ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমে ভারী বর্ষণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ৭৮ জন। এর মধ্যে চারজন সেনা সদস্য রয়েছেন।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সকালে টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা এসব তথ্য জানানো হয়।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, তিস্তার ভাটি এলাকা জলপাইগুড়ির গাজলডোবা, ময়নাগুড়ি ও কোতোয়ালিতে বেশিরভাগ মরদেহ পাওয়া গেছে। এছাড়া কোচবিহারের কুচলিবাড়ি ও হলদিবাড়ি, মিলনপল্লী ও শিলিগুড়িতে তিস্তা ব্যারেজ এলাকায়ও মরদেহ পাওয়া গেছে। কয়েকটি লাশ ভেসে এসেছে বাংলাদেশের গাইবান্ধাতেও।
আরও পড়ুন>> মুম্বাইয়ে বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, নিহত ৬
ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানায়, হিমবাহ ধসের আশঙ্কায় জারি করা হয়েছে জরুরি সতর্কতা। রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এসএসডিএমএ এর তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যটিতে আটকা পড়েছেন অন্তত তিন হাজার পর্যটক। তাদের উদ্ধারে চলছে তৎপরতা।
গত বুধবার ভোরে চুংথামে মেঘভাঙা বৃষ্টি শুরু হয়। সেখানে লোনাক লেকের পানি প্রবল বেগে এসে মেশে তিস্তার সঙ্গে। তিস্তার চকিত বন্যায় ভেসে যায় আশপাশের বাড়িঘর, মানুষজন।
সিকিম সরকারের মুখপাত্র বলেছেন, তিস্তা ব্যারাজ স্টেজ ৩-এ কর্মরত অন্তত ১৪ জন শ্রমিক টানেলে আটকে আছেন। নির্মীয়মান একটা অংশও ভেসে গেছে।
তিস্তার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গজলডোবা বাঁধ। তাই সেখান থেকে এখন প্রবল পরিমাণে পানি ছাড়া হচ্ছে। এতে জলপাইগুড়িতে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশেও বন্য়া পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে সিকিমে বন্যার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলেও। তিস্তা অববাহিকার লালমনিরহাট, নীলফামারী ও রংপুরে বন্যার পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
আবহাওয়া বিভাগ ও বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, নিম্নচাপের কারণে হওয়া ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে আসা পানি মিলিয়ে এই পরিস্থিতি অন্তত আরও দুই দিন অব্যাহত থাকবে।
পূর্বাভাসে জানানো হয়, গত কয়েক দিন ধরেই ভারতের সিকিমে টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে। মঙ্গল ও বুধবার মাঝরাতের পর অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে সেখানে। এতে তিস্তায় পানির পরিমাণ খুব বেড়ে যায়। এ সময় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বাংলাদেশে পানি ঢুকে পড়ে। এতে উত্তরাঞ্চরে তিস্তা নদী তীরবর্তী লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
ইবাংলা/এসআরএস
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.