পানি ও বিদ্যুৎ সমস্যায় অতিষ্ঠ আবাসিক শিক্ষার্থীরা ভ্রুক্ষেপ নেই হল প্রশাসনের
বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি
গোপালঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) হলগুলোতে খাবার পানি যেন এক দুষ্প্রাপ্য বস্তু, পানি পাওয়া যায় না প্রতিনিয়তই। সেইসাথে যোগ হয়েছে বিদ্যুৎ সমস্যার।এমতবস্থায় তীব্র গরমে চরম বিড়ম্বনায় হলগুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বর্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়টির শেখ রাসেল হল এগিয়ে থাকলেও শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদা খাবার পানির বড় সংকট অন্য হলগুলো থেকে সবচেয়ে বেশি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রায় প্রতিনিয়তই।
সকাল থেকে দুপুর বিকাল কোনো কোনো দিন সারাদিনই পানি থাকে না। তীব্র গরমে পানির প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের যেতে হয় অন্য হলে, কেউ কেউ বাইরে থেকে পানি কিনে এনে পান করে। এতে তীব্র অসন্তুষ্টি দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
শিক্ষার্থীরা জানান, একদিন, দুদিন সমস্যা হতে পারে, কিন্তু প্রতিনিয়তই হলে পানি থাকে না এই চিত্র দেখি। এই তীব্র গরমে এভাবে চলা যায় না। খাওয়ার পানির অভাবে কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তার দায়ভার কে নিবে? হল প্রশাসন দ্রুত পানির সমস্যার সমাধান করবে বলে আমরা আশা রাখি।
শেখ রাসেল হলের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, পানির অপেক্ষা করে দুপুরের খাবার খেতে সন্ধ্যা গড়িয়েছে, তাও পানির দেখা নাই। অবশেষে মাগরিবের সময় স্বাধীনতা দিবস হল থেকে পানি এনে খাবার খাইছি। প্রায় সময়ই পানি না থাকার কারণে সময়ের খাবার সময়ে খেতে পারি না।
শুধু শেখ রাসেল হল নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য চারটি হলে খোঁজ নিয়ে জানা যায় সেসব হলগুলোতেও মাঝে মাঝেই পানির সংকট দেখা দেয়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শেখ রেহানা হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, হলে খাবার পানির সমস্যার জন্য আমাদের অনেক বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয়। বেশিরভাগ সময়ই হলে পানি থাকেনা। এরসাথে যুক্ত হয়েছে বিদ্যুতের সমস্যা।
এছাড়া স্বাধীনতা দিবস হল, বিজয় দিবস হল এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলেও একই সমস্যা বিদ্যমান। মাঝে মাঝে দেখা যায় পানির সমস্যা। যার ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে হলগুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীদের।
হলগুলোতে পানি সমস্যার পাশাপাশি চরম আকার ধারণ করেছে বিদ্যুতের সমস্যা। দীর্ঘ ছুটি শেষে প্রায় সবগুলো বিভাগে ক্লাস ও সেমিস্টার চলায় এই দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়েছে। ফলে নির্বিঘ্নে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। হলগুলো ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী ভবনেও একই সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
ফলে একাডেমিক কার্যক্রমেও প্রভাব পড়ছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা। ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে পড়াশোনায় ব্যাঘাত, ঘুমে সমস্যা ও মশার উপদ্রবসহ নানান সমস্যায় ভোগান্তিতে পড়েছে হলগুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যুৎ এর সমস্যার সমাধান চেয়ে গত রোববার (১৯ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তারা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর এমন বেহাল দশার বিষয়ে কথা বলার জন্য হল প্রভোস্টদের ফোন দিলেও শেখ রাসেল,শেখ রেহানা এবং স্বাধীনতা দিবস হল প্রভোস্টদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিজয় দিবস হল প্রভোস্ট মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, আজকে পানির সমস্যা, এর আগে সমস্যা হলেও সেটা ছিল সাময়িক। পৌরসভা থেকে পানির সাপ্লাই সমস্যা থাকার কারনে হলে পানির সমস্যা দেখা দেয়। তাছাড়া মটর রিলেটেড কোন প্রবলেম দেখা দিলে সেটা যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করা হয়।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.