারে ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৮২৫ টাকা দিয়েছে।

অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রতি ডলার ১০৭ টাকা করে কিনেছে বলে রিপোর্ট করেছে ব্যাংকটি। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা বিনিময় মূল্য দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সব ব্যাংক। কাগজে-কলমে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তেমনই রিপোর্ট করছে। যদিও বাস্তব চিত্র ভিন্ন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশে বেশ কিছু ব্যাংক বাড়তি দরে ডলার কিনছে। এ ক্ষেত্রে সরকারি মালিকানার দুটি ও বেসরকারি খাতের ১০টি ব্যাংকের তথ্য পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপনের কাজ সম্পন্ন

সবগুলোই আমদানিকারকদের কাছে ১১৪ থেকে ১১৫ টাকা পর্যন্ত দরে ডলার বিক্রি করছে। এ ক্ষেত্রেও ব্যাংকগুলো ১০৭ থেকে ১০৮ টাকার বেশি দেখাচ্ছে না।

ডলারের দরে কারসাজির বাইরে এলসি খুলতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনাপত্তি নেওয়াকে কেন্দ্র করে কোনো কোনো শাখার কর্মকর্তা আমদানিকারকদের কাছ থেকে ঘুস নিয়েছেন– এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, আগামী জুন থেকে ডলারের দর পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: রাজধানীতে বাজারে অভিযান, জরিমানা ৯৫ হাজার

নথিপত্রে তাদের ব্যাংক ডলার কেনার দর ১০৭ টাকা দেখালেও রেমিট্যান্সের সুবিধাভোগীকে দেওয়া হচ্ছে ১১২ থেকে ১১৩ টাকা। এ বিষয়ে ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমরানুল হকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলব।

রাষ্ট্রীয় মালিকানার সোনালী ব্যাংকের এমডি ও বাফেদার চেয়ারম্যান আফজাল করিমের কাছে জানতে চাওয়া হয় বাড়তি দরে ডলার কেনার বিষয়টি তিনি জানেন কিনা। এর উত্তরে তিনি বলেন, বাজারের স্বার্থে একটা দর ঠিক করা হয়েছে। এত দিন সবাই মানছিল। এখন কেউ মানছে কেউ মানছে না, এ নিয়ে বাফেদা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না।

আরও পড়ুন: রোজার কোনো ক্ষতি হয় না যেসব কাজে

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দু-একটি ব্যাংক বাড়তি দর দেওয়া শুরুর পর অন্যদেরও সে পথে হাঁটতে হয়েছে। তবে সোনালী ব্যাংক ১০৭ টাকা এক পয়সা বেশি দর দিচ্ছে না।

বেসরকারি একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা বলেন, কিছু ব্যাংক উচ্চ দর দেওয়ায় বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস এখন আর অন্যদের কাছে কম দামে ডলার বিক্রি করতে চাইছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে চরম সংকট দেখা দেবে। বিষয়টি জেনেও বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিদর্শনের সময় বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। সেখানে দর না মানার বিষয়টি ধরা পড়লে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইবাংলা/এসআরএস

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us