শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বছরে সময়মতোই বই পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। শনিবার (৬ নভেম্বর) চাঁদপুরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
- এর আগে মাধ্যমিক স্তরের ৪৮ শতাংশ বই ছাপানোর জন্য চুক্তিই করতে পারেনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। এমন তথ্য সময় টিভির নিউজে উঠে এসেছে। নিয়মানুযায়ী চুক্তি হওয়ার পরে ছাপানোর জন্য আরও ৭০ দিন সময় পাবে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান। এতে নতুন বছরের প্রথম দিনই শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছানো নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। অভিযোগ উঠেছে, পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে গিয়ে বই উৎসবকে হুমকির মুখে ফেলেছে এনসিটিবি। তবে এনসিটিবি বলছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পৌঁছে যাবে পাঠ্যপুস্তক।
- ২০১০ সাল থেকে সারা দেশের কোটি কোটি শিক্ষার্থীর হাতে বছরের প্রথম দিন পাঠ্যপুস্তক তুলে দিয়ে সারা বিশ্বে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। এমনকি মহামারির বছরও ধারাবাহিকতা অব্যাহত ছিল।অথচ নতুন বছরের ১ জানুয়ারি ৪ কোটি শিক্ষার্থী নতুন বই পাবে কি না, এ নিয়ে তৈরি হয়েছে-জটিলতা। ২০২২ সালের প্রাথমিক পর্যায়ের ১০ কোটি বইয়ের মধ্যে এখন পর্যন্ত ছাপানোর কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৩০ শতাংশ পাঠ্যপুস্তকের। মাধ্যমিক পর্যায়ের ২৫ কোটির মধ্যে ১০ শতাংশের বেশি ছাপানোর কাজ কেবল শুরু হয়েছে।
হাতে মাত্র দুই মাস সময়, মাধ্যমিক স্তরের অর্ধেক বই ছাপাতে এখন পর্যন্ত কোনো চুক্তিই হয়নি। প্রক্রিয়া অনুযায়ী, চুক্তির পর হবে নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড। এরপর ছাপানোর জন্য ৭০ দিন সময় পাবেন ছাপাখানার মালিকরা।
প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শহীদ সেরনিয়াবাত ৩০ অক্টোবর জানান, যদি সময় ধরি তাহলে ৭০ দিন সময় নেই, আরও ১৫ দিন পরে ওয়ার্ক ওর্ডার পাবে, কাজ শুরুর। কীভাবে বছরের প্রথম দিন বই দেওয়া সম্ভব। কোনোভাবেই সম্ভব না।
অভিযোগ উঠেছে, প্রাথমিক স্তরের ১০ কোটি বইয়ের মধ্যে একটি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকেই ৩ কোটি বইয়ের ছাপার কাজ দিতে গিয়ে যত বিপত্তি। দরপত্রের মাঝখানে হঠাৎ সংশোধনী আনে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। আর এতেই এক দশকের বেশি সময় ধরে নতুন বই পৌঁছে দেওয়ার সফলতা ভেস্তে যাওয়ার পথে।
সভাপতি আরও বলেন, টেন্ডারের শর্ত পরিবর্তন করে লাখ লাখ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানকে লাভবান করার জন্য এ দেরিটা হলো।
দরপত্রে বারবার শর্ত পরিবর্তনসহ নানা কারণে এবার ছাপানোর কাজে দেরি হচ্ছে স্বীকার করলেও এনসিটিবির দাবি, বছরের প্রথম দিনেই বই পাবেন শিক্ষার্থীরা।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, বছরের প্রথম দিন আমরা তাদের হাতে বই পৌঁছে দেব। সেটার জন্য দুশ্চিন্তাগ্রস্ত দ্বিধাগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই।
প্রাথমিক পর্যায়ের ৩২ শতাংশ বই শেষে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে এনসিটিবি পক্ষ থেকে জানানো হলেও মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাপানোর অগ্রগতি নিয়ে কিছুই জানাতে পারেনি তারা।
ইবাংলা/নাঈম/০৬ নভেম্বর, ২০২১