বারবার বদলাচ্ছিল ম্যাচের মোড়, মনে হচ্ছিল ম্যাচটা হয়তো পাকিস্তানের হাতে, আবার কখনো শ্রীলঙ্কার হাতে। সেই রোমাঞ্চের চোরাবালিতে হাবুডুবু খেলেন প্রেমাদাসার দর্শকরা। কিন্তু শেষ হাসিটা হল লংকারই। নানা নাটকীয়তার পর ম্যাচে জয়ী শ্রীলঙ্কা। শক্তিশালী পাকিস্তানকে ৩ উইকেটে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠে গেল দাসুন শানাকারা।
বৃহস্পতিবার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে সুপার ফোরের বাঁচা-মরার লড়াইয়ে পাকিস্তানকে ২ উইকেটে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে বৃষ্টির কারণে ৪২ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ২৫২ রানের সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। বৃষ্টি আইনে সমান রানের লক্ষ্য ছিল শ্রীলঙ্কারও। শেষ বলে গিয়ে রোমাঞ্চকর ম্যাচে জয় পায় শ্রীলঙ্কা।
২৫৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পায় লংকানরা। দলটির হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল পেরারা। দীর্ঘদিন পর দলে ফিরেই হাত খুলে ব্যাটিং করতে থাকেন পেরেরা। তবে ম্যাচের চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলে শাদাব খানের দুর্দান্ত থ্রোতে সাজঘরে ফেরেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৮ বলে ১৭ রান করেন এ বাঁ-হাতি ব্যাটার।
আরও পড়ুন>> রোববার নিউইয়র্ক যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
এরপর উইকেটে আসেন কুশল মেন্ডিস। তার সঙ্গে ৫৭ রানের জুটি গড়েন নিশাঙ্কা। এরপর ম্যাচের ১৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে নিশাঙ্কাকে নিজের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান শাদাব খান। পরে ক্রিজে আসেন সাদিরা সামারাবিক্রমা। তবে একপ্রান্ত আগলে থাকেন কুশল মেন্ডিস, তার সঙ্গী হন সাদিরা সামারাবিক্রমা। তারা দুজন মিলে রান রেটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে থাকেন। দুজনের জুটি যখন ঠিক একশ রানে পৌঁছায়, তখনই আউট হন সামারাবিক্রমা।
৪ চারে ৫১ বলে ৪৮ রান করে সামারাবিক্রমা স্টাম্পিং হন ইফতেখার আহমেদের বলে। এরপর চারিথ আশালাঙ্কাকে নিয়ে দলকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন মেন্ডিস। কিন্তু এই ব্যাটার এশিয়া কাপে দ্বিতীয়বারের মতো ‘নার্ভাস নাইন্টিজে’ আটকা পড়েন। ইফতেখারের বল লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে ব্যাটের উপরের অংশে লাগে মেন্ডিসের, দুর্দান্ত ক্যাচ নেন মোহাম্মদ হারিস। ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৮৭ বলে ৯১ রানে আউট হয়ে যান।
এরপর ৪ বলে ২ রান করে অধিনায়ক দাসুন শানাকা আউট হলে কিছুটা চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। খেলা পুরো জমিয়ে তোলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। শেষের আগের ওভারে টানা দুই বলে তিনি ফেরান ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও চারিথ আশালাঙ্কাকে।
শেষ ওভারে ৮ রান দরকার হয় শ্রীলঙ্কার, স্ট্রাইকে ছিলেন না সেট ব্যাটার আশালাঙ্কাও। প্রথম বলে এক রান নেওয়ার পর দ্বিতীয়টিতে কোনো রান আসেনি। তৃতীয় বলে ফের এক রান নেন আশালাঙ্কা, চলে যান নন স্ট্রাইক প্রান্তে। পরের বলে দৌড়ে তিনি স্ট্রাইক প্রান্তে চলে যান, রান আউট হতে হয় সঙ্গী প্রামোদ মাদুশানকে।
তখন পুরো দায়িত্বটাই এসে পড়ে আশালাঙ্কার কাঁধে। শেষ দুই বলে জয়ের জন্য দরকার ছয় রান। জামান খানের করা পঞ্চম বল কিপার ও স্লিপের মাঝখান দিয়ে হয়ে যায় বাউন্ডারি। শেষ বলে দরকার দুই রান। প্যাডে আসা বল ডিপ স্কয়ার লেগে ঠেলে দিতে দুই রান নেন আশালাঙ্কা। উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো প্রেমাদাসা। ১১তমবারের মতো ফাইনালে পৌঁছে যায় শ্রীলঙ্কা।
পাকিস্তানের হয়ে বোলিংয়ে ইফতিখার আহমেদ সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন। এছাড়া শাহিন আফ্রিদি ২ টি ও শাদাব খান পান ১ উইকেট।
আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার মিশনে ভারতের মুখোমুখি হবে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা।
ইবাংলা/এসআরএস
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.