সাফ অনূর্ধ্ব-১৯: বাংলাদেশ-ভারতকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ মানেই নাটকীয়তা আর রোমাঞ্চ। বৃহস্পতিবার কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালকে ঘিরে নাটকীয়তা যেন সবকিছুর সীমা ছাড়িয়ে গেছে।

দুদলের ১১জন খেলোয়াড় টাইব্রেকারে এনে দিতে পারেননি সমাধান। শেষ পর্যন্ত মেগা ফাইনালের রেজাল্ট নির্ধারণ হয় টসের মাধ্যমে। সেখানে টস জয়ী ভারতকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। যা নিয়ে টুর্নামেন্টের বাইলজ অনুযায়ী তীব্র প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ। প্রতিবাদের এক পর্যায়ে রেফারি তার সিদ্ধান্ত ‘ভুল’ দেওয়ায় প্রত্যাহার করেছেন ভারতের শিরোপা জয়। তবে ম্যাচ কমিশনারের সিদ্ধান্ত আবার মেনে নেয়নি ভারত। ম্যাচ রেফারি এরপর সফরকারীদের জন্য সময় বেধে দেন ৩০ মিনিট। এই সময়ের ভিতর মাঠে না আসলে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করবে ম্যাচ রেফারি।

আরও পড়ুন>> কারাগারে বিএনপি নেতার মৃত্যু, অবহেলার অভিযোগ

এরপর নির্দিষ্ট সময়ের ভিতর ভারত মাঠে নামেনি। সময় পার হবার পরও; আরও অতিরিক্ত সময় অপেক্ষা করে ম্যাচ রেফারি। শেষ পর্যন্ত দুই দলকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে ম্যাচ রেফারি।

সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ ও ভারত। যেখানে নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে শেষ হয়েছিল খেলা। এতে ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। টাইব্রেকার শেষ হয় ৫-৫ গোলে। তারপর সাডেনডেথ। সেখানেও ফল ১১-১১।

টাইব্রেকারেও গোলের সমতার পর টসের সিদ্ধান্ত নেন ম্যাচ কমিশনার। প্রথমিকভাবে সিদ্ধান্ত মেনে টসে যায় দুই দল। তবে টসের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত আসার পর মেনে নেয়নি স্বাগতিক দল। তারা সাফের অফিসিয়াল নিয়মের কথা তুলে ধরে ম্যাচ কমিশনারের কাছে।

কারণ সাফের নিয়ম অনুসারে টস করে ম্যাচের রেজাল্ট ঘোষণা করার নিয়ম নেই। ফলে প্রতিবাদ করায় ম্যাচ রেফারি ডি সিলভা ক্ষমা চেয়ে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। আবারো টাইবেকারের সিদ্ধান্ত দেন তিনি। তবে মানতে রাজি হয়নি ভারত। এরপর মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যায় ভারতীয় দল।

এরপর ম্যাচ রেফারি তাদের মাঠের নামার জন্য ৩০ মিনিটের সময় বেঁধে দেন। তবে সেই ৩০ মিনিটের পর প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষার ম্যাচের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে রেফারি। তবে নির্দিষ্ট কোনো দল নয়, দুই দলকে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেছে রেফারি ডি সিলভা।

এর আগে কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে আজ ম্যাচের শুরুতেই ঘরের মাঠে থাকা বাংলাদেশের দর্শকদের চুপ করিয়ে দেয় ভারত। ম্যাচের ৮ মিনিটে শিবানী দেবী লিড নিয়ে থাকে সফরকারীদের। এরপর ম্যাচের ফিরতে মরিয়া টাইগ্রেসরা বেশ সুযোগ তৈরি করেও ফিনিশিং এর অভাবে ম্যাচে ফিরতে পারেনি টিটুর শিষ্যরা।

উল্টো ১৭ মিনিটের সময় আরও পিছিয়ে পড়তে বসেছিলো বাংলাদেশ। ডি-বক্সের মধ্যে একা বল পেলেও ক্রসবারের উপর দিয়ে মারেন ভারতের ফুটবলার। এরপর ম্যাচের ২৮তম মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে আরও একটি জোরাল আক্রমণ করে ভারত। এবার অবশ্য শিবানীর বুলেট গতির শট দক্ষতার সঙ্গে ফিরিয়ে দেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক।

ম্যাচে ফিরতে মরিয়া বাংলাদেশ ম্যাচের ৩৪তম মিনিটে ডি বক্সের বেশ খানিকটা দূর থেকে স্বপ্নার দূরপাল্লার শট গোলপোস্টের ওপর দিয়ে চলে গেলে হতাশ হতে হয় বাংলাদেশকে। এর এক মিনিট পরই ফের স্বপ্নার বুলেট গতির শট ঠেকিয়ে দলকে ফের রক্ষা করেন ভারতীয় গোলরক্ষক আনিকা দেবী। ম্যাচের বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হওয়ায় ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় ভারত।

বিরতি থেকে এসে দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণতক খেলতে থাকে বাংলাদেশ। তবে সমতায় ফিরতে পারছিলো না টাইগ্রেসরা। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের যোগ করা সময়ে শেষ মুহূর্ত যখন ভারতের ডাগাউটে তখন উৎসবের প্রস্তুতি। ঠিক তখনই বাংলাদেশের সাগরিকা গোল করে ১-১ সমতায় আনে। যাতে আনন্দে ফেটে পড়ে পুরো স্টেডিয়াম।

ইবাংলা/এসআরএস

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us