বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি জোনের একটি টহলদলের উপর দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে দুষ্কৃতিকারী গরু চোরাকারবারীরা। হামলার ঘটনায় ১জন গুলিবিদ্ধসহ ৪বিজিবি সদস্য আহত হয়েছে। আহত বিজিবি সদস্যদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। শনিবার (৮ই এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় প্রায় এক ঘন্টা নাইক্ষ্যংছড়ি-রামু সড়কে পরিবহণ চলাচল বন্ধ ছিল।
আরও পড়ুন… বান্দরবানে সন্ত্রাসীদের দু’পক্ষের গোলাগুলিতে নিহত ৮
জানা গেছে, মায়ানমার থেকে চোরাই পথে একটি গরুর চালান নাইক্ষ্যংছড়ির সোনাইছড়ি পাহাড়ী এলাকা অতিক্রম করে কাউয়ারখোপ যাচ্ছে খবর পেয়ে ১১বিজিবির একটি টহলদল অভিযানে নামে। টহলদলের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে চোরাই গরু আটক করে ক্যাম্পে ফেরার পথে কাউয়ারখোপ গোলাইগোনায় পৌছলে পূর্বে থেকে অন্ধকারে উৎপেতে থাকা দুষ্কৃতিকারী ও তাদের ২/৩ শত সংঘবদ্ধ সহযোগী বিজিবিকে লক্ষ্য করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
দুষ্কৃতিকারীদের ইট পাটকেল এবং দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে বিজিবির ৪সদস্য ঘটনাস্থলে গুরুতর আহত হয়। এসময় বিজিবি আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুড়ছে কাউয়ারখোপ এলাকার আব্দুল জব্বার প্রকাশ ভুট্টো (৩৫) নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়। পরে ১১বিজিবি জোন সদর থেকে বিজিবির অপর একটি দল এসে আহত বিজিবি সদস্যদের কক্সবাজার সদর হাসপাতাল এবং আহত আবদুল জব্বারকে উদ্ধার করে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এসময় ঘটনাস্থল থেকে ১টি দেশীয় একনলা বন্দুক, ১টি ক্রীচ ও ১টি দা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বিজিবি।
কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের মেম্বার আজিজুল হক জানান, এই ঘটনায় পুরো এলাকা থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সম্প্রতি সময়ে গরু চোরাচালান নিয়ে একটি সিন্ডিকেট তৈরী হয়েছে। এই গরু বানিজ্য নিয়ে এলাকার আইন শৃংখলা অবনতি হচ্ছে। এদিকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রামু থানার ওসি আনোয়ারুল হোসাইন ও নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি টান্টু সাহা। ঘটনার পর ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ির প্রশাসন।
আরও পড়ুন… বান্দরবানে রাত হলেই চলে পাহাড় কাটা, বিপর্যয়ের মুখে পরিবেশ
রাতে ১১বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্ণেল রেজাউল করিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, দেশীয় প্রাণীজ সম্পদ শিল্প রক্ষার্থে মায়ানমার থেকে অবৈধভাবে গরু চোরাচালানের বিরুদ্ধে গত কয়েক মাস ধরে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ ব্যাটালিয়ন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
বিভিন্ন সময়ে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি প্রায় ১ হাজার ৩০০ গরু আটক করেছে। এসব গরু নিলামের মাধ্যমে ১৩ কোটি টাকার রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা করেছেন। শনিবার রাতে বিজিবির উপর হামলা ও অস্ত্র উদ্ধারের এই ঘটনায় মামলা দায়েরসহ অন্যান্য আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ইবাংলা/এইচআর/৯ এপ্রিল ২০২৩
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.