গাজায় পাঠানো ত্রাণসহায়তা যেন ‘মহাসমুদ্রের মাঝে এক ফোঁটা পানি’

আল জাজিরা

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মিসরের রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গেছে ত্রাণবাহী ২০টি ট্রাক। এতে খাদ্য, পানি ও ওষুধ রয়েছে। গাজার বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীর জন্য মাত্র ২০ ট্রাক ত্রাণসহায়তাকে ‘মহাসাগরে মাঝে এক ফোঁটা পানির’ সঙ্গে তুলনা করেছে বিভিন্ন সাহায্য সংস্থা।

৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় অনবরত হামলা করে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে নিশ্চিহ্ন করতে প্রতিনিয়ত হামলা জোরদার করছে তারা। ইসরায়েলের হামলায় ১০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। যুদ্ধবিদ্ধস্ত গাজায় দেখা দিয়েছে মানবিক সংকট।

এমন অবস্থায় মাত্র ২০ ট্রাক ত্রাণসহায়তা ঢুকছে ফিলিস্তিনে। পশ্চিম তীরের বাসিন্দারা বলছেন, এসব ত্রাণসহায়তা নিছক লোকদেখানো। এসব ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।

আরও পড়ুন>> দেশে একটি মহল অস্থিরতা ও সন্ত্রাসের ডাক দিচ্ছে: ওবায়দুল কাদের

রাফাহ ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করা ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে কোনো জ্বালানি নেই। আর এটিই এখন উদ্বেগের মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা, পানি সরবরাহ করতে পাম্প চালানো প্রয়োজন। আর পাম্প চালাতে জ্বালানির বিকল্প নেই। জ্বালানিসংকটের কারণে গত রোববার গাজায় সর্বশেষ চালু থাকা পানি শোধনাগার কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেছে।

হাসপাতালের মতো জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে জেনারেটরের সাহায্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এ জন্য জ্বালানি দরকার। বিভিন্ন হাসপাতালের ইউকিউবেটরে শিশু রয়েছে। এ ছাড়া হাজার হাজার রোগী ভর্তি রয়েছেন, যাঁদের চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে বিদ্যুৎ দরকার। চিকিৎসকেরা বলেছেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের অভাবে হাসপাতালে ভর্তি কিডনি ও ক্যানসার রোগীরা এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ডেনিয়েল হ্যাগারি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, জরুরি ত্রাণসহায়তার ট্রাকগুলো গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হবে। গাজায় শুধু খাবার, পানি ও চিকিৎসাসামগ্রী প্রবেশ করবে। তবে ‘কোনো জ্বালানি ঢুকবে না’ বলে তিনি স্পষ্ট করে দেন।

হামাসের গণমাধ্যম শাখা আজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ট্রাকগুলোর মধ্যে, ওষুধ, বিভিন্ন চিকিৎসাসামগ্রী এবং সীমিত খাবার রয়েছে।

জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, তারা মাত্র ৪৪ হাজার বোতল সুপেয় পানি পাঠাতে পেরেছে। এই পানি দিয়ে এক দিন ২২ হাজার মানুষ চলতে পারবে। অথচ গাজার জনসংখ্যা ২৩ লাখ।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গাজার ১০ লাখ শিশু এখন একটি গুরুতর সুরক্ষা এবং মানবিক সংকটের মুখোমুখি। পানি এখানে জীবন–মৃত্যুর বিষয়। প্রতিটি মিনিট ভয়াবহ অবস্থার মধ্য দিয়ে কাটছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রথম দফায় সীমিত পরিমাণে পাঠানো পানি হয়তো জীবন বাঁচাবে। তবে শুধু পানি নয়; খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ এবং অত্যাবশ্যক পণ্য ও পরিষেবাগুলো তাৎক্ষণিক এবং ব্যাপকভাবে প্রয়োজন।

ইবাংলা/এসআরএস

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us